
স্পোর্টস ডেস্ক
১৩ আগস্ট, ২০২৫, 11:06 AM

নিজেদের মাটিতে পাকিস্তানকে লজ্জায় ডুবালো উইন্ডিজ
নিজেদের মাটিতে তৃতীয় ওয়ানডেতে পাকিস্তানকে ২০২ রানে হারিয়ে তিন ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জিতল ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ত্রিনিদাদে মঙ্গলবার (১২ আগস্ট) ২৯৪ রানের পুঁজি গড়ার পর পাকিস্তানকে মাত্র ৯২ রানে গুটিয়ে দেয় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ওয়ানডেতে এই নিয়ে চারবার দুইশ বা এর বেশি রানে জিতল ক্যারিবিয়ানরা। আইসিসির পূর্ণ সদস্য দলের বিপক্ষে এই ম্যাচের চেয়ে তাদের বড় জয় আছে আর একটি, ২০১৪ সালে হ্যামিল্টনে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে ২০৩ রানে।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের এই জয়ের নায়ক অধিনায়ক শেই হোপ। ১৮তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি করেন তিনি। ১০ চার ও ৫ ছক্কায় ৯৪ বলে অপরাজিত ১২০ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে ম্যাচ সেরার স্বীকৃতি পান ৩১ বছর বয়সী কিপার-ব্যাটসম্যান। বল হাতে অগ্রণী ভূমিকা রাখেন জেডেন সিলস। দুর্দান্ত প্রথম স্পেলে পাকিস্তানের টপ অর্ডার গুঁড়িয়ে দেওয়া ২৩ বছর বয়সী পেসার ১৮ রানে শিকার করেন ৬ উইকেট। এই সংস্করণে প্রথমবার পাঁচ উইকেটের স্বাদ পেলেন তিনি।
প্রথমে ব্যাটিং করতে নেমে উইন্ডিজদের শুরুটা হয়েছিল দ্রুত উইকেট হারিয়ে। মাত্র ৫ রান করে ব্রেন্ডন কিং আউট হওয়ার পর কেসি কার্টিও ফেরেন মাত্র ১৭ রানে। ওই সময় তাদের প্রয়োজন ছিল বড় জুটির। যা (৬৪) আসে রোস্টন চেজ-হোপের পঞ্চম উইকেট জুটিতে। ২৯ বলে ৩৪ রানে আউট হন চেজ। এর আগে ওপেনার এভিন লুইস করেন ৩৭ রান। একপ্রান্ত আগলে রেখে দলকে সামনে টানতে থাকেন ক্যারিবীয় অধিনায়ক হোপ।
আশা হয়ে টিকে থাকা এই ব্যাটারই ১৮৪ রানে ৬ উইকেট হারানো ক্যারিবীয়দের ২৯৪ রানে পৌঁছে দেন। তাকে ক্যামিও ইনিংসে যোগ্য সঙ্গ (২৪ বলে ৪ চার, ২ ছক্কায় ৪৩) দেন টেলএন্ডার জাস্টিন গ্রিভস। আর ১৮তম ওয়ানডে সেঞ্চুরি করা হোপ ৯৪ বলে ১০ চার ও ৫ ছক্কায় ১২০ রানে অপরাজিত ছিলেন। পাকিস্তানের পক্ষে ২টি করে উইকেট নেন নাসিম শাহ ও আবরার আহমেদ।
রান তাড়ায় প্রথম ওভারে সিলসের অফ স্টাম্পের বাইরের বলে কিপারের গ্লাভসে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন সাইম আইয়ুব। সিলসের পরের ওভারে পরপর দুই বলে বিদায় নেন আবদুল্লাহ শাফিক ও অধিনায়ক মোহাম্মদ রিজওয়ান। তিন জনের কেউ পাননি রানের দেখা। প্রায় দুই বছর ধরে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সেঞ্চুরি না পাওয়া বাবর আজম প্রতিরোধের চেষ্টা করলেও সফল হননি (২৩ বলে ৯)। তাকে এলবিডব্লিউ করে চতুর্থ শিকার ধরেন সিলস। প্রথম স্পেলে তার বোলিং ফিগার ছিল ৫-০-১২-৪!
পঞ্চম উইকেটে ৩৮ রানের জুটি গড়েন সালমান আলি আগা ও হাসান নাওয়াজ। শেষ পর্যন্ত এটিই হয়ে থাকে ইনিংসের সর্বোচ্চ জুটি। সর্বোচ্চ ৩০ রান করেন সালমান। নাসিমকে ফিরিয়ে পাঁচ উইকেট পূর্ণ করেন সিলস। পরের ওভারে হাসানকে বোল্ড করে ষষ্ঠ উইকেটের দেখা পান তিনি। ওই ওভারেই আবরারের রান আউটে ম্যাচের সমাপ্তি ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের সিরিজ জয়ের আনন্দ।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
ওয়েস্ট ইন্ডিজ: ৫০ ওভারে ২৯৪/৬ (কিং ৫, লুইস ৩৭, কার্টি ১৭, হোপ ১২০*, রাদারফোর্ড ১৫, চেইস ৩৬, মোটি ৫, গ্রেভস ৪৩*; নাসিম ১০-০-৭২-২, হাসান ১০-১-৬০-০, তালাত ৪-০-২৬-০, আবরার ৯-১-৩৪-২, সাইম ৮-০-৩৬-১, মোহাম্মাদ নাওয়াজ ৭-০-১৭-০, সাইম ৯-০-৬০-১
পাকিস্তান: ২৯.২ ওভারে ৯২ (সাইম ০, শাফিক ০, বাবর ৯, রিজওয়ান ০, সালমান ৩০, হাসান নাওয়াজ ১৩, তালাত ১, মোহাম্মাদ নাওয়াজ ২৩*, নাসিম ৬, হাসান ০, আবরার ০; সিলস ৭.২-০-১৮-৬, শেফার্ড ৫-২-১০-০, শামার ৪-০-৭-০, মোটি ৭-০-৩৭-২, চেইস ৬-১-১৬-১)
ফল: ওয়েস্ট ইন্ডিজ ২০২ রানে জয়ী
সিরিজ: ৩ ম্যাচের সিরিজ ২-১ ব্যবধানে জয়ী ওয়েস্ট ইন্ডিজ
ম্যান অব দা ম্যাচ: শেই হোপ
ম্যান অব দা সিরিজ: জেডেন সিলস