
NL24 News
০৪ আগস্ট, ২০২৪, 9:51 PM

চান্দিনায় হাইওয়ে কনস্টেবলকে পিটিয়ে হত্যা,ইউএনও অফিস সহ আওয়ামী লীগ অফিস ভাংচুর অগ্নিসংযোগ
চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: কুমিল্লার চান্দিনায় বৈষম্য বিরোধী ছাত্রদের অসহযোগ আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের বিভিন্ন ইউনিটের নেতাকর্মী ও পুলিশের সাথে দফায় দফায় সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।এতে একজন কনস্টেবল নিহত হয়েছে। এছাড়াও উপজেলা পরিষদে হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের ঘটনাও ঘটে। রবিবার সকাল সাড়ে ১১টায় চান্দিনা পালকি সিনেমা হল ও গোমতা এলাকায় ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতাকর্মীরা আন্দোলনকারীদের উপর হামলা চালায়। আন্দোলনকারীরা পাল্টা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ধাওয়া করলে পিছু হটে যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ইলিয়টগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি থানার সামনের মহাসড়ক দখলে নেয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে পুলিশ ফাঁড়ি থেকে টিয়ারশেল নিক্ষেপ ও রাবার বুলেট ছোঁড়া হয়। পুলিশের ছোঁড়া গুলিতে পথচারী ও শ্রমিকসহ গুলিবিদ্ধ হওয়ার পাশাপাশি অর্ধশতাধিক শিক্ষার্থী আহত হয়েছে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ইলিয়টগঞ্জ পুলিশ ফাঁড়ি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। দুর্বৃত্তদের পিটুনিতে এরশাদ নামে এক কনস্টেবল নিহত হয়েছে। গুলিবিদ্ধ আহতদের ইলিয়টগঞ্জ সহ বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ইলিয়টগঞ্জ হাইওয়ে থানার ইনচার্জ মঞ্জুর আলম জানান- সকাল ১১ টার পর থেকে আন্দোলনকারীরা পুরো থানা ঘেরাও করে রাখে। দফায় দফায় হামলা চালিয়ে ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করেছে। দুর্বৃত্তদের পিটুনিতে এরশাদ মিয়া নামে এক কনস্টেবল নিহত হয়েছে। কাগজপত্র ও অস্ত্র লুট করে নিয়ে গেছে হামলাকারীরা।
এর আগে সকাল ৯টা থেকেই ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের চান্দিনা বাসস্ট্যান্ডে অবস্থান নেয় উপজেলা যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। সকাল ১০টার দিকে চান্দিনা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে জড়ো হতে থাকে আন্দোলনকারীরা। তারা যান চলাচল বন্ধ করা শুরু করলে আন্দোলনকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে চেষ্টা চালায় যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা। এসময় আন্দোলনকারীদের সাথে যুবলীগ-ছাত্রলীগের সংঘর্ষ ঘটে। একপর্যায়ে আন্দোলনকারীদের ধাওয়া খেয়ে পিছু হটে নেতাকর্মীরা। পরবর্তীতে ইলিটগঞ্জের একটি গ্যাস পাম্প এলাকায় মহাসড়কে বাস ও মাইক্রোবাসে আগুন দেয় আন্দোলনকারীরা। এসময় আওয়ামী লীগের অফিস ভাঙচুর সহ ইউপি চেয়ারম্যানের অফিস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ভাংচুর করে। এইদিকে চান্দিনায় দলীয় নেতাকর্মীদের অফিস সহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করার ঘটনাও ঘটেছে।
এদিকে দুপুরে চান্দিনা পালকি সিনেমা হল এলাকায় অবস্থান নেয় আন্দোলনকারীরা। এসময় মোবাইলে ভিডিও ধারণ করতে গেলে দৈনিক কালের কন্ঠ চান্দিনা প্রতিনিধি রণবীর ঘোষের ওপর হামলা করে তারা। রক্তাক্ত অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে চান্দিনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করা হয়। তার মাথায় সেলাই ও হাত ভেঙেছে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
সাংবাদিক রণবীর ঘোষ জানান- পালকি সিনেমা হল এলাকায় একটি দোকানে দাঁড়িয়ে ছিলাম। কয়েকজন দুর্বৃত্ত ধর ধর বলে আমার উপর হামলা করে। লাঠি দিয়ে মাথায় ও শরীরে আঘাত করে মানিব্যাগ,মোবাইল ছিনিয়ে নেয় তারা।
এদিকে ওই ঘটনার পর চান্দিনা উপজেলা পরিষদে হামলা চালিয়ে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অফিস, ইউএনও অফিস সহ বিভিন্ন দপ্তর ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা।
উপজেলা প্রশাসনিক কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম জানান- দুর্বৃত্তরা ইউএনও অফিসের প্রতিটি কক্ষ ভাংচুর করে। কম্পিউটার ও মেশিনারি যন্ত্রপাতি ভেঙে ফেলে। হিসাবরক্ষণ অফিসে অগ্নিসংযোগ করে কাগজপত্র পুড়ে ফেলে। মোটরসাইকেলে আগুন দেয়। উপজেলা চেয়ারম্যান অফিস, ইউএনও'র বাসভবনসহ বিভিন্ন দপ্তরে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করে।