ঢাকা ২১ জুন, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা ঢাকা মেডিকেল কলেজ পাঁচদিন টানা বৃষ্টির আভাস মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে পিছিয়ে পড়ছে দেশ: উপদেষ্টা সাখাওয়াত আ. লীগকে নিষিদ্ধ করিনি, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা সিদ্ধান্ত ইসির: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা ছাগলনাইয়ায় সেফটিক ট্যাংক থেকে দুই শিশুর লাশ উদ্ধার রংপুর জেলার ৬ আসনে হাতপাখা প্রতীকের ৫ প্রার্থীর নাম ঘোষণা নতুনবাজার সড়ক অবরোধ ইউআইইউ শিক্ষার্থীদের মোসাদের ৫৪ গুপ্তচরকে গ্রেপ্তারের দাবি ইরানের হাসনাহেনায় মুগ্ধতা ছড়ালেন পরীমণি ঢাকার বাতাস আজ ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’

ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর হওয়ার নির্দেশ রাষ্ট্রপতির

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৭ এপ্রিল, ২০২২,  9:44 PM

news image

রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ জনগণের তীব্র দুর্ভোগের জন্য দায়ী ব্যবসায়ী সিন্ডিকেটের বিরুদ্ধে কঠোর হতে এবং তাদের বিচারের আওতায় আনার জন্য সরকারকে নির্দেশ দিয়েছেন। বৃহস্পতিবার (৭ এপ্রিল) বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে ‘জাতীয় রপ্তানি ট্রফি-২০১৭-১৮’ হস্তান্তর অনুষ্ঠানে বঙ্গভবন থেকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে তিনি এ নির্দেশনা দেন। রাষ্ট্রপতি বলেন, আপনাদের (ব্যবসায়ীদের) অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। সরকারকে সহযোগিতা করতে হবে যাতে কিছু অসাধু লোকের জন্য পুরো ব্যবসায়ী সম্প্রদায়ের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ না হয়। তিনি বলেন, ‘একটি মুক্তবাজার অর্থনীতিতে, সরবরাহ ও চাহিদার অবস্থা বিবেচনা করে পণ্যের দাম নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু আমাদের এখানে চাহিদা ও সরবরাহের সমন্বয়হীনতা নয় বরং কারসাজি করে পণ্যের দাম বাড়ানো হয়। এটা কোনোভাবেই কাম্য নয়।’  বিশ্বের আরও কয়েকটি দেশের উদাহরণ তুলে ধরে আবদুল হামিদ বলেন, বাংলাদেশে রমজান ও ঈদসহ বিভিন্ন উৎসবের আগমনে দেখা যায় কোনও কোনও পণ্যের দাম হঠাৎ করে বেড়ে যায়। কিন্তু বিশ্বের অনেক দেশেই সাধারণত জাতীয়, ধর্মীয় ও সামাজিক উৎসব উপলক্ষে পণ্যের দাম কমে যায়। রাষ্ট্রপ্রধান উল্লেখ করেন, এখানে কোনও উৎসব এলেই দেখা যায়, উৎসবকে পুঁজি করে কীভাবে জনগণের পকেট কাটা যায়, তা দেখার অপেক্ষায় থাকে ক্ষুদ্র ও দানব ব্যবসায়ীদের একটি অংশ। রাষ্ট্রপতি পণ্যের চাহিদা, উৎপাদন, মজুদ ও ঘাটতির সঠিক তথ্য-উপাত্ত সতর্কতার সঙ্গে সংগ্রহ করে আগাম বাস্তবসম্মত পরিকল্পনা নেয়ার পরামর্শ দেন, যাতে কোনও দুষ্ট চক্র কারসাজির মাধ্যমে মানুষের দুর্ভোগ বাড়াতে না পারে। এ বিষয়ে ব্যবসায়ী, আমদানিকারক, রপ্তানিকারক, আমলা ও সরকার কর্তৃক সমন্বিত পদক্ষেপ নেয়ার ওপরও জোর দেন আবদুল হামিদ। