
নিজস্ব প্রতিনিধি
০৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, 3:40 PM

নিয়ামতপুরে বৃষ্টিতে কৃষকদের স্বপ্নভঙ্গ
নওগাঁর নিয়ামতপুরে হঠাৎ মূষলধারে টানা বৃষ্টিতে ফসলের ক্ষেতে পানি জমে গিয়ে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখছেন কৃষকরা। শুক্রবার সকাল থেকে সারাদিন ঝড়ো হাওয়া ও বৃষ্টিপাতে ফসলি ক্ষেতে পানি জমে যাওয়ায় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছে আলু চাষীরা। হঠাৎ বৃষ্টিতে রোপণকৃত ধান, আলু, সরষিা, পিঁয়াজ, রসুন, মরিচ, করলা, শিম, ক্ষীরাসহ শীতকালীন ফসলের ক্ষেতে পানি জমে গিয়েছে। ফসলী জমি থেকে পানি নিষ্কাশন করতে না পারলে এসব ফসল নষ্ট হয়ে যাবে বলেও ধারণা করছেন চাষীরা। টানা বৃষ্টি হওয়ার কারণে কৃষকদের সেই আশায় গুড়েবালি। ফসলি জমির ব্যপক ক্ষয়ক্ষতির কারণে কৃষকরা দিশেহারা হয়ে পড়েছে। নিচু এলাকার বোরো ধানের চারাগুলো এখন পানির নিচে রয়েছে। যেসব ক্ষেতে সরিষা ঘরে তোলার সময় হয়েছে সেইসব ফসল ক্ষতির মধ্যে পড়েছে। ফলে আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছে চাষীরা।
এদিকে অসময়ের বৃষ্টিতে শীতকালীন সব ধরনের সবজিরই ক্ষতি হবে বলে মনে করছেন কৃষকরা। অনাবৃষ্টির কারণে শীতকালীন সব ধরনের শাকসবজিরই ক্ষতি হবে। এতে চলতি মৌসুমে সব ধরনের শাক সবজির দাম আকাশচুম্বি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এমন অনাকাঙ্খিত ক্ষতি পুষিয়ে উঠার জন্য উপজেলা কৃষি বিভাগকে এগিয়ে আসার জন্য আহবান জানিয়েছেন চাষীরা। মৌসুমী সবজি চাষী শাহিন আলী জানান, এই মৌসুমে সবজির ভালই ফলন হয়েছিল। কিন্তু হঠাৎ বৃষ্টিতে আমাদের মনে হয় সব শেষ হয়ে যাবে। আলু চাষী ইব্রাহিম হোসেন জানান, এ বছর অনেক আশা নিয়া আলু চাষ করলাম। কিন্তু বৃষ্টির কারণে আলু ক্ষেত একদম শেষ। এই ক্ষতি কেমনে পুষিয়ে উঠবো তা ভাবতে পারছি না। ধান চাষী রানা বাবু জানান, চলতি মৌসুমে নিচু জমিতে ধানের চারা রোপন করছিলাম। কিন্তু টানা বৃষ্টিতে আমার ধান ক্ষেতের চারা পানির নিচে তলিয়ে গিয়েছে। অন্যদিকে আমার সরিষা মাঠে পাঁকা অবস্থায় রয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে ক্ষেত থেকে সরিষা তোলা হতো। কিন্তু এখন রোদ উঠার সাথে সাথে সরিষার দানা ফেটে মাটিতে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছি। সব মিলিয়ে বলা যায় যে,অসময়ের বৃষ্টিতে কৃষকের স্বপ্নভঙ্গ করে দিয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার আমীর আব্দুল্লাহ ওয়াহেদুজ্জামান বলেন, উপজেলায় ১ হাজার ২ শত হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়েছে। হঠাৎ বৃষ্টিতে টমেটো ও আলু জাতের ফসল রয়েছে সেগুলোতে ছত্রাকের আক্রমণ হতে পারে। তবে আমরা কৃষকদের পরামর্শ দিচ্ছি যাতে বৃষ্টির পরপরই রোদ উঠলে ছত্রাকনাশক স্প্রে করা হয়। তাতে করে এধরনের সমস্যা হবে না। তিনি আরোও বলেন, বৃষ্টির কারণে কিছু নিচু এলাকার বোরো ধানের চারাগুলো পানির নীচে তলিয়ে গিয়েছে। দু-এক দিনের মধ্যে পানি নিষ্কাশন হলে চারা গাছগুলোর সমস্যা হবে না।