ঢাকা ০৮ জুলাই, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
সুনামগঞ্জ ১ আসনে বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশি আসাদ মুরাদ তালুকদার সাংবাদিক এস কে কামরুল হাসানের নামে মামলা সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ ডিজিএফআইয়ের সাবেক ডিজির ৪০ কোটি টাকার ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ ‘এনবিআর কর্মকর্তাদের ভয়ের কিছু নেই, সীমা লঙ্ঘনকারীদের ভিন্নভাবে দেখা হবে’ টাঙ্গাইলের বাস-সিএনজি সংঘর্ষ, নিহত ৩ নবীজীর প্রেমে নিবেদিত নতুন নাশিদ ‘ওয়া রাফানা লাকা জিকরাক’ প্রকাশিত চালের দাম নিয়ে যা বললেন খাদ্য উপদেষ্টা জাতীয় নির্বাচন পেছানো নয়, সুষ্ঠু পরিবেশ চায় জামায়াত: গোলাম পরওয়ার চাকরিচ্যুত বিডিআর সদস্যদের বিক্ষোভে পুলিশের সাউন্ড গ্রেনেড ও জলকামান গণহত্যার মামলা: হাসিনা-কামাল-মামুনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের আদেশ ১০ জুলাই

হারিয়ে যাচ্ছে মাছ ধরার চাঁই

#

নিজস্ব প্রতিনিধি

১২ নভেম্বর, ২০২২,  3:46 PM

news image

বর্ষার বৃষ্টিতে বদ্বীপ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলার বেশির ভাগ অঞ্চল জলপ¬াবিত হয়ে যায় । আবার শরত শেষে শীতের আগমনী সময়ে প¬াবিত খাল-বিল, নদ-নদী,পুকুর-জলাশয়গুলো শুকাতে শুরু করে। আর তখন সেই পানি কমে যাওয়া খাল বিলগুলোতে মাছ-ভাতের বাঙালিরা মেতে উঠে মাছ শিকারে। মাছ শিকারের উপকরণ হিসেবে এদেশে হাজার বছর ধরে হরেক রকমের জাল,পলো, টেঁডা, বড়শা, বড়শি, ফালা, ফাঁদসহ নানান কৌশল ব্যবহৃত হয়ে আসছে। তবে এসব উপকরণের সাথে লোকজ বাঙ্গালি জীবনে মাছ ধরার ‘চাই’  এখনো জনপ্রিয়। এটি বাঁশের তৈরি মাছ ধরার এক ধরণের ফাঁদ। আর এই ‘চাই’য়ের জন্য বিখ্যাত চট্টগ্রাম। চট্টগ্রামের তৈরি ‘চাই’ও বেশ জনপ্রিয় এবং শৈল্পিক। তবে বর্তমান সময়ে এই ঐতিহ্যগত উপকরণটি চট্টগ্রামের হাতে গোণা কয়েকটি জায়গায় তৈরি হয় মাত্র ।

কালের বিবর্তনে ঘর গেরস্তের মাছ শিকার ও উপার্জনের এই বস্তুটি বলা যায় জাদুঘরে চলে যাচ্ছে। অবশ্য কুমিল্লা গ চাই’ এর জন্য প্রসিদ্ধ। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের বাঁশখালী, হাটহাজারী, চন্দনাইশ,পটিয়া, রাঙ্গুগুনিয়া,লোহাগাড়া, সাতকানিয়া, বোয়ালখালী, কক্সবাজারের চকরিয়া, পেকুয়া, মহেশখালী অঞ্চলে এখনো তৈরি করা হয় মাছ ধরার ‘চাই’। এসব অঞ্চলের কৃষি ও মৎসজীবীদের অনেকেই বংশ পরম্পরার এই সংস্কৃতি ধরে রেখেছেন। মৌসুমে সংশি¬ষ্ট অঞ্চলের হাট-বাজারে বিক্রি করা হয় ‘চাই’। চন্দনাইশ ধামাইর হাটে ‘চাই’ বিক্রি করতে আসা ষাটোর্ধ মাঈনুদ্দিন আলী বলেন, আমার বাড়ি সাতবাড়িয়া। সংসারের অন্য কাজ কর্মের ফাঁকে অবসরে আমি বাঁশের কাজ করি। লাই,ভাইর,পল, ফেউন্যা, কুলা,চালইন, চাই, ডুলাসহ নানা জিনিসপত্র আমি বানাতে পারি। চাই’য়ের মধ্যে কয়েক ধরণের স্টাইল আছে। কোনটার নাম আনতা,কোনটার নাম চাই আবার কোনটার নাম ঘরচাই (এটা দেখতে ঘরের কামড়ার মত চতুস্কোণ আকার)। একটা চাই বানাতে সপ্তাহ খানেক লাগে। তবে সময় দিলে তিনচারদিনের মধ্যেও বানানো যায়। মাছের সাইজ ছোট মাঝারি বা বড় বিবেচনা করে একেক স্টাইলের চাই বানানো হয়। একটা চাইয়ের দাম ২০০ টাকা/৪০০ টাকার মধ্যে। বাঁশের দাম বেশি। এখন আগের মত চাই কেনার লোক নেই। এখন বেশির ভাগ মানুষ কেনা মাছ খায়। এই হাটে হয়ত চাই বা লাই ভাইর কিনতে এসেছেন হাতে গোণা দুয়েকজন। তবে কুমিল¬ার বিভিন্ন অঞ্চলে এখনো ‘চাই’ তৈরি হয় এবং কুমিল¬া থেকে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হয়। সারাদেশে কুমিল¬ার চাই’য়ের সুনাম বহুকাল আগের। কুমিল¬া জেলার অন্তত ২৫টি হাট-বাজরে বিক্রি হচ্ছে মাছ ধরার ফাঁদ চাই। জেলার চান্দিনা, তিতাস, মুরাদনগর, মেঘনা উপজেলার হাটসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলেও বসে চাইয়ের হাট। সপ্তাহে দুইদিন করে হাট বসে। তাছাড়া দেশের সিলেট,ঝালকাঠি,নওগাঁ,বগুড়া,ফরিদপুরসহ অনেক জেলাতেও মাছ ধরার চাই তৈরি ও বিক্রি হয় বলে জানা গেছে। জানা গেছে, বর্ষার শেষ সময় থেকে চাইসহ মাছ ধরার বিভিন্ন উপকরণ বিক্রির মৌসুম শুরু হয়। কারণ পানি কমার সঙ্গে-সঙ্গে নিম্নাঞ্চল থেকে পানি নামতে শুরু করে। ওই সময় চাই গুলো পানি প্রবাহের মুখ- যেমন জমির আল, খানা-খন্দের পাড় কেটে তৈরি করা পানির রাস্তায় বিশেষ কাদায় পুঁতে রাখতে হয়। তখন পুঁতে রাখা চাইয়ে ছোট,মাঝারি বিভিন্ন আকারের মাছ আটকে যায়। ৩ ঘন্টা থেকে ৫ ঘন্টা পর চাই পর্যবেক্ষণ করতে হয়।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম