
লাইফস্টাইল ডেস্ক
০৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, 12:14 PM

নখের সাধারণ পরিবর্তনও অবহেলার নয়
বয়স বাড়লে শরীরে প্রোটিনের ঘাটতি দেখা দেয়। প্রভাব পড়ে নখে। পাতলা ও ভঙ্গুর হয়; শক্ত, ঘোলা বা বিবর্ণও হয়। গর্ভবতী নারীর নখ এ সময়ে নরম হয়। সহজে ভেঙে যায়। নখে কোনো আঘাত লাগলে নখের রঙ বদলে যেতে পারে। আঘাতের মাত্রা বেশি হলে নখের জোড়া দুর্বল হয়ে যায়। তখন নখ মাংস থেকে আলগা হয়ে পরে। আবার ছমাসের মধ্যে সুস্থ নখ তৈরি হয়ে যায়। তবে পায়ের নখের ক্ষেত্রে নতুন নখ উঠতে ১৮ মাসের মতো সময় লাগতে পারে। দাঁত দিয়ে নখ কামড়ালে নখের ক্ষতি হয়, সহজে ভেঙে স্বাভাবিক আকৃতি নষ্ট হয়ে যায়। আবার মুখ থেকে জীবাণু নখ ও নখের আশপাশের ত্বকে প্রবেশ করে ইনফেকশনের আশঙ্কা বাড়ায়। নখে দীর্ঘসময় নেইল পলিশ থাকলে নখের কেরাটিন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। নেইল পলিশ তোলার জন্য নখে ব্যবহৃত রিমুভারে ‘অ্যাসিটোন’ নামক কেমিক্যাল নখের উপরিভাগের আবরণ ক্ষয় করে নখ দুর্বল করে ফেলে।
তাই অ্যাসিটোনমুক্ত নেইল পলিশ রিমুভার ব্যবহার করতে হবে। নেইল পলিশ নখ ও নখের গোড়ার চামড়ার সংযোগ-স্থানে যে তুলনামূলক শক্ত চামড়া বা ‘কিউটিকল’ থাকে, তা যেন প্রেসার না লাগে। কারণ কিউটিকলই গোড়ার সঙ্গে নখ আটকে থাকতে সাহায্য করে। ধূমপায়ীদের নখ হলুদ হয়ে যেতে পারে। সিগারেটে থাকা ‘টার’ নামক ক্যানসার সৃষ্টিকারী পদার্থের কারণে এমন হয়। অতিরিক্ত পানি ও ডিটারজেন্ট ব্যবহারে নখের ক্ষতি হয়। যাদের রান্নাঘরে বেসিন, কাপড় ধোঁয়া ইত্যাদি কাজ বেশি করতে হয়, তারা হাতে গ্লাভস ব্যবহার করতে পারেন। নিয়মিত নখ না কাটলে,
নখ বেশি কেটে ফেললে কিংবা নখের কোণা অতিরিক্ত কাটলে নখের সমস্যা হতে পারে। ওয়ার্ট নামক চর্মরোগ হলে নখ ও নখের আশপাশে ছোট ছোট গোটা ওঠে। নখের কিউটিকল ফুলে যায় এবং নখটি দেবে যায়। নখ ও নখের আশপাশের ত্বকে ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক দিয়ে আক্রান্ত হলে ইনফেকশন হতে পারে। তখন নখের রঙ বদলে যেতে পারে। নখ বদলে যেতে পারে নখের সোরিয়াসিস, আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতা, ডায়াবেটিস, হার্ট, লিভার, ফুসফুসের রোগ ও থাইরয়েড হরমোনের সমস্যাজনিত রোগের কারণে। ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায়ও নখের পরিবর্তন আসতে পারে।
লক্ষণ : কখনো নখ শক্ত হয়, ভেঙে যায়, দেখতে হলুদ, বাদামি বা সাদা হয়। স্বাভাবিক আকৃতি বদলে যায় ও বাজে গন্ধ সৃষ্টি করে।
যে কারণে হয় : নখ বা নখের আশপাশে কোনো আঘাত থেকে, নখের কোনো অপারেশন হলে, বেশি ঘামলে, এমনকি রাস্তাঘাটে, টয়লেটে, গোসলখানায়, জনসমাগমপূর্ণ জায়গায় খালি পায়ে হাঁটলে নখের ক্ষতি হতে পারে। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে, রক্ত প্রবাহে সমস্যা দেখা দিলে, অ্যাথলেটস ফুট বা পায়ের পাতা এবং আঙুলের ফাঁকে ছত্রাকজনিত রোগ হলে।
প্রতিকার : গোসলের পর নিয়মিত হাত-পায়ের নখ কাটুন। নরম ব্রাশ বা কাপড় দিয়ে নখ নিয়মিত পরিষ্কার করুন। পানি, ডিটারজেন্ট বা অন্য কোনো সাবান জাতীয় জিনিস অতিরিক্ত ব্যবহার করলে হাতে রাবারের গ্লাভস পরে নিন। হাতের নখ ও আঙুলের জন্য ক্রিম বা লোশন ব্যবহার করুন। মোজা নিয়মিত পরিষ্কার করে পরুন।
লেখক : সহকারী অধ্যাপক; ত্বক-চর্ম-যৌন এবং ট্রান্সপ্ল্যান্ট সার্জারি বিভাগ, শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিক্যাল হাসপাতাল
চেম্বার : ডা. জাহেদ’স অ্যান্ড হেয়ার স্কিনিক, হাসপাতাল, সাবামুন টাওয়ার, গ্রিনরোড, ঢাকা। ০১৭০৭০১১২০০