ঢাকা ০৭ জুন, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে ১৫ কিলোমিটার যানজট নাসনাপাড়া ইউনিয়নের ভেঙ্গে যাওয়া বেড়িবাধের উপর নির্মিত অস্হায়ী সাঁকো পরিদর্শন বামনায় রাতের অন্ধকারে লোহার পুল চুরি, কর্তৃপক্ষের নীরব ভূমিকা যানজটের ঢাকা এখন ফাঁকা পবিত্র হজ আজ, ‘লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখর আরাফার ময়দান গোল পেলেন হামজা, ভুটানকে ২-০ গোলে হারাল বাংলাদেশ আসন্ন ঈদ উপলক্ষ্যে যৌথবাহিনী চেকপোষ্ট স্থাপন ভুল সংবাদ পরিবেশন করলে ব্যবস্থা নেবে সরকার ‘ভারতীয় প্রক্সি বাহিনী’র সঙ্গে পাকিস্তানি সেনাদের বন্দুকযুদ্ধ, নিহত ১৪ ঈদে ২৪ ঘণ্টা খোলা থাকবে ফিলিং স্টেশন

বাংলাদেশ ক্রিকেটের টালমাটাল দশা

#

ক্রীড়া প্রতিবেদক

০৩ জুন, ২০২৫,  10:59 AM

news image

টানা দুই সিরিজে বাংলাদেশের হতাশাজনক পারফরম্যান্স নিয়ে ক্রিকেট বিশ্লেষকদের পাশাপাশি সমর্থকদের মধ্যেও ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ৩-০ ব্যবধানে ধবলধোলাই হওয়ার পর দল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে, বিশেষ করে মিডল অর্ডারের অন্যতম ভরসা তাওহীদ হৃদয়ের ধারাবাহিক ব্যর্থতা নিয়ে। 

সংযুক্ত আরব আমিরাতের মতো দুর্বল দলের বিপক্ষেও ২-১ ব্যবধানে সিরিজ হারে বাংলাদেশ। সেখানে ধবলধোলাইয়ের হাত থেকে বাঁচলেও পারফরম্যান্সের বিচারে পরিস্থিতি ছিল আরও উদ্বেগজনক। এই দুই সিরিজে হৃদয়ের অবস্থা ছিল করুণ। আমিরাতের বিপক্ষে একটি ম্যাচে ৪৫ রান করলেও বাকি ইনিংসগুলোতে তিনি ব্যর্থ হয়েছেন। পাকিস্তানের বিপক্ষে তিন ম্যাচে তার অবদান ছিল ন্যূনতম, অথচ তার ওপরই মিডল অর্ডারের বড় দায়িত্ব ছিল।

সিরিজ হারের পর বাংলাদেশের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স বলেছেন, 'যে কোনো সিরিজ হারই হতাশার। আমরা কিছু জিনিস গড়তে চেয়েছি, কিছু জায়গায় পরিবর্তনের চেষ্টা করেছি। কিন্তু সেখানে হতাশা এসেছে।' 

হৃদয়ের ব্যর্থতা নিয়ে তিনি বলেন, 'হৃদয়কে নিয়ে কাজ করব ফর্মে ফেরাতে। তার বিষয় নিয়ে চিন্তিত নই।' তবে এ মন্তব্যে ভরসা খুঁজে পাচ্ছে না ক্রিকেটপ্রেমীরা। ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ একজন ব্যাটারকে নিয়ে এমন আত্মতুষ্টি অনেকের কাছেই হতাশাজনক মনে হয়েছে।

সিমন্স আরও জানান, 'লিটন ও হৃদয় ঠিক কাজই করেছেন, তারা আউট হওয়ার পর দল চাপে পড়েছে।' কিন্তু মাঠের পারফরম্যান্স এর বিপরীত চিত্রই বলছে-তারা উইকেটে থিতু হয়েও রান বাড়াতে পারেননি, দলের রানের গতি থেমে গেছে তাদের ধীর ব্যাটিংয়ে। 

