ঢাকা ১৯ জুন, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
জাতীয় ট্যালেন্ট হান্ট ক্রিকেটে সাপাহারের ২ শিক্ষার্থী স্বর্ণের দামে বড় পতনের পূর্বাভাস আগামীকাল সচিবালয়ে বিক্ষোভের ঘোষণা ১১ মাসে রাজস্ব আদায় ৩ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা: এনবিআর দেশে ফিরেছেন ২৯ হাজার ৭৩ হাজি ঈদযাত্রার ১২ দিনে সড়কে ঝরল ৩১২ প্রাণ নির্বাচন নিয়ে সরকারের প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়ন চান রিজভী জনসংযোগ-নিরাপত্তার মিশ্রণে দায়িত্ব পালনে এসএসএফের সদস্যদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান সন্ধ্যায় হাসপাতালে যাবেন খালেদা জিয়া বন্দর নবীগঞ্জে পাষণ্ড স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন

সীতাকুণ্ড ডিপোর বিস্ফোরণ ঘটনার তদন্তে ‘নিরপেক্ষ কমিশন’ চান মির্জা ফখরুল

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

০৬ জুন, ২০২২,  3:36 PM

news image

সীতাকুণ্ড বিএম ডিপোর বিস্ফোরণ ঘটনার তদন্তে ‘নিরপেক্ষ কমিশন’ চান মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। সোমবার (৬ জুন) দুপুরে গুলশানে চেয়ারপার্সনের কার্যালয়ে সাংবাদিকদের কাছে এই দাবি জানান তিনি। তিনি বলেন, ‘‘আমি মনে করি যে, এই ঘটনার জন্য অবিলম্বে একটা নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠন করা উচিত। এর জন্য যারা দায়ী তাদের খুঁজে বের করা দরকার।” ‘‘ কি ভয়াবহ? মানুষের বডি খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, ছিন্ন-বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে, একেবারে অগ্নিদগ্ধ হয়ে গেছে চিনা যাচ্ছে না। হঠাৎ করে যে বিস্ফোরণ হবে-এটাও তারা বুঝতে পারেনি। যার ফলে এই ঘটনাগুলো ঘটেছে। নিহতদের পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ দেয়া এবং আহতদের সঠিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করার দাবি জানাচ্ছি।”

একই সঙ্গে এই ঘটনায় হতাহতদের পর্যাপ্ত ক্ষতিপূরণ এবং দেশের সকল কনটেইনার ডিপোতে ‘তদারকি ব্যবস্থা’র চালু করার দাবিও জানান বিএনপি মহাসচিব। কেমন তদন্ত কমিশন চান জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আমি কিন্তু এখন পর্যন্ত অতীতের কোনও ঘটনার তদন্ত প্রতিবেদন দেখিনি। আমরা যখন নিরপেক্ষ কথাটা বলি, এটা মিন করি যে, দল নিরপেক্ষ এবং সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক নাই যারা এক্সপার্টস আছেন, যারা বিশেষজ্ঞ আছেন, সত্যিকার অর্থে বিষয়গুলো যারা বুঝেন তাদেরকে দিয়ে তদন্ত করা।” শনিবার রাত ৯টার দিকে সীতাকুণ্ড উপজেলার সোনাইছড়ি ইউনিয়নের কেশবপুর গ্রামে বেসরকারি ওই কন্টেইনার ডিপোতে আগুন লাগে। এই ঘটনায় গতকাল পর্যন্ত ৪৯ জনের মৃত্যু এবং দুই শতাধিক মানুষ আহত হওয়ার খবর জানিয়েছে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসন। ‘এই সরকার কি করছে?’ সীতাকুণ্ডে ঘটনার প্রসঙ্গে টেনে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর আরও বলেন, ‘‘ গতকাল একজন আর্মির দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারের কথা টেলিভিশনে শুনছিলাম- তিনি বলছিলেন যে, তাদের কাছে প্রয়োজনীয় উপকরণ নেই। আজকে আমি এই জায়গায় প্রশ্ন করতে চাই- এই সরকার তাহলে কি করছে?” ‘‘আমি যে কথাটা বলছি যে, তথাকথিত অবকাঠামো নির্মাণের নামে নিজেদের পকেট ভারী করা, দুর্নীতির করা-এটাই তাদের মূল লক্ষ্য। জনগণের কল্যাণের জন্য, জনগণের সেফটি-সিকিউরিটির জন্য, মানুষকে ভালো রাখার জন্য এই সরকারের কোনও দায়বদ্ধতা নেই। এই সরকার যেহেতু নির্বাচিত সরকার না সেই কারণে তাদের জবাবদিহিতা নেই।” সীতাকুণ্ডের বিস্ফারণে দেশের পোষাকশিল্পে অথবা অর্থনীতিতে কোনো প্রভাব পড়বে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘অবশ্যই নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। অলরেডি এই নিয়ে কথা-বার্তা শুরু হয়েছে। কারণ যেসব ঘটনা ইতিমধ্যে তাজনীন ফ্যাক্টরি বা অন্যান্য ফ্যাক্টরিগুলো এবং রানা প্লাজার ঘটনার ব্যাপারে গার্মেন্টস যেভাবে একটা নেগেটিভ অবস্থায় এসেছিলো। এটা পরবর্তীকালে যারা বায়ারস ছিলও বা বিদেশীরা বাংলাদেশের সঙ্গে কেনাকাটা করে তাদের সহযোগিতায় আমাদের গার্মেন্টস প্রডিউসার ও মালিকদের আগ্রহের কারণে সেই ব্যাপারটা অনেকটা কাটিয়ে এসেছে।” ‘‘কিন্তু নিরাপত্তার ব্যাপারটা এখন পর্যন্ত সেইভাবে আসেনি। এই ধরনের অগ্নিকাণ্ডগুলো ঘটছে সেইগুলো নিয়ন্ত্রণ করার মতো প্রয়োজনীয় যে লোকবল, প্রয়োজনীয় যেসব উপকরণ সেসব নাই।” মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘আওয়ামী লীগ এখন শোষকের দলের পরিণত হয়েছে। এখন আর শোষিতের পক্ষে কথা বলার তাদের সুযোগ নেই। কারণ তারাই এখন শোষক হয়ে গেছে শোষণ করছে বাংলাদেশকে। এখন তারা লুট করছে, দুর্নীতি করছে, অর্থ পাচার করছে। মানুষের সমস্ত আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলোকে ধ্বংস করে দিচ্ছে। এখন তো আপনার বাংলাদেশের সামনে আর কিচ্ছুই নেই, পদ্মা সেতু ছাড়া আর বলে কিছুই নেই।” ‘‘অথচ এরমধ্যে এই ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটলো, মর্মান্তিক দুর্ঘটনা ঘটলো সম্পূর্ণভাবে তাদের ব্যর্থতার জন্য। আমি পত্রিকায় দেখলাম যে, প্রধানমন্ত্রী একটু সাহস দেয়ার চেষ্টা করেছেন যে, পদ্মা ব্রিজে নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। তাতে তো এই সমস্যার(সীতাকুণ্ড বিস্ফারণ) সমাধান হয় না।” মির্জা ফখরুল বলেন, ‘‘এই ঘটনার পর জাতীয় শোক ঘোষণা করা উচিত ছিলও। অন্যান্য যেকোনো সভ্য দেশ হলে তাই করতো। আমেরিকাতে যে বাচ্চাগুলো মেরে ফেললো তখনই আমেরিকা জাতীয় শোক ঘোষণা করেছে।” ‘‘আপনি দেখেন, আসলে এই সরকারের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। ওরা জনগণের প্লাস বুঝে না, জনগণ কি চাচ্ছে, কি আশা করছে- সেগুলো নিয়ে তাদের মাথা ব্যথা নেই। তারা মনে করে আমরা বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় টিকে আছি, বন্দুকের জোরে ক্ষমতায় থাকবে। সেই কারণে দুঃসময়ে মানুষ যখন একটু সান্ত্বনা আশা করে তখন তারা জনগণের ওপর আরেকটা চাপিয়ে দেয়। তাদের একটাই লক্ষ্য এদেশকে লুট করা।”

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম