
NL24 News
০১ জানুয়ারি, ২০২৫, 4:37 PM
রাজউক পরিদর্শক পারভেজের জাল জালিয়াতির তেলেসমাতি
প্লটে ইমারত বিদ্যমান থাকার পরেও ভুয়া রিপোর্ট প্রদান করে হাতিয়ে নিলেন কয়েক লক্ষ টাকা
উজ্জল হোসেনঃ জাল জালিয়াতি এবং প্রতারনার আশ্রয় নিয়ে দুর্নীতি ও অনিয়মের সাথে জড়িয়ে পরেও বহাল তবিয়তে রয়ে গেছেন রাজউক জোন ১/১ এর শীর্ষ দুর্নীতিবাজ ইমারত পরিদর্শক মোহাম্মদ পারভেজ। তিনি রাজউক জোন ০৮/২ এর দায়িত্ব পালনকালে অনেক জায়গায় প্লটে বিদ্যমান ইমারতকে খালি দেখিয়ে ভুল, মিথ্যা এবং মনগড়া রিপোর্ট প্রদান করে দায়িত্ব পালনে অবহেলা করে সরকারি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান রাজউককে প্রশ্নবিদ্ধ করার পাশাপাশি কলঙ্কিত করেছেন। অনুসন্ধান বলছে, প্লটে ইমারত নির্মাণ করার পূর্বে ভবন মালিককে প্রথমে রাজউক থেকে ভূমি ব্যাবহারের জন্য ছাড়পত্র গ্রহন করতে হয়। ছাড়পত্র গ্রহন করার পরে ভবন মালিককে নির্মাণ কাজ শুরু করার পূর্বে রাজউক থেকে নির্মান/নকশা অনুমোদনের প্রয়োজন হয়।
আর এই নকশা অনুমোদনের ক্ষেত্রে রাজউকের কর্তব্যরত ইমারত পরিদর্শকের ছাড়পত্র অনুমোদন হওয়া প্লটে সরেজমিন পরিদর্শন পূর্বক অথরাইজড অফিসারের নিকট রিপোর্ট প্রদান করতে হয়। এই রিপোর্টের উপর নির্ভর করেই মূলত নকশা অনুমোদন হয়ে থাকে। কিন্তু দুর্নীতিবাজ ইমারত পরিদর্শক মোহাম্মদ পারভেজ সীমাহীন দুর্নীতি করে জাল জালিয়াতির মাধ্যমে তথ্য গোপন করে ভুল, মিথ্যা এবং মনগড়া রিপোর্ট প্রদান করে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের গোলক ধাঁধায় রেখে ভবন মালিকদের নিকট হতে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। অনুসন্ধানে জানা যায়, ইমারত পরিদর্শক মোহাম্মদ পারভেজ জোন ০৮/২ এর নারায়ণগঞ্জ-সিদ্দিরগঞ্জ-আটিসহ গুরুত্বর্পণ সকল সকল এলাকার দায়িত্বে থাকাকালীন নারায়নগঞ্জ সিটি কর্পোরেশনের ফতুল্লা থানার আওতাধীন ১১ নং ওয়ার্ডে মোঃ আতাউর রহমান সরকার গংয়ের একটি প্লটে ইমারত বিদ্যমান থাকার পরেও দুর্নীতিবাজ ইমারত পরিদর্শক মোহাম্মদ পারভেজ খালি দেখিয়ে রিপোর্ট প্রদান করে ঘুস হিসেবে ৫ লক্ষ হাতিয়ে নিয়েছেন।
এই ভবনের মালিক মোঃ আতাউর রহমান সরকার গং গত ১৭ ই জানুয়ারি ২০২৩ সালে ভূমি ব্যাবহারের ছাড়পত্রের জন্য আবেদন করেন যার জমির অবস্থান সি এস দাগ ৭৭, আর এস দাগ ১২৬, মৌজা- তাল্লা, থানা ফতুল্লা নারায়নগঞ্জ। পরবর্তীতে গত ১৪ ই ফেব্রুয়ারি ২০২৩ সালে এই প্লটের ছাড়পত্র অনুমোদন হয় যার অনুমোদনপত্র নম্বর ২৫.৩৯.০০০০.১৩৫.৩৫.০৪২.২৩। এই ভবনের নির্মাণ কাজের অনুমোদনের জন্য আবেদন করলে ইমারত পরিদর্শক পারভেজ সরেজমিন পরিদর্শনে যান তখন এই প্লটে ০৪ তলা ভবনের নির্মাণ চলমান থাকলেও প্লট ফাঁকা দেখিয়ে রিপোর্ট প্রদান করেন যা তার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালনে চরম অবহেলা, সরকারি চাকুরী বিধি-পরিপন্থী। ইমারত পরিদর্শক মোহাম্মদ পারভেজ বর্তমানে রাজউক জোন ১/১ এ কর্মরত থাকলেও সে অনিয়মিতভাবে অফিসের দায়িত্ব পালন করছেন এবং রাজউক দপ্তরকে তার নিজস্ব অফিসে পরিণত করেছেন ।
