এস আদনান বৃষ্টি: জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি.এম কাদের এমপি বলেছেন, ৩১ বছর ক্ষমতার বাহিরে থেকেও জাতীয় পার্টি এখনো অনেক শক্তিশালী রয়েছে। প্রতিটি দিন আমাদের সমর্থক বাড়ছে, সংগঠনের শক্তি বাড়ছে, এটা আমরা বরাই করে বলছি না, এটা তোমরা যাচাঁই করে দেখতে পারো। আমাদের মিছিল মিটিংয়ে অনেক বেশি মানুষের সংখ্যা হয়। আমাদের কথা শোনার জন্য বিভিন্ন মিডিয়া বিভিন্নভাবে আমাদের আগ্রহ ও আস্থা অনেকটা বৃদ্ধি হয়েছে এবং সেটা সামনের দিকে আরো বৃদ্ধি হবে বলে আমরা আশা করি। ৪ দিনের সফরে রংপুরে এসে আজ মঙ্গলবার দুপুরে সার্কিট হাউসে উপস্থিত সাংবাদিকদের উদ্দেশ্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সার্বিকভাবে দেশের পরিস্থিতি ভাল নয়। শুভ কর নয় এটা বলতে পারি আমি।

বেকার সমস্যা একটা চরম পর্যায়ে চলে গেছে। কোটি কোটি মানুষ বেকার, লক্ষ্য লক্ষ্য বলবো না। আমি বেশ কয়েকটা জায়গা ঘুরে দেখেছি, মানুষ ফুটপাত অর্ধেক দখল করে রাখে কেন, ইউনিভার্সিটি পাশ করা ছেলেরা ফুটপাতে হকারী করছে। তারা ইস্কুটার চালায়, বেবি টেকসি চালায়, তারা বিভিন্ন ভাবে জীবিকা নির্বাহের চেষ্টা করছে। আর সবচেয়ে বড় কথা বেকার সমস্যা এমন একটা পর্যায়ে গেছে যে, নিজের ঘটি-বাটি, ভিটে-মাটি বিক্রি করে তাদের ছেলেদেরকে বিদেশী পাঠাতে বাদ্ধ্য হচ্ছে এবং বিদেশে যাচ্ছে তারা অনিশ্চিতভাবে, অবৈধভাবে এবং তারা সেখানে অনেক পাহাড়-জংগল, মরুভূমি এমনকি সাগর পারি দিচ্ছে একটা ডিঙ্গি নৌকায় করে। বেকার সমস্যা এই পর্যায়ে গেছে। তিনি আরো বলেন, জিনিসপত্রের দামও উর্দ্ধগতির কোনো পরি সীমা নেই। কোনো কারনো নেই। একদিকে মানুষের আয়ের অভাব, আর একটা দিকে দ্রব্যমূলের উর্দ্ধগতি। এমনকি সরকারী ভাবে তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। যেটা আমি সংসদে হিসাব করে দেখিয়ে এসেছি যে তেলের দাম না বাড়ালেও চলতো। পানির দামসহ সমস্ত কিছুর দাম বাড়ানো হয়েছে। মানুষের নাবিশ্বাস উঠে গেছে। তিনি বলেন, মানুষের জীবনেরও নিরাপত্তা নেই। একজন মহিলা কক্সবাজারে তার স্বামী ও শিশু সন্তানকে নিয়ে গেছে, সেখানে সে ধর্ষনের শিকার হয়েছে। মানুষের ইজ্জতের নিরাপত্তা নেই, জীবনের নিরাপত্তা নেই এবং এই বেকার সমস্যার কারনে আর একটা মহাসমস্যা দেখা দিয়েছে। সারাদেশ মাদক ব্যবসার একটা স্বর্গরাজ্যে পরিনত হয়েছে। প্রতিদিন তরুন সমাজসহ কোটি কোটি মানুষ মাদকের দিকে চলে যাচ্ছে। এটা সামনের দিকের প্রজন্মের জন্য একটা ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে পারে। তরুন সমাজের জন্য কোনো ভাল ভবিষ্যৎ রাখতে পারছি না এবং ভালভাবে ব্যবহারের কোনো ব্যবস্থা করতে পারছি না। যেভাবে আমরা তাদেরকে ঠেলে দিচ্ছি সে দিকে। সেভাবে অনিশ্চিত একটা ভবিষ্যতের দিকে দেশ ধাবিত হচ্ছে বলে আমি মনে করি। এ সময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদ সদস্য আদিলুর রহমান আদেল, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য, রংপুর মহানগর সভাপতি ও সিটি কর্পোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা, জাতীয় পার্টির কেদ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান ও রংপুর মহানগর সাধারণ সম্পাদক এস.এম ইয়াসির, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও রংপুর জেলার সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব আব্দুর রাজ্জাক, সহ-সভাপতি আজমল হোসেন লেবু,  কেন্দ্রীয় সদস্য ও রংপুর মহানগর যূগ্ম সম্পাদক লোকমান হোসেন, হাসানুজ্জামান নাজিম, কেন্দ্রীয় সদস্য ও রংপুর মহানগর সাংগঠনিক সম্পাদক জাহেদুল ইসলাম, জাতীয় ছাত্র সমাজ কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক আল মামুন, পান্ডুল ইউপি চেয়ারম্যান ও রংপুর জেলা যুব সংহতির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলামসহ জাতীয় পার্টি রংপুর মহানগর, জেলা ও বিভিন্ন উপজেলা কমিটি এবং অঙ্গ সহযোগি সংগঠন সমূহের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পরে তিনি নগরীর দর্শনাস্থ পল্লী নিবাসে জাতীয় পার্টির প্রতিষ্ঠাতা মরহুম হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সমধিতে পুষ্পমাল্য অর্পন করে শ্রদ্ধা নিবেদন ও দোয়া মোনাজাত করেন। এরপর সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টির সেন্ট্রাল রোডস্থ দলীয় কার্যালয়ে রংপুর মহানগর ও জেলা জাতীয় পার্টি আয়োজিত মতবিনিময় সভায় যোগদান করেন।