
নিজস্ব প্রতিনিধি
০৯ এপ্রিল, ২০২২, 3:33 PM

পাহাড়ী ঢল কেড়ে নেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কৃষকের হাঁসি
সোনালী ধানে যখন বিস্তির্ণ ফসলী জমি ভরে উঠেছিল তখন আকষ্মিক পাহাড়ী ঢল কেড়ে নেয় কৃষকের হাসি। বাধ্য হয়ে কাঁচা ও আধা পাঁকা ধান কেটে নেয় ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার হাওরাঞ্চলের কৃষকরা। এতে কাঙ্খিত ফলন থেকে বঞ্চিত হওয়ায় কৃষকের চোখে -মুখে এখন হতাশার ছাপ । কৃষি অফিস জানিয়েছে পূনর্বাসন কর্মসূচীর আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে প্রনোদনার আওতায় আনার কথা। চলতি মওসুমে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলায় ১ লক্ষ ১১ হাজার হেক্টর জমিতে বোরো আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধরণ করা হয়। এর মধ্যে হাওর এলাকায় আবাদ হয়েছে ৩২ হাজার ২ হেক্টর জমিতে। আকষ্মিক পানি বেড়ে যাওয়ায় নাসিরনগর উপজেলার রঙ্গন ও মেঘনা নদীর তীর ঘেঁষা নিচু জমির ধান পানিতে তলিয়ে গেছে।
এতে হাওর বেষ্টিত অঞ্চল উপজেলার নাসিরপুর ও গোয়াল নগরে দুটি ইউনিয়নের কৃষকরা নির্ধারিত সময়ের আগেই জমির কাঁচা ও আধা পাকা ফসল কাটতে বাধ্য হচ্ছে। কয়েকদিন পরেই ফসল ঘরে তোলার কথা থাকলেও আকষ্মিক ভাবে পানি বেড়ে যাওয়ায় কয়েক হাজার কানি জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। আবাদকৃত বিআর-২৮ ও ২৯ ধান তলিয়ে যাওযায় বাধ্য হয়েই জমির ধান কেটে নিচ্ছেন। কৃষকরা জানিয়েছেন কানি প্রতি জমি আবাদ করতে তাদের খরচ হয়েছে ৫/৬ হাজার টাকা। অসময়ে ধান কাটতে বাধ্য হওয়ায় কাঙ্খিত ফলন পাবেন না। আর্থিক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে এখন তারা দিশেহারা। কৃষক বাবুল মিয়া বলেন, অনেক ধার দেনা করে ২০ কানি জমিতে বিআর-২৮ ধান চাষ করেছি। জমি থেকে প্রায় পাঁচশ মণ ধান পাওয়ার কথা থাকলেও অসময়ে কেটে ফেলায় এখন এক থেকে দেড়শ মণ ধান পাওয়া যেতে পারে। অপর কৃষক ইউসুফ মিয়া বলেন, কানি প্রতি ১৫ থেকে ১৮ মণ ধান পাওয়ার কথা থাকলে এখন পাওয়া যাবে অর্ধেকেরও কম। তাছাড়া ধান কাঁচা কাটতে প্রতি শ্রমিককে দিতে হচ্ছে ৫০০ টাকা করে। ফলে আর্থিকভাবে অনেক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। কৃষক ইসমাইল মিয়া বলেন, প্রতিবছর চলতি সময়ের চেয়ে দুই সপ্তাহ পর পানি আসে কিন্তু এবার আকষ্মিকভাবে আগেই পানি চলে আসায় কয়েক হাজার কানি ধানি জমির ফসল হুমকির মুখে। নাসিরনগর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবু সাইদ তারেক বলেন, পানিতে তলিয়ে যাওয়া ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আউশ আবাদ প্রণোদনার আওতায় আনা হবে। তবে প্রকৃত ক্ষয়ক্ষতি নিরুপণ করতে কিছুটা সময় লাগবে। অন্যদিকে কৃষি অফিসের দেওয়া তথ্য মতে, কিশোরগঞ্জ ও সুনামগঞ্জের নদ-নদীতে পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নাসিরনগরের বিভিন্ন হাওর ও নদীতে পানি বেড়ে যায়। উপজেলার নাসিরপুর ও গোয়ালনগরে সব মিলিয়ে প্রায় ৭০/৮০ বিঘা জমির ধান নষ্ট হয়েছে পানিতে।