
নিজস্ব প্রতিনিধি
১১ জুন, ২০২২, 4:22 PM

নওগাঁয় অবৈধ ক্লিনিক ও ভুয়া ডাক্তারের ছড়াছড়ি
সীমান্তবর্তী বিশাল আয়তনের নওগাঁ জেলার প্রতিটি হাট-বাজার ও পাড়া-মহল্লায় লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসি এবং ভুয়া চিকিৎসকরা নানান রঙের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে নিয়মিত প্রতারণা করে আসছে। আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার অভিযান চলমান থাকলেও কোন কাজে আসছেনা এসব অবৈধ চিকিৎসা ব্যবস্থা ও চিকিৎসকদের উৎখাত করতে কিছুতেই থামানো যাচ্ছে না এসব অবৈধ ডাক্তার, ক্লিনিক এবং লাইসেন্স বিহিন ফার্মেসী মালিকদের। তাদের দৌরাত্ম যেনো আকাশ ছুঁয়ে গেছে। এসব কথিত চিকিৎসকদের দ্বারা গ্রামের সহজ-সরল মানুষ প্রতিনিয়িত প্রতারিত হলেও ভুয়া চিকিৎসকরা থাকেন প্রভাবশালীদের আশ্রয়ে। দীর্ঘদিন ধরে জেলার সদর,সহ মান্দা,আত্রাই, পোরশা, সাপাহার, মাহাদেবপুর সহ পত্নীতলা উপজেলার মুধইল বাজার,
শিবপুর চুরুট বাজার বাকরইল বাজার,পত্নীতলা সদর নিয়ামতপুর উপজেলার চন্দননগর ইউনিয়নের ছাতড়া বাজার, বেনীপুর বাজার, বরেন্দ্র বাজার, গবরার মোড়, মায়ামারী টিএলবি বাজার হাজিনগর ইউনিয়নের কাপাস্টিয়া বাজার, শিবপুর বাজার, ভাবিচার নাকইল বোর্ড বাজার, ভাবিচা বাজার, গাবতলী বাজার, সহ আশে পাশের সকল ইউনিয়ন বাজার গুলোতে ভুয়া চিকিৎসকরা তাদের নামের আগে ডা. ডিগ্রি ব্যবহার করে চিকিৎসার নামে সাধারণ মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ২০১০ সালের ৯ ডিসেম্বর সরকার ‘বাংলাদেশ মেডিক্যাল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিল’ নামে একটি আইন অনুমোদন দিয়েছে। এই আইনে রয়েছে, এমবিবিএস ও বিডিএস পাশ করা চিকিৎসক ছাড়া অন্য কেউ নামের আগে ডাক্তার বা ডিগ্রি লিখতে পারবেন না। সূত্র জানায়, দেশে বর্তমানে ২ লাখ গ্রাম ডাক্তার, ৬০ হাজার পল্লী চিকিৎসক ও প্রায় ৮ হাজার ডিপ্লোমা মেডিক্যাল সহকারী রয়েছে। নামের আগে ডাক্তার লেখা নিয়ে এসব চিকিৎসক এখন বেকায়দায় পড়েছে বলে একাধিক সূত্র নিশ্চিত করেছে। জানা গেছে, জেলার প্রতিটি উপজেলা এবং ইউনিয়নে সরকারি উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও কমিউনিটি ক্লিনিক থাকলেও যথাযথ নজরদারির অভাবে এসব সুবিধা থেকে সাধারণ মানুষ বরাবরই বঞ্চিত রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে সরকার নিযুক্ত স্বাস্থ্যকর্মী নিয়মিত কর্মস্থলে না আসায় এসব সুযোগ নিচ্ছেন ডাক্তার নামী একশ্রেণির প্রতারক। ভুয়া সার্টিফিকেট ও নানা ধরনের স্বাস্থ্য পরীক্ষার সামগ্রী নিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে গড়ে উঠেছে বাহারি নামের অবৈধ ক্লিনিক। আর ডক্তারি কোনো সনদ ছাড়াই চিকিৎসা প্রদান করে আসছে এসব ভুয়া চিকিৎসকরা। এসব ভূয়া চিকিৎসকদের অপচিকিৎসায় সাধারণ মানুষ প্রতারিত হলেও এ যেনো দেখার কেউ নাই। আবার অজ্ঞাত কারণে আইনপ্রয়োগকারী সংস্থা বা স্বাস্থ্য বিভাগ বিষয়টি দেখেও না দেখার অভিনয়ে এড়িয়ে চলেছেন বলে সচেতন মহলের ধারণা। এ সমস্ত অবৈধ চিকিৎসা ব্যবস্থা ও ভূয়া ডাক্তারের বিষয়ে নওগাঁ জেলা সিভিল সার্জন ডাঃ আবুহেনা মোহাম্মদ রায়হানুজ্জামান সরকার এর সহিত যোগাযোগ করা হলে তিনি দৈনিক মুক্ত খবর কে জানায় আমরা এই সমস্ত অপচিকিৎসা এবং ভূয়া চিকিৎসকদের চিহ্নিত করতে দিন রাত কাজ করে যাচ্ছি এ সকল অবৈধ চিকিৎসা বন্ধে আমাদের নজরদারি ও অভিযান চলমান রয়েছে। আপনাদের সকলের সর্বাত্মক সহযোগিতা পেলে ইনশাআল্লাহ এই ধরনের ভূয়া চিকিৎসক লাইসেন্স বিহীন অবৈধ ক্লিনিক চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিতে সক্ষম হবো। এ সময় তিনি আরও বলেন, বর্তমানে যারা পল্লী চিকিৎসক রয়েছেন, তাদের কোনো প্রশিক্ষণ বা সরকারি সার্টিফিকেট নেই। তিনি আরো জানান, সরকারি প্রশিক্ষণধারী পল্লী চিকিৎসকরা ১২টি ও মেডিক্যাল সহকারীরা ৩০টি ওষুধ ব্যবস্থাপত্রে লিখতে পারবেন। এর বাইরে কোনো ওষুধ তারা লিখতে পারবেন না।