
আবুল হোসেন বাবলু
০১ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, 8:49 PM

কুড়িগ্রামের মোহছেনাকে আর থাকতে হবেনা গোয়াল ঘরে
কুড়িগ্রাম জেলার উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণি ইউনিয়নের সুরিরডারা গ্রামে ছোট ছেলের গোয়াল ঘরে ষাটোর্ধ বয়সী মহেছেনার বসবাস সংক্রান্ত প্রতিবেদন প্রকাশের পর ওই বৃদ্ধার পাশে দাঁড়িয়েছে র্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়ন, র্যাব-১৩ রংপুর। জঙ্গিবাদ দমন, মাদক নির্মূল, জলদস্যু দমন এবং সর্বাপরি সন্ত্রাস দমনে র্যাবের সফলতা অত্যন্ত ঈর্ষণীয়। এ মুহূর্তে জনগণের অন্যতম আশা ভরসার স্থল র্যাপিড এ্যাকশন ব্যাটালিয়ন র্যাব। বাহিনীটির পক্ষ থেকে মহেছেনাকে সম্পূর্ণ নতুন একটি ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। সাথে শীতবস্ত্র পেয়েছেন মহেছেনা। শনিবার ঘর নির্মান কাজ শেষ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন র্যাব-১৩, রংপুরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক (মিডিয়া) ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাহমুদ বশির আহমেদ।
মহেছেনার বাড়ি কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলার ধামশ্রেণি ইউনিয়নের সুরিরডারা গ্রামে। ওই গ্রামের ইমান আলীর স্ত্রী তিনি। তবে স্বামী ছেড়ে অন্যত্র চলে যাওয়ায় অসহায়ত্বের জীবন যাপন করছেন এই ষাটোর্ধ নারী। থাকার ঘর না থাকায় এই শীতে ছোট ছেলের গোয়াল ঘরে নাতি (বড় ছেলের সন্তান) সহ দিনানিপাত করতেন তিনি। র্যাব-১৩, রংপুরের সিনিয়র সহকারী পরিচালক মাহমুদ বশির আহমেদ বলেন, “ছেলের গোয়াল ঘরে বৃদ্ধা মায়ের বসবাস’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশের পর তা আমাদের অধিনায়ক কমান্ডার রেজা আহমেদ ফেদৌসের নজরে আসে। পরে তিনি বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিতে ভুক্তভোগীর বাড়িতে লোক পাঠান। সবকিছু জানার পর বাহিনীর পক্ষ থেকে ওই নারীকে সম্পূর্ণ নতুন একটি ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। আশা করছি তাঁর কষ্ট অনেকটাই লাঘব হবে।” মহেছেনার বাড়িতে ঘর নির্মাণে সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে ছিলেন র্যাব-১৩ এর ডিডি মজুন শেখ। তিনি বলেন, র্যাবের পক্ষ থেকে মহেছেনাকে একটি ২২ ফুট দৈর্ঘ্য ও ১২ ফুট প্রস্থের সম্পূর্ণ নতুন ঘর তৈরি করে দেওয়া হয়েছে। মাত্র দুই দিনে সিমেন্টের খুঁটি ও টিন দিয়ে এই ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। আমরা তাঁকে শীতবস্ত্র হিসেবে দুটি কম্বলও দিয়েছি। ঘর আর কম্বল পেয়ে অত্যন্ত খুশি হয়েছেন বৃদ্ধা মহেছেনা। গোয়াল ঘর থেকে সম্পূর্ণ নতুন টিনের ঘর পেয়ে র্যাবের প্রতি কৃতজ্ঞা প্রকাশের পাশাপাশি র্যাব বাহিনীর জন্য দোয়া করেছেন মহেছেনা। তিনি জানান, এত দ্রুত সময়ে তাঁর ভাগ্যে নতুন ঘর জুটবে তা তিনি স্বপ্নেও কখনো কল্পনা করতে পারেননি। র্যাবের জন্য প্রাণ ভরে দোয়া থাকবে তাঁর। মহেছেনা বলেন, মুই খুব খুশি বাবা। র্যাব মোর কষ্ট দূর করিদিছে। এই শীতত নাতিক নিয়া একনা আরামে থাইকপার পাইম। আল্লাহ তোমার সবার গুলার ভাল করুক। মহেছেনার জন্য ঘর তৈরির অর্থ সংগ্রহের উদ্যোগ নিয়েছিলেন স্থানীয় বাসিন্দা ও সংগঠক মারুফ আহমেদ। তিনি র্যাবের এমন উদ্যোগের ভূয়সী প্রশংসা করে বলেন, র্যাবের এটা অসাধারণ একটি উদ্যোগ। কোনও অসহায়ের পাশে এভাবে দাঁড়ানোটা নিঃসন্দেহে মানবিকতার দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ। ওই নারীর দীর্ঘ দিনের কষ্ট মাত্র দুই দিনে দূর হলো। র্যাবের জন্য শুভ কামনা। মহেছেনা ও নাতির জন্য বিভিন্ন সুহৃদের দেওয়া অর্থ দিয়ে তাদের (মহেছেনা ও তার নাতির) অন্যান্য প্রয়োজন মেটানো হবে বলেও জানান মারুফ আহমেদ।