
নিজস্ব প্রতিবেদক
৩০ আগস্ট, ২০২২, 9:22 PM

আমদানিকৃত কাপড় খোলাবাজারে বিক্রি বন্ধে দিয়েছেন হাইকোর্ট
দেশীয় টেক্সটাইল শিল্পকে হুমকিতে ফেলে বন্ডের অধীনে আমদানীকৃত কাপড় দেশীয় কালো বাজারে বিক্রি বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহনের বিষয়ে তদন্ত করার নির্দেশনা দিয়েছে হাইকোর্ট। সরকার গার্মেন্টস পণ্য রপ্তানীর জন্য বন্ডের অধীনে শুল্কমুক্ত কাপড় আমদানীর অনুমতির পরে কতিপয় ব্যাবসায়ী সেই কাপড় সরকারের শুল্ক ফাঁকি দিয়ে একটা বড় অংশ দেশীয় কালো বাজারে বিক্রি করে দুর্নীতির মাধ্যমে হাজার হাজার কোটি টাকা আয় করে মানি লন্ডারিং আইনে অভিযুক্ত হলেও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ অজানা কারণে নিরব থাকার বিষয়ে বিভিন্ন মিডিয়ায় খবর প্রকাশিত হলে বিষয়টি সম্পর্কে বাংলাদেশ ব্যাংক, দুদক, CID এবং Customs কর্তৃপক্ষের নিকট তদন্ত করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহনের লিখিত অভিযোগ জানানো সত্ত্বেও কোন ব্যাবস্থা না নেয়ায় সংশ্লিষ্ট বিষয়ে গত ২৯.০৮.২০২২ তারিখ আদালতে একটা ১টা রীট পিটিশন দায়ের করলে,তা আজ শুনানী হয়।বিচারপতি মোঃ নজরুল ইসলাম তালুকদার এবং বিচারপতি খিজির হায়াত এর আদালত ০৪ (চার) সপ্তাহের রুল জারি করে বন্ডের অধীনে আমদানীকৃত কাপড় কালো বাজারে বিক্রি করা অবৈধ ব্যবসার সঙ্গে জড়িত ব্যাবসায়ী প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিস্কীয়তা কেন বৈআইনী ঘোষণা করা হবে না এবং বাদী কর্তৃক আনীত সংশ্লিষ্ট দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে কেন তদন্তের নির্দেশ দেয়া হবে না তা জানতে বলা হয়।আদালত অন্তবর্তীকালীন আদেশে দুদকের চেয়ারম্যান, NBR এর চেয়ারম্যান, কমিশনার অব কাস্টমস, কাস্টমস বড় কমিশনার এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট দুর্নীতির অভিযোগের বিষয়ে বিষয়ে বাদীর আবেদন সমূহ ০৩ (তিন) মাসের মধ্যে নিষ্পত্তি করতে এবং পরবর্তী ০২ (দুই) সপ্তাহের মধ্যে এফিডেভিট আকারে তা আদালতে দাখিল করার নির্দেশ দিয়েছেন। একই সাথে আদালত বিভিন্ন কোম্পানীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিষয়ে আনীত অভিযোগ তদন্দ করে ব্যবস্থা নিতে বলেছেন। শুনানীতে বাদী পক্ষের কৌশলি সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরসেদ বলেন, কতিপয় ব্যবসায়ী বন্ডের কাপড় ও সূতা লোকাল বাজারে অবৈধভাবে বিক্রি করে শুধু দুর্নীতিই করছে না দেশীয় টেক্সটাইল শিল্পকে হুমকিতে ফেলেছে। তিনি বলেন, বন্ডের লাইসেন্স অপব্যবহার করে বিভিন্ন কোম্পানী যথা নোমানগ্রুপের সহযোগী প্রতিষ্ঠান জাবের এন্ড জুবায়ের ফেব্রিক্স লিমিটেড,নোমান ফ্যাশন ফেব্রিক্স লিমিটেড,ইসমাইল স্পিনিং মিলস্,জাবের স্পিনিং মিলস, ইয়াসমিন স্পিনিং মিলস, নাইস ডেনিম মিলস্ সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আমদানীকৃত কাপড় ও সুতা অবৈধভাবে বাজারে বিক্রি করার সংবাদ মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছে তা নয়, উপরন্তু বাদী কর্তৃক দুদক, বাংলাদেশ ব্যাংক সহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের নিকট আবেদন-নিবেদন করেও কোন ফলাফল আসেনি,সে কারণে বাদী আদালতের দাড়ন্ত হয়েছেন। তিনি বলেন, এ ধরনের কর্মকান্ড বন্ধ না হলে শত শত দেশীয় কোম্পানী বন্ধ হবে এবং লক্ষ লক্ষ শ্রমিক অর্থনৈতিকভাবে দূদর্শাগ্রস্থ হবে। রীট পিটিশনার হলেন চট্টগ্রামের লোহাগাড়া থানার আধুনগর সরদানি পাড়ার মৃত ছিদ্দিক আহমদের ছেলে আনোয়ার হোসেন নামক এক সাহসী যুবক। বিবাদীরা হলেন অর্থ সচিব, NBR চেয়ারম্যান, দুদক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ বাংক গভর্নর, CID এবং কাস্টমস কমিশনার সহ ০৯ (নয়) জন রীট পিটিশনের পক্ষে শুনানী করেন সুপ্রীম কোর্টের সিনিয়র এডভোকেট মনজিল মোরসেদ। তাকে সহায়তা করেন এডভোকেট রিপন বাড়ৈ ও এডভোকেট সন্জয় মন্ডল। দুদকের পক্ষে ছিলেন এডভোকেট এ কে এম ফজলুল হক।