ঢাকা ২২ জুন, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
গলে ড্র দিয়ে টেস্টের নতুন চক্র শুরু করল বাংলাদেশ নোয়াখালী মানব কল্যাণ পরিষদ, ইন ফ্রান্স-এর ঈদ পুনর্মিলনী ও সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা ২০২৫ একদিনে সর্বোচ্চ ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১ ইরানে হামলায় এ পর্যন্ত নিহত ৪৩০ : স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় ময়মনসিংহে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ১১ জনের পরিচয় মিলেছে অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা ঢাকা মেডিকেল কলেজ পাঁচদিন টানা বৃষ্টির আভাস মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে পিছিয়ে পড়ছে দেশ: উপদেষ্টা সাখাওয়াত আ. লীগকে নিষিদ্ধ করিনি, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা সিদ্ধান্ত ইসির: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা ছাগলনাইয়ায় সেফটিক ট্যাংক থেকে দুই শিশুর লাশ উদ্ধার

হঠাৎ লবণের দরপতন, চাষিরা হতাশ

#

নিজস্ব প্রতিনিধি

২৪ মার্চ, ২০২২,  11:59 AM

news image

লবণের হঠাৎ দরপতন ঘটেছে। এতে প্রান্তিক চাষিরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। মার্চের শুরুতে মাঠে লবণ বিক্রি হয়েছে কেজিতে ৮ টাকার বেশি। কিন্তু হঠাৎ করে তা ৪ টাকায় নেমে এসেছে। এসব খোলা লবণ প্রক্রিয়াজাত করে বিভিন্ন ব্র্যান্ডের নামে প্যাকেটে কেজি ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  ফলে মাঠে ও মিলগেটে প্রতি মণে প্রায় ২০০ টাকা কমে গেছে। এতে হতাশ হয়ে পড়েছেন চাষিরা। বিসিক জানায়, গত সোমবার পর্যন্ত দেশে ১০ লাখ ২১ হাজার ৮৫২ টন লবণ উৎপাদিত হয়েছে। আগামী মে মাস পর্যন্ত কক্সবাজার ও বাঁশখালীর সমুদ্র উপকূলীয় এলাকায় লবণ উৎপাদিত হবে। লবণের হঠাৎ দরপতন নিয়ে নানা অভিযোগ শোনা যাচ্ছে। বাজার-সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, দেশে ব্যাপক হারে সোডিয়াম সালফেট আমদানি হয়েছে। এগুলো এখন খাওয়ার লবণ হিসেবে বাজারে বিক্রি হচ্ছে। আবার লবণ আমদানির খবরে দাম কমে গেছে—এ ধরনের কথাও শোনা যাচ্ছে।

বাংলাদেশ লবণচাষি কল্যাণ পরিষদের সেক্রেটারি কায়সার ইদ্রিস বলেন, দেশের লবণ নিয়ে নানামুখী খেলা চলছে। দেশে প্যাকেটজাত করে লবণ বাজারজাত করে, এমন পাঁচ-ছয়টি বড় কোম্পানি রয়েছে। তারাই দেশের লবণের বাজার নিয়ন্ত্রণ করে। কেজি চার-পাঁচ টাকায় খোলা লবণ কিনে প্যাকেটজাত করে ৩৫ টাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এসব মিল মালিক প্রচুর লবণ মজুত করে ফেলেছেন। বিসিক কক্সবাজার কার্যালয়ের ডিজিএম জাফর ইকবাল ভুঁইয়া বলেন, লবণ উৎপাদন বাড়ায় সরবরাহও বেড়েছে। প্রান্তিক চাষিরা প্রতি মণ লবণের দাম ২১০ টাকার বেশি পাচ্ছেন না। হঠাত দাম কমে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে নানা ধরনের কথা হচ্ছে। বাজারে প্রচুর সোডিয়াম সালফেট ঢুকে পড়েছে বলে শোনা যাচ্ছে। ইসলামপুর (কক্সবাজার) লবণ মিল মালিক সমিতির সভাপতি শামসুল আলম আজাদ বলেন, মিলগেটে এখনো প্রতি মণ লবণ ৩০০ টাকায় কেনা হচ্ছে। কিন্তু মাঠে প্রান্তিকচাষি পর্যায়ে লবণ বেচাকেনায় মধ্যস্বত্বভোগীরা কারসাজি করছে। এর ফলে চাষিরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। কিছু মিল মালিক প্রতি বছর লবণ আমদানির চেষ্টায় লিপ্ত থাকেন। এতে দেশের লবণের বাজারে বিরূপ প্রভাব পড়ছে। বিসিক জানায়, এ বছর ২২ লাখ ১৭ হাজার মেট্রিক টন লবণ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এই পর্যন্ত ১০ লাখ ২১ হাজার ৮৫২ মেট্রিক টন লবণ উৎপাদিত হয়েছে। বিসিকের হিসাবমতে, ২৭ হাজার ৬৯৭ জন লবণচাষি রয়েছে। কক্সবাজার জেলার টেকনাফ, কক্সবাজার সদর, মহেশখালী, কুতুবদিয়া, চকরিয়া, পেকুয়া ও বাঁশখালী উপজেলার উপকূলীয় এলাকায় লবণ উৎপাদিত হয়ে থাকে। সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, লবণের দরপতনের পেছনে মধ্যস্বত্বভোগীদের কারসাজি রয়েছে। মাঠ থেকে চাষিদের লবণ মিলগেইটে পৌঁছা পর্যন্ত দরে ও ওজনের কারসাজির মাধ্যমে প্রচুর অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে তারা। মাঝখানে প্রান্তিকচাষিরা উৎপাদিত লবণের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। কক্সবাজার জেলায় মাঠপর্যায়ে লবণ বেচাকেনায় ৩০ থেকে ৪০ জন মধ্যস্বত্বভোগী সক্রিয় রয়েছে। নারায়গঞ্জসহ দেশের কয়েকটি বৃহত মিল মালিকের সঙ্গে তাদের যোগসাজস রয়েছে। এদের কারণে লবণশিল্প ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অনেক চাষি পেশা পরিবর্তন করে চলে গেছেন। এভাবে চলতে থাকলে এক পর্যায়ে লবণের বাজার আমদানিনির্ভর হয়ে পড়বে। এবার লবণের ভালো দর পেয়েছিলেন চাষিরা। মৌসুমের শুরুতে মাঠে এবার কেজিপ্রতি ৮ টাকার বেশি দরে বিক্রি হয়েছিল লবণ। এতে চাষিদের লবণ চাষে ব্যাপক আগ্রহ সৃষ্টি হয়। আবহাওয়াও মোটামুটি লবণ উৎপাদনের অনুকূলে রয়েছে। তাই পরিত্যক্ত জমিতেও লবণের চাষ হয়। এবার অন্তত ৪/৫ হাজার একর জমি নতুন করে লবণ চাষের আওতায় এসেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, মধ্যস্বত্বভোগীরা মাঠে চাষিদের কাছ থেকে মণ হিসাবে লবণ কিনে থাকেন। প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি লবণ কিনে মিলে ৪০/৪২ কেজি পরিমাণে বিক্রি করা হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, মার্চের শুরুতে মাঠে প্রতি মণ লবণ ৩০০ থেকে ৩১০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর মিলগেটে মিল মালিক প্রতি মণ লবণ ৪০০ টাকা দরে কিনেছেন। কিন্তু গত কিছু দিন ধরে মাঠে প্রতি মণ লবণ ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় নেমে এসেছে। আর মিলগেটে বিক্রি হচ্ছে মণ ৩০০ টাকায়। সূত্র: ইত্তেফাক

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম