
নিজস্ব প্রতিনিধি
২১ মে, ২০২৫, 10:54 AM

রাজশাহীতে চাহিদার চেয়ে কোরবানির পশু বেশি, যাবে বিভিন্ন জেলায়
ঈদুল আজহা সামনে রেখে রাজশাহী বিভাগের আটটি জেলায় প্রস্তুত করা হয়েছে ৪৩ লাখ কোরবানির পশু। এরমধ্যে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ১৭ লাখ পশু যাবে রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। ঈদ ঘনিয়ে আসায় পশুর বাড়তি যত্ন নিচ্ছেন এ অঞ্চলের খামারিরা। স্থানীয় হাটে পশু বেচাকেনা হচ্ছে। তবে সপ্তাহ খানেক পর পশুর জমজমাট বেচাকেনা হবে বলে জানান ক্রেতা, বিক্রেতা ও হাট ইজারাদাররা। রাজশাহীর পবা উপজেলার হরিপুর এলাকার নাদিরা বেগম। ৮ মাস আগে ৬৫ হাজার টাকায় একটি গরু কেনেন। ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে গরুটি লালন পালন করে এখন বিক্রির উদ্দেশে হাটে তুলতে চান। তিনি বলেন, এক লাখ ৩০ হাজার টাকায় গরুটি বিক্রি করতে চাই। সেজন্য বাড়তি যত্নের পাশাপাশি গরুটিকে দিচ্ছি বাড়তি খাবারও। শুধু নাদিরা বেগমই নন, রাজশাহী অঞ্চলের প্রায় বাড়িতে একটি দুটি করে দেশি গরু, খাসি মহিষ লালন পালন করছেন খামারিরা। তবে বড় বড় খামারগুলোতে শাহীওয়াল, সিন্ধি, রেট চিটাগাং, পাবনা ব্রিড ও মীর কাদিমসহ নানা জাতের গরু কোরবানিতে বিক্রির উদ্দেশ্যে হৃষ্টপুষ্ট করা হচ্ছে। একই চিত্র নওগাঁ, সিরাজগঞ্জ, বগুড়াসহ বিভাগের সবকটি জেলায়। খামারিরা বলছেন, কোনো ধরনের ক্ষতিকর ইনজেকশন ও ভিটামিন ওষুধ ছাড়া শুধু ঘাস, ভুট্টা, ফিড এবং দানাদার খাবার খাইয়ে পশুগুলোকে লালন পালন করা হচ্ছে। কোরবানির জন্য পশুগুলোকে প্রস্তুত করতে যত্নের কোনো কমতি রাখা হচ্ছে না। এদিকে, রাজশাহীতে এরই মধ্যে কোরবানির পশুর হাট বসতে শুরু করেছে। উত্তরবঙ্গের মধ্যে সবচেয়ে বড় কোরবানির পশুর সিটি হাটসহ বিভাগের আটটি জেলার হাট ও খামার থেকে বেপারিরা কোরবানির পশু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন রাজধানী ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। আর সপ্তাহ খানেক পর থেকে শুরু হবে কোরবানির পশুর জমজমাট বেচাকেনা। খামারিরা জানান, যত্নে লালনপালন করলেও হাটে কোরবানির পশুর দাম মিলছে না। তবে বেপারিরা বলছেন ভিন্ন কথা। তাদের দাবি, পশুর দাম বেশ চড়া। প্রতিটি পশু কিনতে হচ্ছে বাড়তি দামে। কোরবানির পশুর বেচাকেনা নির্বিঘ্ন করতে হাটে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়েছেন হাট ইজারাদাররা। তারা বলেন, হাটে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য রয়েছেন। তারা নিয়মিত টহল দিচ্ছেন। বিভাগের সবকটি জেলায় ২৬ লাখ কোরবানির পশুর চাহিদা থাকলেও ৪৩ লাখ কোরবানির পশু লালন করা হয়েছে। যা এই অঞ্চলের চাহিদা মিটিয়ে প্রায় ১৭ লাখ উদ্বৃত্ত পশু দেশের নানা প্রান্তে যাবে বলে জানান প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের কর্মকর্তারা। রাজশাহীর বিভাগীয় প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের পরিচালক ডা. অনন্দ কুমার অধিকারী বলেন, আশা করছি ভোক্তারা ন্যায্যমূল্যে গরু কিনতে পারবেন। পাশাপাশি খামারিরাও পশুর ভালো দাম পাবেন। সীমান্ত এলাকায় কড়া নজরদারি থাকায় প্রতিবেশী দেশ থেকে পশু না আসায় দেশি গরুর খামারিরা এবার ভালো দাম পাবেন এমন প্রত্যাশা প্রাণিসম্পদ বিভাগের।