
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২৪ জুন, ২০২৫, 1:18 PM
অবশেষে যুদ্ধবিরতি নিয়ে মুখ খুললেন নেতানিয়াহু
ইরান ও ইসরায়েলর মধ্যে ভয়াবহ সংঘাতের মধ্যে গত ২১ জুন ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে সোমবার রাতে কাতার ও ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় তেহরান। এর কয়েক ঘণ্টা পরেই মার্কিন প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, ইসরায়েল ও ইরান একটি ‘সম্পূর্ণ ও সর্বাত্মক’ যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হয়েছে। তবে, ট্রাম্পের এমন দাবি নাকচ করে দেয় ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। তখনও ইসরায়েলের পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য আসেনি। এরপর বাংলাদেশ সময় মঙ্গলবার (২৪ জুন) দুপুর ১২ টায় মার্কিন প্রেসিডেন্ট ও ইরানি-ইসরায়েলি গণমাধ্যমগুলো জানায়, দুই দেশের মধ্যে যুদ্ধবিরতি শুরু হয়েছে। এর কিছুক্ষণ পরেই যুদ্ধবিরতি চুক্তি সম্পর্কে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি দেয় ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়। এতে বলা হয়, ট্রাম্পের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে নেতানিয়াহু সম্মত হয়েছেন। একইসঙ্গে যেকোনো যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘনের ক্ষেত্রে ইসরায়েল কঠোর জবাব দেবে বলেও বিবৃতিতে হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়। এতে আরও বলা হয়, ইরানে প্রায় দুই সপ্তাহের হামলার পর ইসরায়েল তার সমস্ত লক্ষ্য অর্জন করেছে। ইসরায়েল একটি তাৎক্ষণিক এবং দ্বৈত অস্তিত্বগত হুমকি দূর করেছে- পারমাণবিক এবং ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র উভয় ক্ষেত্রেই। ‘এ ছাড়া আইডিএফ তেহরানের আকাশের ওপর পূর্ণ আকাশ নিয়ন্ত্রণ অর্জন করেছে, ইরানের সামরিক নেতৃত্বের ওপর তীব্র আঘাত হেনেছে এবং ইরানে সরকারের কয়েক ডজন গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তু ধ্বংস করেছে।’ বিবৃতিতে ইরানের পারমাণবিক হুমকি দূরীকরণে সামরিক সহায়তার জন্য ট্রাম্প এবং আমেরিকাকে ধন্যবাদ জানিয়েছে ইসরায়েল।
উল্লেখ্য, কোনোপ্রকার উসকানি ছাড়াই গত ১৩ জুন দিনগত রাত হঠাৎ ইরানে হামলা শুরু করে ইসরায়েল। ‘অপারেশন রাইজিং লায়ন’ নামের এই অভিযানে রাজধানী তেহরানসহ ইরানের বিভিন্ন সামরিক স্থাপনা, পরমাণু গবেষণা কেন্দ্র ও আবাসিক স্থাপনায় হামলা চালায় ইহুদিবাদী সেনারা। হামলায় ইরানের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান মোহাম্মদ বাঘেরি, দেশটির ইসলামি বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) প্রধান কমান্ডার হোসেইন সালামি, খাতাম আল-আনবিয়া সদরদপ্তরের কমান্ডার ও বিপ্লবী রক্ষীবাহিনীর জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা মেজর জেনারেল গোলাম আলি রশিদ ও দশজন পরমাণু বিজ্ঞানীসহ ৫০০ এর বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। ইসরায়েলের হামলার পর পাল্টা প্রতিশোধ হিসেবে ‘অপারেশন ট্রু প্রমিস-৩ নামে’ অভিযান শুরু করে ইরান। তেহরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্র ইসরায়েলের উন্নত আকাশ প্রতিরক্ষাব্যবস্থাকে ভেদ করে গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানছে। এতে হতাহত কম হলেও ইসরায়েলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে চলমান সংঘাতের মধ্যে গত ২১ জুন দিনগত রাতে ইরানের ফোরদো, নাতাঞ্জ ও ইস্পাহান পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা চালায় যুক্তরাষ্ট্র। জবাবে সোমবার রাতে কাতার ও ইরাকের মার্কিন ঘাঁটিতে হামলা চালায় তেহরান।