
নিজস্ব প্রতিনিধি
১৭ জুলাই, ২০২২, 10:38 AM

সাতক্ষীরার শ্যামনগরে বেড়িবাঁধ ভেঙে হু হু করে ঢুকছে পানি
সাতক্ষীরার শ্যামনগরের উপকূলরক্ষা বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত অঞ্চলে মানবেতর জীবনযাপন কাটছে এলাকাবাসীর। কোনোভাবেই আটকানো যাচ্ছে না জোয়ারের পানির প্রবাহ। রোববার (১৭ জুলাই) সকালে ভাঙা বাঁধ দিয়ে হু হু করে ঢুকতে দেখা গেছে। খোলপেটুয়া নদীর নোনাপানি। লাখ লাখ টাকার চিংড়ি ভেসে যাওয়ায় দিশেহারা চাষিরা। তার ওপর বসতবাড়িতে কোমরপানি। চাল আছে রান্নার ব্যবস্থা নেই। ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। দেখা দিয়েছে সুপেয় খাবার পানির সংকট। গত বৃহস্পতিবার মধ্যরাতে সাতক্ষীরার সুন্দরবনসংলগ্ন শ্যামনগর উপজেলার বুড়িগোয়ালিনীতে ইউনিয়নের পশ্চিম দূর্গাবাটির ২০০ ফুট এলাকাজুড়ে উপকূলরক্ষা বেড়িবাঁধ ভেঙে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।
এ দিকে ভাঙনকবলিত প্লাবিত এলাকায় চলছে দিশাহারা মানুষের ক্রন্দন, তারা ত্রাণ চান না; চান একটি টেকসই ভেড়িবাঁধ। জানা গেছে, গত দুদিনে বাঁধ মেরামত সম্ভব না হওয়ায় ভেসে গেছে শত শত ঘেরের লাখ লাখ টাকার চিংড়ি। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে ১১টি গ্রামের প্রায় তিন হাজার পরিবার। রান্নার কোনো উপায় নেই, ভেঙে পড়েছে স্যানিটেশন ব্যবস্থা। প্রবল জোয়ারের তোড়ে বাঁধের ভাঙন ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হয়নি উল্লেখ করে বুড়িগোয়ালিনী ইউপি চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম জানালেন, তিন হাজার পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। প্রায় সব চিংড়িচাষি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তাদের জীবন স্থবির হয়ে পড়েছে উল্লেখ করে ওই জনপ্রতিনিধি। ভাঙনের হাত থেকে রেহাই পেতে টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন সরকারের কাছে। অপর পাশে চর জেগে ওঠায় নদীর গতিপথ পরিবর্তনকে ভাঙনের প্রধান কারণ উল্লেখ করে সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী জাকির হোসেন জানান, উচ্চ জোয়ারে বাঁশ ও বস্তা দিয়ে ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হচ্ছে না। তবে পানির স্রোত কমলে যাতে বাঁধ মেরামত করা যায়, তার সব প্রস্তুতি রাখা হয়েছে। গত ১৪ জুলাই বিকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চেষ্টা করেও বাঁধ রক্ষা হয়নি উল্লেখ করে উপজেলা চেয়ারম্যান আতাউল হক দোলন জানান, প্লাবিত এলাকার মানুষ দুর্বিষহ জীবন কাটাচ্ছেন। যদিও জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ১০০ প্যাকেট শুকনো খাবার দেয়া হয়েছে। জিআর চাল বরাদ্দ হয়েছে। জোয়ারের পানির তোড় কমলে শিগগিরই পানি উন্নয়ন বোর্ডকে সঙ্গে নিয়ে বাঁধ মেরামত করা হবে।