এ ছাড়াও সেবাগ্রহীতারা কল করে রাজউক কর্মকর্তাদের পান না– এমন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে কর্মকর্তাদের আবশ্যিকভাবে কল রিসিভ করার নির্দেশনা দিয়ে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) এর সভার সিদ্ধান্ত মোতাবেক কর্মকর্তাদেও, যাদের বরাদ্দ করা টিঅ্যান্ডটি এবং ফোন নম্বর আছে তাদের আবশ্যিকভাবে সেবাগ্রহীতাদের কল রিসিভ করতে হবে এবং সে অনুযায়ী সবাইকে নির্দেশনা প্রদান করা হলেও ইমারত পরিদর্শক মোহাম্মদ পারভেজ তার অফিসিয়াল মোবাইল নাম্বার সব সময় বন্ধ করে রাখেন। রাজউক প্রশাসনের এক কর্মকর্তার সাথে ইমারত পরিদর্শক মোহাম্মদ পারভেজ এর বিভিন্ন অনিয়ম, জাল জালিয়াতি এবং দায়িত্ব পালনে অবহেলার বিষয়ে কথা হলে তিনি জানান ইমারত পরিদর্শক মোহাম্মদ পারভেজ যদি এহেন অপকর্ম করেন তবে এটি অবশ্যই গুরুতর অপরাধ এবং কর্মচারী চাকুরী শৃঙ্খলা বিধির পরিপন্থি যা রাজউক কর্তৃপক্ষের কর্মচারী চাকুরী প্রবিধ মালা ১৯৯০ এর ৩৫ (ক) প্রবিধান অনুসারে দায়িত্ব পালনে অবহেলা এর শামিল ।
এমতাবস্থায় এ ধরনের দুর্নীতির পরি প্রেক্ষিতে তার বিরুদ্ধে সরকারি কর্মচারী চাকুরী প্রবিধ মালা ১৯৯০ এর মোতাবেক বিভাগীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে কঠোর শাস্তির মুখোমুখি করা উচিত। এদিকে জোন-০৮/২ এ ইমারত পরিদর্শক মোহাম্মদ পারভেজ নারায়ণগঞ্জ-সিদ্দিরগঞ্জ-আটিসহ গুরুত্বর্পণ সকল এলাকার দায়িত্বে থাকাকালীন ভবন মালিকের কাছ থেকে একচেটিয়াভাবে কামিয়েছেন লক্ষ লক্ষ টাকা। এলাকাবাসীর সাথে কথা বললে তারা জানান, তার কাছে এই এলাকাবাসীর ভবন মালিকরা জিম্মি ছিলেন, তার ইসারা ছাড়া কোন ভবনের ব্যত্যয় করে র্নিমার্ণ সম্ভব ছিল না। তাকে বিল্ডিং মালিকদের ট্যাক্স দিয়া চলিতে হত, দীর্ঘদিন যাবত মানুষকে হয়রানি এবং বিল্ডিংয়ে নিয়ম বহির্ভূতভাবে নিমার্ণে সহযোগিতা করেছেন।
অনেক জায়গায় প্লটে বিদ্যমান ইমারত কে খালি দেখিয়ে রিপোর্ট করেও হাতিয়ে নিয়েছেন অনেক টাকা, কারন তিনি এখানকার সিনিয়র ইমারত পরিদর্শক ছিলেন তাই অন্য কলিগরা কিছু বলার সাহস পেতেন না, তিনি ০৪-০৫ জন সাংগপাংঙ্গ/দেহরক্ষী নিয়ে চলেন, আছে সাইনবোর্ডে অলাদা অফিস ও ব্যবসা প্রতিঠান। তার বিশাল এলাকার র্দীঘদিনের দায়িত্বে ভুয়া/বানোয়াট রির্পোট এবং ভবনের ব্যত্যয় রোধ না করে বরং ভবন মালিকদের প্রশয় দিয়ে প্রত্যেক ভবন হতে নিয়েছেন ৩-৫ লক্ষ টাকা অধিক করে বলে জানান। তারা আরও বলেন কোটা বিরোধী আন্দোলণে স্বাধীন দেশে এরকম দুর্বিষহ অন্যায় এবং ঘুষখোর ইমারত পরির্দশকদের বিরুদ্ধে ্এখনই ব্যবস্থা না নিলে এ স্বাধীনত্ াম্লান হয়ে যাবে।
নারায়ণগঞ্জ-সিদ্দিরগঞ্জ-আটি সহ গুরুত্বর্পণ এলাকার ইতিপূর্বে তার রিপোর্টকৃত সকল নথি-নোটিশের কপির এলাকা স্বাধীনভাবে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া আশু প্রয়োজন বলে একাকাবাসী মনে করেন। তারা মনে করেন রক্ষক হয়ে তিনি সব ভক্ষণ করেছেন এবং নামে-বেনামে অনেক সম্পওি ও টাকার মালিক হয়েছেন যা তদন্ত প্রয়োজন। বিভিন্ন দুর্নীতি,অনিয়ম, জালজালিয়াতি এবং অফিসে অনিয়মিত উপিস্থিতি থাকার বিষয়ে জানার জন্য রাজউক জোন ১/১ এর ইমারত পরিদর্শক মোহাম্মদ পারভেজ এর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করলে তার মুঠো ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরবর্তীতে তার অফিসে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। দৈনিক মুক্তখবরের বিশেষ অনুসন্ধানে ইমারত পরিদর্শক মোহাম্মদ পারভেজ এর বেশ দাপ্তরিক অনিয়ম,দুর্নীতি এবং জাল জালিয়াতি এবং নোটিশ বাণিজ্যর মাধ্যমে ভবন মালিকদের নিকট হতে লাখ লাখ টাকার উৎকোচ/ঘুষ গ্রহনের তথ্য উপাত্ত উঠে এসেছে যা পরবর্তীতে প্রকাশ করা হবে।