এই সিরিজে বাংলাদেশ দলে ছিল স্পষ্ট ভারসাম্যের অভাব। মোস্তাফিজুর রহমান, নাহিদ রানা এবং তাসকিন আহমেদ না থাকায় বোলিংয়ে তেমন ধার দেখা যায়নি। সিমন্স বলেছেন, 'শুধু আমরা না, মুস্তাফিজকে যে কোনো দলই মিস করবে। এই ধরনের উইকেটে মুস্তাফিজ অনেক বড় ভূমিকা রাখতে পারে। শরিফুল ইসলাম দ্বিতীয় ম্যাচেই চোটে পড়ায় আক্রমণে ধার হারায় বাংলাদেশ।' 

লেগস্পিনার রিশাদ হোসেনও ছিলেন ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ। কোচ সিমন্স বলেন, 'রিশাদের সিরিজটি ভালো কাটেনি। আমরা জানি কোথায় উন্নতি করতে হবে, সে নিজেও জানে। আমরা তার থেকে অনেক বেশি আশা করি।' ইতিবাচক দিক নিয়ে তিনি বলেছেন, 'আমরা দেখেছি ওপেনিংয়ে দুর্দান্ত শুরু হয়েছে। তারা দেখিয়েছে, একসঙ্গে কতটা বিধ্বংসী হতে পারে ওরা।'

অধিনায়ক লিটন দাস বলেছেন, 'আমরা শেষ দুটি ম্যাচে ভালো বোলিং করিনি এবং ফিল্ডিংও ভালো করতে পারিনি। কিন্তু এই পিচে আমরা ভালো ব্যাটিং করেছি। আমাদের বিভিন্ন ব্যাটারের বল করতে শেখা উচিত এবং এই বিষয়টি নিয়ে ভাবতে হবে। ইমন ও তানজিদ সত্যিই ভালো ব্যাটিং করেছে। দর্শকরা খুবই অসাধারণ ছিলেন। তারা উভয় দলকেই সমর্থন করেছেন। বাংলাদেশি সমর্থকদের কাছে আমি দুঃখিত যে, আমরা কোনো ম্যাচে জিততে পারিনি, তবে আশা করি আমরা আবার ফিরে আসব।'

এই অবস্থায় বাংলাদেশ দলের সামনে আসন্ন শ্রীলঙ্কা সফর আরেকটি কঠিন চ্যালেঞ্জ অপেক্ষা করছে। সিমন্স বলেছেন, 'উন্নতি করতে হবে এবং সেটি দ্রুতই করতে হবে।' 

তবে ফর্মহীন ব্যাটার আর দুর্বল বোলিং আক্রমণ নিয়ে সেই উন্নতি কীভাবে সম্ভব হবে, সে প্রশ্ন থেকেই যাচ্ছে। দেশের বাইরে ক্রীড়াঙ্গনে বাংলাদেশের খেলোয়াড়রা যখন সফল হন, তখন ভক্তদের উন্মাদনা থাকে চোখে পড়ার মতো। বিমানবন্দর থেকে ছাদখোলা বাসে করে নারী ফুটবলারদের নিয়ে আসার গল্প এখনো জীবন্ত। কিংবা ২২ গজে লড়াই করা আকবর আলী, আজিজুল হাকিম তামিমরা বয়সভিত্তিক দলে প্রমাণ করে দেখিয়েছেন। কিন্তু জাতীয় দলের ক্রিকেটাররা এখনো খনো সেই মুহূর্ত তৈরি করতে পারেননি। 

এই পাকিস্তান থেকেই টেস্ট সিরিজ জিতে রাজকীয় সংবর্ধনা পেয়েছিল টাইগার বাহিনী। কিন্তু সেই দলটিই গতকাল লাহোর থেকে এসেছে অনেকটাই চুপিসারে। হাতেগোনা কয়েকজন গণমাধ্যমকর্মী তাদের বিমানবন্দরে উপস্থিত হলেও বেশির ভাগের কোনো আগ্রহই ছিল না। ভক্তদের হৃদয় থেকেও দিনদিন উপেক্ষিত হচ্ছেন লিটন দাসরা। এই বিষয়টি তাদের বুঝতে বুঝতে দেশের ক্রিকেট কোথায় গিয়ে দাঁড়ায়, সেটিই এখন সময়ের অপেক্ষা।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম