
NL24 News
০৯ আগস্ট, ২০২৫, 4:17 PM

আগামী ১০ বছরের মধ্যে যমুনায় কোন মাছ পাওয়া যাবেনা, দাবি জেলেদের
শাহীন খন্দকার: এমন এক সময় ছিলো বর্ষা এলেই যমুনা নদীতে জেলেসহ সাধারণ মানুষের মধ্যে মাছ ধরার প্রতিযোগিতা শুরু হয়ে যেতো। বিশেষ করে বৃষ্টির দিনগুলোতে হাক-ডাক পড়ে যেতো! কিন্ত এখন সব-ই স্বপ্ন যমুনা পাড়ের বাসিন্দারের নিকট। যমুনা নদীতে সু-স্বাদু ইলিশ মাছ, বোয়াল মাছ, রুই-কাতলা, মৃগেল, বাগাইর, পাংগাস, বড় বাইম মাছসহ চিংড়ী মাছ,কাজলী মাছ, বাতাসি মাছ, বাইজা-গোছোই মাছ, টেংড়া মাছ, গুলশা মাছ, বাইলাসহ নানা প্রজাতির মাছ পাওয়া যেতো।
তবে আশ্বিন-কার্ত্তিকে মাঝে মধ্যে দু‘চারটা বড় বড় সাইজের বাঘাইর মাছ এখনো যমুনায় জেলেদের ঝালে ধরা পড়ে। তবে আগের মতো বোয়াল ও আইড় মাছসহ ছোট মাছ খুব একটা পাওয়া যায়না! এক প্রশ্নের জবাবে স্থানীয় জেলেসহ এলাকাবাসি জানিয়েছেন, পরিবেশ অধিদপ্তর মৎস্য ও প্রাণী অধিদপ্তরসহ রয়েছে, নদী শাসন মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ মন্ত্রনালয় থাকার পরেও নদীতে কি হচ্ছে তার কোন খোজই যদি কতৃপক্ষ রাখতেন তাহলে সংকট হতোনা। যমুনা পাড়ের বাসিন্দাদের দাবি পরিবেশ অধিদপ্তর, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর এবং নদী শাসন যৌথভাবে বাংলাদেশের নদীগুলোর দিকে দেখবাল করতেন তাহলে মাছ বিলীন হতো না।
জেলেসহ স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ইদানিং কিছু কিছু মানুষ পেশায় জেলে না হয়েও মাছ ধরার পেশাকে বেছে নিয়েছে, কারেন্টঝাল ও ব্যাটারির সাহায্যে যমুনা নদীর পানিতে এক ধরণের কারেন্ট সৃষ্টি করে মাছ শিকার করার ফলে প্রাকৃতিক মাছ হারিয়ে যাচ্ছে! স্থানীয় বাসিন্দাসহ স্থানীয় জেলেদের দাবি সব চেয়ে মাছের ক্ষতি করছে ব্যাটারির সাহায্যে পানিতে বিদৎুতায়ন করে মাছ ধরাকে দায়ি করেন।
এভাবে যদি চলতে থাকে তাহলে আগামী ১০ বছরের মধ্যে যমুনায় আর কোন মাছ পাওয়া যাবেনা বলে দাবি স্থানীয়দের! নাম প্রকাশে অইচ্ছুক যমুনা পাড়ের মানুষের দাবি এসব প্রযুক্তি যারা তৈরী করছেন, তাদের প্রতিহত করলেই তৃণমুলে বন্ধ হবে এসব প্রযুক্তি ব্যাবহার করে মাছ ধরা।
তাই খোদ সরকারের ভিতরে যে সরকার বসে রয়েছেন এবং প্রশাসন তাদের প্রথমে দূর্নীতি মুক্ত হতে হবে। তবেই কোম্পানীগুলোর নির্মিত মাছ ধরার প্রযুক্তি বন্ধ হবে। অসাধু ব্যাবসায়িরাও আমদানি রপ্তানী হতে বিরত থাকবেন বলে তারা আশাবাদ ব্যাক্ত করেন। সেই সঙ্গে প্রাকৃতিক মাছ বিলীন হওয়ার আশঙ্কা থাকবেনা।
ভূঞাপুর উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোসা: রিমা আক্তারের সঙ্গে প্রতিবেদকের কথা হলে তিনি বলেন, আমি নতুন এসেছি বদলি হয়ে ইলেকট্রোফিশিংয়ের তথ্য তিনি শুনেছেন। তবে যেসব অসৎব্যাক্তি এই কাজটি করছেন,তারা কেউ স্থানীয় নয়।
তিনি বলেন, রাতের অন্ধকারে এক শ্রেনীর অসাধু বর্হিরাগত মাছ শিকারী ট্রলার দিয়ে ইলেকট্রিক ফিশিং ও চায়না দোয়ারী ঝালদিয়ে মাছ শিকার করছেন! এধরণের জেলেদের ধরার চেষ্টা চলছে বলে জানিয়েছেন মৎস্যকর্মকর্তা।
তিনি আরো বলেন, ইতিমধ্যে অভিষান চালিয়ে বেশ কিছু চায়না দোয়ারিঝাল জব্ধ করে তা আগুনে পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে। তবে কে বা কারা এই দুয়ারী জাল দিচ্ছে এখনো চিহ্নিত করা সম্ভব হয়নি তবে চেষ্টা চলছে ধরার বলে জানিয়েছেন।
ভূঞাপুর মৎস্য কর্মকর্তা বলেন, উপজেলায় নিবন্বিত জেলের সংখ্যা রয়েছে একহাজার ৪২১ জন এবং মোট পুকুর রয়েছে দুইহাজার ৭৮৯টি এর মোট আয়তন ৩৪৯ দশমিক ৭৬ হেক্টর। এর মধ্যে সরকারী পুকুর ১৬টি যার আয়তন ১৩৭ দশমিক এক হেক্টর আর বেসরকারী পুকুর রয়েছে ২৭৭৩টি যার আয়তন ২১৩ হেক্টর।
এক প্রশ্নের উত্তরে উপজেলা মৎম্যকর্মকর্তা বলেন, স্থানীয়ভাবে মাছের চাহিদা রয়েছে ৫৬৯৯ দশমিক ৭৮ মেট্রিকটন থাকলেও বাৎসরিক উৎপাদন হচ্ছে ৩৫৭৮ দশমিক ৮৯ মেট্রিকটন আর ঘাটতি রয়েছে ১২২০ দশমিক ৮৯ টন। তবে চলতি বছর মাছের উৎপাদন লক্ষমাত্রা ৪৫০০ টন।
অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, কার্ডধারী জেলে রয়েছে ১ হাজার ৪২১ জন মৎস্য চাষী সমিতির ৩০জন সদস্য রয়েছে, রয়েছে ১৮টি আড়ৎ এবং ২৪টি হাটবাজার ৫টি বরফকল। উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ইলেকট্রোফিশিং চলে গভীর রাতে তাই প্রতিরোধে স্থানীয় এলাকাবাসী, স্থানীয় সাংবাদিকসহ পেশাগত জেলেদের ইউনিয়ণ পরিষদের চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের সহযোগিতা পেলেই যমুনা নদীতে ইলেকট্রোফিশিং প্রতিরোধ সম্ভব বলে জানিয়েছেন।