
নিজস্ব প্রতিবেদক
০৭ মে, ২০২২, 11:11 AM

রাজধানীতে ফিরতে শুরু করেছেন মানুষ, আজও লঞ্চ-ফেরিতে উপচেপড়া ভিড়
একবার ওই ঘাটে ফেরি ভিড়ে তো আমরা ওই ঘাটে ছুটি, আবার এ ঘাটে ফেরি আসলে এ ঘাটে ছুটি। যারা ভেঙ্গে ভেঙ্গে এসেছে তারাও ব্যাগ কাপড়সহ অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে ফেরির জন্য এ ঘাট ও ঘাট ছোটাছুটি শুরু করেছে।’ খুলনা থেকে আসা যাত্রী সোহেল রানা বলেন, ‘ফেরি ঘাটে ভিড়তেই সাথে সাথে যাত্রী ও মোটরসাইকেলেই ফেরি পরিপূর্ণ হয়ে আছে। সেখানে অন্য গাড়ি পার করার সুযোগ নেই। মানুষের ভিড়ে পা ফেলারও জায়গাটুকু নেই। মানুষ যতটা আনন্দ নিয়ে ঈদ কাটাতে গিয়েছিল ঘাটে এসে সেই আনন্দের খেসারত দিয়ে যাচ্ছে।’ লঞ্চ ঘাটেও একই চিত্র। এই নৌরুটে চলাচলকারী ২০ টি লঞ্চের প্রতিটির ধারণ ক্ষমতা ১২৫ থেকে ১৭৫ জন; কিন্তু নেওয়া হচ্ছে তার দ্বিগুণ। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তারও বেশি। যদিও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে লঞ্চঘাটে ভ্রাম্যমাণ আদালত, রোভার স্কাউটস কাজ করছে। কিন্তু যাত্রীরা কেউ নির্দেশনা মানতে নারাজ। লঞ্চ ঘাটে ভিড়তে তারা হুড়োহুড়ি করে উঠে যাচ্ছেন। শিমুলিয়া-মাঝিরকান্দি নৌরুটে অচলাবস্থার কারণে ওই নৌরুটের অধিকাংশ যানবাহন এই নৌরুট দিয়ে পারাপার হচ্ছে। এতে করে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে অতিরিক্ত চাপ পড়ছে বলে সংশ্লিষ্টদের অভিমত। বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বানিজ্য) মো. শিহাব উদ্দিন বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে ২১ টি ফেরি চলাচল করছে। দুর্ভোগের কথা চিন্তা করে প্রাইভেটকার ও যাত্রীবাহীবাস অগ্রাধিকারভিত্তিতে পারাপার করা হচ্ছে। ঘাট এলাকায় সিরিয়াল হলেও খুব বেশি সময় আটকে থাকতে হচ্ছে না। রুটে পর্যাপ্ত ফেরি থাকায় কম সময়ের মধ্যেই যাত্রীবাহী যানবাহনগুলো পারাপার হতে পারছে। এদিকে পাটুরিয়া ও আরিচা ফেরিঘাট এলাকায় ঢাকাফেরত যাত্রীরা পড়েছেন আরেক দুর্ভোগে। তারা বলছেন, ঘাট এলাকায় যাত্রীবাহী বাসের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। অনেক যাত্রী বাস না পেয়ে ট্রাকে বা পিকআপে চড়ে ঢাকায় ফিরতে বাধ্য হচ্ছেন। আরিচা ও পাটুরিয়া ঘাটে এসে ঢাকায় যাওয়ার জন্য যানবাহন না পেয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ঘাটে বসে অপেক্ষা করছেন। অনেকে গাদাগাদি করে রিক্সা ও ভ্যানে চড়ে এক ষ্টেশন থেকে অন্য ষ্টেশনে যাচ্ছেন। চরম দুর্ভোগে পড়েছেন শিশু ও বৃদ্ধরা। পাবনার চরকল্যাণপুর থেকে আসা হাবিবুর রহমান, দেলোয়ারা বেগম, সিমা আক্তারের সঙ্গে কথা হয় শনিবার সকালে। তারা সবাই ঢাকার আইডিএস গার্মেন্টসের কর্মী। হাবিবুর রহমান বলেন, শনিবারই গার্মেন্টস খুলছে। তাই আজই তাদের কর্মস্থলে যোগ দিতে হত। আজ (শনিবার) সকাল ৯টার দিকে ইঞ্জিনচালিত ট্রলারে নদী পার হয়ে আরিচা ঘাটে আসেন তারা। ঘাট থেকে তিন কিলোমিটার পায়ে হেঁটে তারা উথলী বাস স্টেশন আসেন। সেখানে বাস না পেয়ে তারা জনপ্রতি ৩০০ টাকা ভাড়া দিয়ে ট্রাকে চড়ে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দেন। অনেক বাস চালক অভিযোগ করেন, বাস-মালিক সমিতির নামে ঘাট এলাকায় ৪০০-৫০০ টাকা চাঁদা দিতে হচ্ছে। শিবালয় বাস মালিক সমিতির সভাপতি আলাল উদ্দিন জানান, কেউ বাস চালকদের কাছ থেকে চাঁদা নিলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। শিবালয় থানার ওসি শাহিনুর রহমান জানান, বাসে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়ার ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করেনি। অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।