
লাইফস্টাইল ডেস্ক
২৯ জানুয়ারি, ২০২৪, 10:50 AM

শীতের সময় যেভাবে নিবেন বয়স্ক ও শিশুদের যত্ন
সারাদেশে জেঁকে বসেছে শীত। শীতের এই প্রকোপ তরুণ বা মধ্যবয়সীরা খাপ খাইয়ে নিতে পারলেও শিশু, বয়স্ক, গর্ভবতী এবং যারা দীর্ঘমেয়াদী কোনো রোগে ভুগছেন তারাই সবচেয়ে বেশি অসুস্থতায় ভুগেন। শীতে সঠিকভাবে যত্ন ও পুষ্টিকর খাবার না খেলে সর্দি, কাশি বা নিউমোনিয়ার মতো মারাত্মব রোগে আক্রান্ত হন। শীতের এই প্রকোপে শিশু ও বয়স্কদের সঠিক যত্নের জন্য বিশেষজ্ঞ ড. লেলিন চৌধুরী চ্যানেল আই অনলাইনকে জানালেন বয়স্ক ও শিশুদের যত্ন ও পুষ্টির কথা।
বয়স্কদের যত্ন ও পুষ্টি
সারাদেশে শীতে সবচেয়ে বেশি বিপর্যয় ঘটে বয়স্কদের। শীতের এই প্রকোপে যেসব বয়স্করা দীর্ঘমেয়াদী রোগ রয়েছে তাদের আলাদাভাবে যত্ন নিতে হবে। তাদের জীবন-যাপনে আনতে হবে পরিবর্তন।
শীতের সময় বাইরে বের হলে পর্যাপ্ত গরম কাপড় পরিধান করতে হবে। টিনের বা ইটের তৈরি বাড়ি থাকলে সেখানে শীত নিয়ন্ত্রণে দেয়ালে কাগজ বা কাপড় দিতে হবে। তীব্র শীতে বয়স্কদের প্রয়োজনীয় কাজ না থাকলে বাইরে বের হওয়া যাবে না।
শীতে এমনিতেই রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় সেকারণে বাজারে শীতকালীন শাক-সবজি ও ফলমূল পরিমাণে বেশি খেতে হবে। শীতকালে ঢাকা ও ঢাকার বাইরে আগুন পোহাতে গিয়ে বয়স্ক ও শিশুরা সবচেয়ে বেশি মারা যায়। সেকারণে সর্তক হয়ে আগুন পোহানো খুব জরুরি।
অতিরিক্ত ঠান্ডা থাকলে প্রতিদিন বয়স্কদের ক্ষেত্রে গোসল করার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই। বরং অতি ঠান্ডায় গোসল করতে গিয়ে অনেকে হার্টঅ্যটাকের সম্ভবনা বেড়ে যায়। আর গোসল করলে পানি গরম করে করতে হবে। অ্যান্টিঅক্সিডেন্টসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করতে হবে। যেমন গরম চা, গরম পানিতে আদা, মধু, লেবুর রস, তুলসি পাতার রস ইত্যাদি মিশিয়ে পান করা। এছাড়া সকাল-বিকাল মিলিয়ে তিন থেকে চারবার গ্রিন-টি খাওয়া যেতে পারে।
শিশুদের যত্ন ও পুষ্টি
সারাদেশের শীতের প্রকোপে সবচেয়ে বেশি অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি থাকে শিশুরা। ঠান্ডা জানিত নানা কারণে শিশুরা ভুগে থাকে। এসময় মায়েদের বাড়তি যত্ন নিতে হয় শিশুদের। অতি ঠান্ডায় শিশুদের প্রতিদিন গোসল করালে ঠান্ডা লেগে যায় বলে বিষেশজ্ঞরা বলছেন প্রতিদিন শিশুদের গোসল করানোর প্রয়োজন নেই। তবে গোসল করালে অবশ্যই গরম পানি দিয়ে করাতে হবে।
শীতের সময় রোদের দেখা এমনিতেই পাওয়া যায় না তবুও যেদিন রোদ থাকবে শিশুদের রোদে রাখতে হবে এবং খেলাধূলা করতে হবে এতে করে শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়বে। প্রতিদিন যেসব খাবার খায় তার সঙ্গে মৌসুমী শাক-সবজি ও ফল-মূল যুক্ত করতে হবে। রোগ-প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় সেসব খাবার তালিকায় বেশি রাখতে হবে।
এছাড়া শীতের সময়ে শিশুদের খাওয়ার প্রবণতা কমে যায়। তাই ঘনঘন অল্প খাবারে বেশি পুষ্টি আছে এমন পুষ্টিকর খাবার খাওয়াতে হবে। নিয়মিত ডিম, দুধসহ সকল প্রোটিনজাতীয় খাবার, সবজির স্যুপ এবং ফলের রস খাওয়ানো যেতে পারে।
শিশুর প্রতিটি কাজে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা উচিত। অতি ঠান্ডা থাকলে শিশুদের বাইরে বের করার কোনো প্রয়োজন নেই তবুও বের হলে গরম কাপড়ের পোশাক পরাতে হবে। শিশুদের ব্যবহার করা জিনিস কোনো ব্যক্তির হাঁচি-কাশির সময় দূরে রাখা উচিত। শিশুদের স্কুলে অথবা বাইরে নিয়ে গেলে মুখে মাস্ক ব্যবহার করার অভ্যাস করাতে হবে।
শিশুদের ঠান্ডা থেকে দূরে রাখতে গরম পানিতে মধু, তুলসি পাতার রস প্রভৃতি খাওয়ানো যেতে পারে। তবে সমস্যা বেশি হলে অবশ্যই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।