
বিনোদন প্রতিবেদক
১২ জানুয়ারি, ২০২৩, 2:15 PM
বহুরূপী অভিনেত্রী বাঁধন
গেল কয়েক বছর ধরে শোবিজের অন্যতম আলোচিত অভিনেত্রী আজমেরী হক বাঁধন। এককালে নিয়মিত নাটক করতেন। সে জায়গা থেকে সরে এসে বেছে বেছে কাজ করছেন তিনি। তাতেই করেছেন বাজিমাত। শোরগোল ফেলে দিচ্ছেন একের পর এক চরিত্রে নিজেকে হাজির করে। দেখা মিলছে বহুরূপী বাঁধনের। কখনো সিনেমার পর্দায়, কখনো-বা ওয়েব প্ল্যাটফর্মে; দর্শকের মুঠোফোনে। সম্প্রতি ‘চরকি’-তে মুক্তি পাওয়া শঙ্খ দাসগুপ্তের ওয়েব সিরিজ ‘গুটি’ এমনই একটি কাজ, যার জন্য প্রশংসায় ভাসছেন বাঁধন। ‘গুটি’ দেখে দর্শক সোশ্যাল মিডিয়ায় তাদের ভালো লাগার কথা লিখছেন। চোখে পড়লে বাঁধন তা নিজের ওয়ালে শেয়ার করছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘দর্শকের মিশ্র প্রতিক্রিয়াও আছে। একেক জনের দৃষ্টিভঙ্গি একেক ধরনের। কাজটি দেখার পর দর্শকের মনে প্রশ্ন জাগবে এটিই স্বাভাবিক। তারা সেগুলো লিখছে। আমি শেয়ার করছি। কেউ কেউ বলছেন, যেগুলো খুব বেশি ইতিবাচক না সেগুলোও তুমি শেয়ার করছ। আমার মতে, প্রত্যেকের দেখার জায়গা আলাদা।
নিজেকে ভালোভাবে গড়তে হলে সমালোচনা নিতে জানতে হবে। সমালোচনা শুনলে পরের কাজটি আরও ভালো করার চেষ্টা করা যায়।’ বাঁধন আরও বলেন, ‘দর্শক অভিনয়ের প্রশংসা করছে। কেউ কেউ প্লট ভালো লেগেছে সে কথা বলছেন। অভিনয়শিল্পীদের প্রশংসা শুনছি। আনন্দ লাগছে এসব শুনে। আবার অন্য মতামতও দিচ্ছেন কেউ কেউ। বলছেন, টুইস্ট নেই। ড্রাগসের বিষয় আরও বিস্তারিত দেখানো যেত। আমি সবার মতামতকে সম্মান জানাই।’ বাঁধনের প্রথম ওয়েব সিরিজ সৃজিত মুখার্জির ‘রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেননি’। এরপর কাজ করলেন দেশে। দর্শকের প্রতিক্রিয়ার ধরনটাও তাই আলাদা। বাঁধন জানান, দুই ধরনের প্রতিক্রিয়া পেয়েছি। যখন সৃজিতের কাজটি করি তখন একরকম ছিলাম; এখন আরেক রকম। হইচই’র কাজটির মাধ্যমে দেশের বাইরে পরিচিতি পেয়েছি। কলকাতার দর্শক আমার নতুন কাজ ‘গুটি’ দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। আমাদের কাজের দর্শক তৈরি হয়েছে দেশের বাইরেও। আসলে গ্লোবালাইজেশনের যুগে ঘরের মধ্যে বসে থাকব এ ভাবনা অমূলক। ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ইনিংসে আপাতত তিনটি চরিত্রে দর্শক দেখেছে বাঁধনকে। আবদুল্লাহ মোহাম্মদ সাদের ‘রেহানা মরিয়ম নূর’, সৃজিত মুখার্জির ‘মুশকান’ এবং শঙ্খ দাসগুপ্তের ‘সুলতানা’। মুক্তির অপেক্ষায় বিশাল ভরদ্বাজের ফিকশন নেটফ্লিক্সের ‘খুফিয়া’। যেখানে তার চরিত্রের নাম অক্টোপাস। এ প্রসঙ্গে নিজের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে তিনি জানান, রেহানা, মুশকান, সুলতানা— প্রত্যেকটিকে আলাদা চরিত্র হিসেবে প্রকাশ করতে পেরেছি। আমাদের দেশে দেখা যায়, একটি চরিত্র সফল হলে নির্মাতারা সে চরিত্রেই অভিনয়শিল্পীকে বেশি কাস্ট করতে চান। এতে করে তিনি টাইপড হয়ে যান। এখানে অভিনয়শিল্পীর দোষ নেই। যারা তাকে নিয়ে কাজ করেন তারা অলসতা ও ঝুঁকি না নেওয়ার প্রবণতা থেকে এমনটি করেন। যেমন, সাদ আমাকে নিয়ে ‘রেহানা’ চরিত্রটি উপস্থাপনের ঝুঁকি নিয়েছিলেন। তিনি আমাকে তৈরি করেছেন। একটি চরিত্র ঠিকঠাক ফুটিয়ে তুলতে নির্মাতা যে শ্রম ও সময় দিয়েছেন তা কয়জন দিবে? বাঁধন আরও বলেন, ‘একেকটি চরিত্রের অভিজ্ঞতা একেক রকম। রেহানার সময় এতটা ট্রেইনড ছিলাম না। আমি বিভিন্ন সময় বলেছি, ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ আমার জন্য অভিনয়ের স্কুলিং। এ সময় গ্রুমড হয়ে নিজেকে নতুনভাবে আবিষ্কার করেছি। এর আগে এতটা ম্যাচুরিটি ছিল না। ‘রেহানা মরিয়ম নূর’ করতে গিয়ে যা শিখেছি তা কাজে লেগেছে ‘মুশকান জুবেরী’ ও ‘সুলতানা’ হয়ে ওঠতে। এজন্য নির্মাতাদের প্রতিও আমি কৃতজ্ঞ। তারা আমাকে এসব চরিত্রে কাজের সুযোগ করে দিয়েছেন। একেকটি চরিত্র বহন করলে সে চরিত্রের ভালো-মন্দ বহন করতে হয়। এ কাজটি করতে ভালো লাগছে। যতদিন এ ভালো লাগা থাকবে, ততদিন চরিত্রের সাথে দর্শক সংযোগ স্থাপন করতে পারবে।’