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ও রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো (ইপিবি) যৌথভাবে রাজধানীর রেডিসন ব্লু-র’ওয়াটার গার্ডেন হোটেলে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি এতে সভাপতিত্ব করেন। মুক্তবাজার অর্থনীতিতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগে ব্যবসায়ীদের ভূমিকা সর্বাগ্রে উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, সরকার কখনও কারো কাজে হস্তক্ষেপ করতে চায় না। কিন্তু বিপুল মুনাফার লোভে যখন জনস্বার্থ বাধাগ্রস্ত হয়, তখন সরকার কোনও না কোনোভাবে হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হয়। ইসলামের দৃষ্টিতে ব্যবসাকে একটি উত্তম পেশা উল্লেখ করে তিনি বলেন, একজন ব্যবসায়ী, উৎপাদক, বিনিয়োগকারী বা রপ্তানিকারক হিসেবে সমাজের প্রতিও আপনার দায়িত্ব রয়েছে। জনগণের কষ্টের কথা না ভেবে শুধু নিজেদের লাভের কথা ভাবলে চলবে না। রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘জনগণ চায় আপনি যুক্তিসঙ্গত মুনাফায় ব্যবসা করুন। আমাদের রাতারাতি ধনী হওয়ার মানসিকতা ত্যাগ করতে হবে। ব্যবসার প্রতিটি ক্ষেত্রে সততা ও নিষ্ঠার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে হবে।’ আবদুল হামিদ বলেন, জনগণ যাতে ব্যবসায়ীদের অতিমুনাফার শিকার না হয় এটাই তাদের প্রত্যাশা। দেশের অর্থনীতিকে গতিশীল ও উন্নয়নশীল রাখতে রপ্তানিকারকদের অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রপ্তানি ট্রফি’ শিরোনামের জাতীয় রপ্তানি ট্রফি মর্যাদাপূর্ণ বিষয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, এ ট্রফি অন্যান্য রপ্তানিকারকদেরও অনুপ্রাণিত করবে। রাষ্ট্রপতি বলেন, দেশের ‘অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনায় এখানে অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য রপ্তানি নেতৃত্বাধীন প্রবৃদ্ধির কৌশল গ্রহণ করা হয়েছে। রপ্তানিকে সর্বাধিক গুরুত্ব দিয়ে উন্নয়ন পরিকল্পনা নেয়া হচ্ছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, ‘রপ্তানি বৃদ্ধির মাধ্যমে আমরা আরও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে পারব। নতুন বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারব। সর্বোপরি জাতীয় আয়ও বাড়াতে পারব। রাষ্ট্রপতি উচ্চমূল্য সংযোজন পণ্য উৎপাদনের জন্য দেশীয় কাঁচামালের ওপর নির্ভরশীল রপ্তানি পণ্য উৎপাদনে মনোযোগী হওয়ার আহ্বান জানান। বাংলাদেশ সম্প্রতি সবজি উৎপাদনে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে উল্লেখ করে আবদুল হামিদ বলেন, প্রচলিত কৃষির পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজি ও ফলমূল রপ্তানির উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। ভাষণের শুরুতেই স্বাধীনতার মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, দেশের স্বার্থে জীবন উৎসর্গকারী সব শহীদ ও বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানান তিনি। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব তপন কান্তি ঘোষ, এফবিসিসিআই সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন, ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রপ্তানি ট্রফি পুরস্কারপ্রাপ্ত জাবের অ্যান্ড জোবায়ের ফেব্রিক্স লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এএসএম রফিকুল ইসলাম নোমান এবং ইপিবির ভাইস-চেয়ারম্যান মো. এএইচএম আহসান অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্য, বিশিষ্ট ব্যক্তি, ব্যবসায়ী নেতা, উচ্চপদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে রপ্তানি খাতে অসামান্য অবদানের জন্য ৬৬টি কোম্পানির হাতে স্বর্ণ, রৌপ্য ও ব্রোঞ্জ-ক্যাটাগরিতে ৬৬টি ট্রফি তুলে দেয়া হয়।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম