
স্পোর্টস ডেস্ক
১৯ জুন, ২০২৩, 10:57 AM
মদরিচদের স্বপ্নভঙ্গ, সিমোনের বীরত্বে স্পেনের নেশন্স লিগ জয়
ক্রোয়েশিয়ার স্বপ্ন ভেঙে প্রথমবারের মতো উয়েফা নেশন্স লিগের শিরোপা জিতলো স্পেন। রটারডামের দে কুইপ স্টেডিয়ামে টাইব্রেকারে ৫-৪ ব্যবধানে জিতে প্রথমবারের মতো শিরোপা উৎসবে মাতে সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। ক্রোয়াটদের দুই শট রুখে দিয়ে জয়ের নায়ক স্প্যানিশ গোলরক্ষক উনাই সিমোন। এই জয়ে ১১ বছর পর আবারও কোনো শিরোপার স্বাদ পেলো স্পেন। আর অপূর্ণই রয়ে গেলো ক্রোয়েশিয়ার সোনালি প্রজন্মের নায়ক লুকা মদরিচের দেশকে শিরোপা জেতানোর স্বপ্ন।
দায়িত্বটা ছিল ৩১ বছর বয়সী স্প্যানিশ ডিফেন্ডার দানি কারভাহালের কাঁধে। একটি শট, একটি গোল, একটি উৎসবের অপেক্ষায় ছিল সাবেক বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। গোলবারের প্রাচীরের নাম ডমিনিক লিভাকোভিচ। রেফারির বাঁশির সাথে সাথেই লিভাকে বোকা বানিয়ে ডান পায়ের শটে লক্ষ্যভেদ করেন কারভাহাল। প্রথমবারের মতো উয়েফা নেশন্স লিগ জিতে উল্লাসে ফেটে পড়ে স্পেন। ক্রোয়েশিয়ার আরও একবার স্বপ্নভঙ্গ।
রটারডামের দে কুইপ স্টেডিয়ামে শুরু থেকেই তৈরি হয় একাধিক সুযোগ। দশম মিনিটে ক্রোয়াট গোলরক্ষক লিভাকোভিচ ভুল করে বসেন। কিন্তু গাভির নেয়া শট মিস করে গোলপোস্ট। দুই মিনিট পরই ক্রোয়াট রক্ষণে স্পেনের হানা কিংবা ২৩তম মিনিটে ক্রোয়েশিয়ার প্রতি আক্রমণ। সবই পরিণত হয় ব্যর্থতায়। প্রায় একই ধরনের দুইটি দলের চিত্রও চলতে থাকে সমান্তরালে। ক্রসগুলো খুঁজে পাচ্ছিলো না ঠিকানা। কিংবা, ফরোয়ার্ডদের মধ্যে ছিল না নিখুঁত শিকারির প্রবণতা।
দ্বিতীয়ার্ধেও একই চিত্র। স্পেনকে বলের দখল রাখতে না দিয়ে মাঝমাঠে ছড়ি ঘুরিয়েছেন মিডফিল্ড জেনারেল লুকা মদরিচ। কখনও আক্রমণে অংশ নেয়া, কখনও রক্ষণে সহায়তা আবার কখনও সেন্ট্রাল ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডার হিসেবে ম্যাচের গতি নিয়ন্ত্রণ- ৩৭ বছর বয়সী এই রিয়াল তারকার পায়ে যেন আরও একবার ভর করেছিল ২২ বছরের তারুণ্য; দেশকে শিরোপা জেতানোর প্রেরণায়। আক্রমণে কেবল ইভান পেরিসিচই পেরেছিলেন একের পর এক ত্রাস সৃষ্টি করা আক্রমণ শানাতে। কিন্তু ক্রামারিক-পাসালিচদের ব্যর্থতায় গোলটাই কেবল পায়নি ক্রোয়েশিয়া।
অন্যদিকে, বলের পেছনে ছুটতে থাকার অপরিচিত চর্চার মধ্য দিয়েই যেতে হয়েছে স্পেনকে। একের পর এক ডুয়েলের বলের দখল হারিয়ে মাঝমাঠে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি রুইজ-রদ্রি-গাভিরা। নির্ধারিত ৯০ মিনিট পেরিয়ে তাই গোলশূন্য ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে। ধারাবাহিক আক্রমণ শানালেও গোলবার অক্ষত থাকে দু’দলেরই। ১২০ মিনিট পেরোনোর পর শেষ পর্যন্ত খেলা গড়ায় রোমাঞ্চকর টাইব্রেকারে।
পেনাল্টি শ্যুটআউটে দুই দলই প্রথম তিন শটে পায় জালের দেখা। ক্রোয়েশিয়ার চতুর্থ শট নিতে এসে ব্যর্থ হন লভরো মায়ের। ঝাঁপিয়ে পড়া অবস্থায় পা দিয়ে বল আটকান উনাই সিমোন। এরপর মার্কো অ্যাসেনসিওর শটে এগিয়ে যায় স্পেন। ক্রোয়েশিয়ার হয়ে পঞ্চম শট নেয়া ইভান পেরিসিচ সফল হলে স্কোরলাইন দাঁড়ায় ৪-৪। এরপর গোল মিস করে বসেন স্পেনের আইমেরিক লাপোর্তে। দায়িত্ব পড়ে ক্রোয়াট ফরোয়ার্ড ব্রুনো পেতকোভিচের উপর। তবে এ যাত্রায় আবারও ডান দিকে ঝাঁপিয়ে দারুণ নৈপুণ্যে শট ঠেকিয়ে দেন স্প্যানিশ প্রহরী। শেষ শটে দানি কারভাহাল লক্ষ্যভেদ করতেই উল্লাসে ফেটে পড়ে স্পেন। শেষবার ২০১২ সালে ইউরো জিতেছিল স্পেন। ১১ বছর বাদে আবারও কোনো শিরোপা জয়ের স্বাদ পেলো স্প্যানিশরা।