
NL24 News
০১ মার্চ, ২০২৫, 2:52 PM
রমজান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত
ইসলামে পবিত্র রমজান মাসের রয়েছে বিশেষ গুরুত্ব ও ফজিলত। কেননা এই মাসেই অবতীর্ণ হয়েছে পবিত্র ধর্মগ্রন্থ আল কোরআন। এ ছাড়াও মাসটিতে এমন একটি রাত আছে, যা হাজার মাসের চেয়েও উত্তম।
রমজান মাসের গুরুত্ব ও ফজিলত
পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, রমজান মাস, যাতে কোরআন নাযিল করা হয়েছে মানুষের জন্য হিদায়াতস্বরূপ এবং হিদায়াতের সুস্পষ্ট নিদর্শনাবলী ও সত্য-মিথ্যার পার্থক্যকারীরূপে। সুতরাং তোমাদের মধ্যে যে মাসটিতে উপস্থিত হবে, সে যেন তাতে সিয়াম পালন করে। (সুরা বাকারা: ১৮৫)
কোরআনে আরও বলা হয়েছে, নিশ্চয়ই আমি এটি নাযিল করেছি ‘লাইলাতুল কদরে’। তোমাকে কিসে জানাবে ‘লাইলাতুল কদর’ কী? ‘লাইলাতুল কদর’ হাজার মাস অপেক্ষা উত্তম। সে রাতে ফেরেশতারা ও রূহ (জিবরাইল) তাদের রবের অনুমতিক্রমে সকল সিদ্ধান্ত নিয়ে অবতরণ করে। শান্তিময় সেই রাত, ফজরের সূচনা পর্যন্ত। (সুরা কাদর: ১-৫)
আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ও সাওয়াব লাভের আশায় রমজান মাসে সিয়াম পালন করবে, তার আগের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ও সাওয়াব লাভের আশায় রমজানের রাত নামাজে দাঁড়িয়ে কাটাবে, তার আগের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেয়া হবে। আর যে ব্যক্তি ঈমানের সঙ্গে ও সাওয়াব লাভের আশায় লায়লাতুল কদর ইবাদতে কাটাবে তারও আগের সব গুনাহ ক্ষমা করা হবে। (সহিহ বুখারি, সহিহ মুসলিম)
আল্লাহর রাসুল (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম) বলেছেন, পবিত্র রমজনের একটি রাত বরকত ও ফজিলতের দিক থেকে হাজার মাস থেকেও উত্তম। এ মাসের রোজাকে আল্লাহ তাআলা ফরজ করেছেন এবং এর রাতগুলোয় আল্লাহর সামনে দাঁড়ানোকে নফল ইবাদত রূপে নির্দিষ্ট করেছেন। যে ব্যক্তি রমাযানের রাতে ফরজ ইবাদত ছাড়া সুন্নত বা নফল ইবাদত করবে, তাকে এর বিনিময়ে অন্যান্য সময়ের ফরজ ইবাদতের সমান সওয়াব প্রদান করা হবে। আর যে ব্যক্তি এ মাসে কোনো ফরজ আদায় করবে, সে অন্যান্য সময়ের ৭০টি ফরজ ইবাদতের সমান পুণ্য লাভ করবে। (বায়হাকি)
রোজাদারের মুখের দুর্গন্ধ আল্লাহর কাছে মৃগনাভির সুগন্ধ অপেক্ষা বেশী উৎকৃষ্ট। (বুখারি, হাদিস : ১৯০৪, মুসলিম, হাদিস : ১১৫১, তিরমিজি, হাদিস : ৭৬৪)
জাবের (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী (সা.) বলেছেন, প্রতিটি ইফতারের সময় এবং রমজানের প্রতি রাতে লোকদের জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেওয়া হয়। (ইবনে মাজাহ হাদিস : ১৬৪৩)
রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি কোনো রোজাদারকে ইফতার করাবে, তার জন্য রোজাদারের প্রতিদান সমান প্রতিদান দেওয়া হবে এবং রোজাদারের প্রতিদান থেকেও কোনো প্রতিদান কমানো হবে না। (তিরমিজি, হাদিস : ৮০৭)
হজরত আনাস (রা.) বলেন, নবী (সা.) নামাজের পূর্বে তাজা পাকা খেজুর দিয়ে ইফতার করতেন। তাজা খেজুর না থাকলে যেকোনো খেজুর দিয়ে, আর তাও যদি না থাকত তা হলে কয়েক ঢোক পানি পান করে নিতেন।’ (তিরমিজি, হাদিস : ৬৯৬)
আবু হোরায়রা (রা.) বলেন, আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমানসহ পুণ্যের আশায় রমজানের রোজা পালন করে, তার পূর্বের গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হয়। (বুখারি, হাদিস : ৩৮)
নবীজি (সা.) বলেন, যে ব্যক্তি কোনো কারণ বা অসুস্থতা ছাড়া রমজানের একটি রোজা পরিত্যাগ করবে— সে যদি ওই রোজার পরিবর্তে আজীবন রোজা রাখে তবু ওই এক রোজার ক্ষতিপূরণ হবে না। (তিরমিজি, হাদিস : ৭২৩)
আবু হোরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত হাদিসে নবী কারিম (সা.) বলেছেন, রোজাদারের জন্য দুটি আনন্দ। একটি আনন্দ হচ্ছে যখন সে ইফতার করে। আরেকটি হচ্ছে যখন সে প্রভুর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৬৬)