
নিজস্ব প্রতিবেদক
০৩ জুন, ২০২৫, 2:06 PM

রাজউক ঘুষখোর ইমারত পরিদর্শক সাইফুলের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড
-৪ বছরেও বদলী নেই পরিদর্শক সাইফুলের
গত ২৯ মে এবং ১ই জুন ২০২৫ ইং জাতীয় দৈনিক মুক্তখবর পত্রিকায়, রাজউক ইমারত পরিদর্শক সাইফুল ইসলামের ঘুষ ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে ২টি তথ্য ভিত্তিক সংবাদ প্রকাশিত হয়। যা রাজউক প্রধান কার্যালয়সহ, সারা দেশব্যাপী ব্যাপক আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। সংবাদটি প্রকাশিত হওয়ার পর থেকেই রাজউক জোন ৬/১ এর ইমারত পরিদর্শক মোঃ সাইফুল ইসলাম বিতর্কিত কর্মকাণ্ড শুরু করেছেন। তিনি জাতীয় দৈনিক মুক্তখবর’র প্রধান প্রতিবেদককে ফোন দিয়ে, দৈনিক মুক্তখবরের অফিসে সাথে করে লোক নিয়ে এসে দেখে নিবেন বলে হুমকি প্রদান করেন। এ ছাড়াও বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার সম্পাদক ও অনলাইন পত্রিকার সংবাদ কর্মীদের দ্বারা জাতীয় দৈনিক মুক্তখবরে সম্পাদক ও প্রকাশক মো. নজরুল ইসলামের মোবাইলে ফোন দিয়ে রাজউক ইমারত পরিদর্শক সাইফুল ইসলামের পক্ষে সাফাই ও সুপারিস করেন। গত ২ জুন ইমারত পরিদর্শক সাইফুল ইসলামের পক্ষে একটি দৈনিক পত্রিকার ইমেল থেকে জাতীয় দৈনিক মুক্তখবর পত্রিকার ইমেলে ইমারত পরিদর্শক সাইফুল ইসলামের একটি প্রতিবাদ লিপি আসে, ঘন্টাখানেক পর একই অফিস সাইফুলের সাংবাদিক আত্মীয় পরিচয়ে তার দুর্নীতির ব্যাপারে আর সংবাদ প্রকাশ না করার জন্য সাইফুল একটি প্রতিবাদ লিপি পাঠান। কিন্তু প্রতিবাদটি রাজউক সুত্রে না আসায় মুক্তখবর সেটি গ্রহন করেনি।
পরিদর্শক সাইফুল পাগলপ্রায় হয়ে এ ধরনের আচরণ করায় সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা ভঙ্গ করার পাশাপাশি রাজউকের ভাবমূর্তিও ক্ষুন্ন করছেন বলে অভিমত প্রকাশ করেছেন রাজউকের অনেক কর্মকর্তারা। সরকারি কর্মকর্তাদের কাছে বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষ বিভিন্ন দাবি দাওয়া নিয়ে আসবে, আসাটাই স্বাভাবিক। সাধারণ মানুষের সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করা যাবে না। এইগুলো কোনো শিষ্ঠাচারের মধ্যে পড়ে না। চাকরিবিধিতেও এসব বিষয়ে স্পষ্ট করে বলা আছে। সরকারি কর্মচারী আচরণ বিধিমালার ২৭ নম্বর বিধিতে বলা হয়েছে, ‘সরকারি কর্মচারী সংকীর্ণতা, প্রিয়তোষণ, বেআইনিভাবে ক্ষতিগ্রস্তকরণ এবং ইচ্ছাকৃতভাবে ক্ষমতার অপব্যবহার করতে পারবেন না।’ আর সংবিধানের অনুচ্ছেদ ২২(২)-এ উল্লেখ আছে, ‘সকল সময়ে জনগণের সেবা করিবার চেষ্টা করা প্রজাতন্ত্রের কর্মে নিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তির কর্তব্য।’ সম্প্রতি ইমারত পরিদর্শক সাইফুলের এমন উদ্ভট আচরনের ঘটনাগুলো সরকারের কর্মচারী আচরণ বিধিমালা পরিপন্থী তো বটেই সেই সঙ্গে সংবিধানেরও সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
ইতিপূর্বে প্রকাশিত সংবাদে প্রকাশ হয়েছিল ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার আইনসংগত আদেশ অমান্য করে কর্তব্যে অবহেলা প্রদর্শন এবং অসদাচরনের জন্য বরখাস্থ হয়েছিলেন। ‘সরকারি কর্মচারী (আচরণ) বিধিমালা, ১৯৭৯-এর যে কোনও বিধান লঙ্ঘন সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা, ২০১৮-এর আওতায় অসদাচরণ হিসেবে গণ্য হবে। কোনও সরকারি কর্মচারী এ বিধিমালার কোনও বিধান লঙ্ঘন করলে তিনি অসদাচরণের দায়ে শৃঙ্খলামূলক ব্যবস্থা গ্রহণের আওতায় আসবেন। সরকারি কর্মচারীদের শৃঙ্খলা-বহির্ভূত আচরণের বিষয়ে বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকারের অবস্থান অত্যন্ত কঠোর হলেও এ ক্ষেত্রে পিছিয়ে রয়েছে রাজউক, তবে রাজউকের পরিচালক (প্রশাসন) এ. বি. এম. এহছানুল মামুনের সাথে সাইফুলের এমন নিয়ম বহির্ভূত বিতর্কিত কর্ম কাণ্ডের বিষয়ে কথা হলে তিনি কঠোর পদক্ষেপ গ্রহন করার আশ্বাস প্রদান করে এবং উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ-১ এর পরিচালক মোঃ মনিরুল হকের সাথে কথা বলতে বলেন। পরবর্তীতে উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ-১ এর পরিচালক মোঃ মনিরুল হকের মুঠো ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। এ দিকে রাজউক সুত্রে জানা যায়, রাজউকের সব কর্মকর্তা-কর্মচারী, ইমারত পরিদর্শকদের রদবদল হলেও পরিদর্শক সাইফুল প্রায় গত ৪ বছর ধরে রাজউক জোন ০৬ আধিপত্য বিস্তার করার পাশাপাশি ইমারত পরিদর্শকদের বদলী বাণিজ্য করে আসছেন। রাজউকের ইমারত পরিদর্শক সাইফুল ইসলামের ব্যাপক দুর্নীতির বিষয়ে দৈনিক মুক্তখবরের অনুসন্ধান চলমান রয়েছে যা পরবর্তী সংখ্যায় প্রকাশ করা হবে।