ঢাকা ২১ জুন, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
পাঁচদিন টানা বৃষ্টির আভাস মন্ত্রণালয় ও সংস্থার মধ্যে সমন্বয়ের অভাবে পিছিয়ে পড়ছে দেশ: উপদেষ্টা সাখাওয়াত আ. লীগকে নিষিদ্ধ করিনি, নির্বাচনে অংশ নিতে পারবে কিনা সিদ্ধান্ত ইসির: বিবিসিকে প্রধান উপদেষ্টা ছাগলনাইয়ায় সেফটিক ট্যাংক থেকে দুই শিশুর লাশ উদ্ধার রংপুর জেলার ৬ আসনে হাতপাখা প্রতীকের ৫ প্রার্থীর নাম ঘোষণা নতুনবাজার সড়ক অবরোধ ইউআইইউ শিক্ষার্থীদের মোসাদের ৫৪ গুপ্তচরকে গ্রেপ্তারের দাবি ইরানের হাসনাহেনায় মুগ্ধতা ছড়ালেন পরীমণি ঢাকার বাতাস আজ ‘সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর’ ইরানে রহস্যজনক ভূমিকম্প, পারমাণবিক পরীক্ষা চালানোর গুঞ্জন

মীরসরাইয়ে বিলুপ্তির পথে ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প

#

নিজস্ব প্রতিনিধি

১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২,  2:32 PM

news image

বাঙালির শত বছরের পুরনো ঐতিহ্য মৃৎ শিল্প। একেকটি শিল্প বিস্তারের পেছনে রয়েছে একেকটি দেশ বাজাতির অবদান। তেমনই একটি শিল্প হচ্ছে মৃৎশিল্প। প্রাচীন কাল থেকে বংশানুক্রমে গড়েওঠা গ্রাম বাংলার ঐতিহ্য বাহী মৃৎ শিল্প আজ বিলুপ্তির পথে। যারা মাটি নিয়ে কাজকরে পেশা য়তারাকুমারবাপাল। আধুনিকতার ছোঁয়ায় দিনদিন যেভাবে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে তাতে তারা পেশা নিয়ে বেশ চিন্তিত। তারপরও দেশে এমন এলাকা বা এমন গ্রাম আছে যেখানে এখনো বাংলার ঐতিহ্য তারা ধরে রেখেছে।

আধুনিকতার ছোঁয়ায় মানুষের রুচির পরিবর্তনের ফলে মাটির তৈরি সামগ্রীর স্থান দখল করেনিয়েছে প্লাস্টিক, মেলামাইন, স্টিল ও অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি নানা রকম আধুনিক সামগ্রী । এ কারণে চাহিদা কম, কাঁচামালের দু®প্রাপ্যতা ও চড়ামূল্য, সর্বোপরি পুঁজির অভাবে প্রতিযোগিতায় টিকতেনা পেরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে মীরসরাই উপজেলার ঐতিহ্যবাহী মৃৎশিল্প।

উপজেলার ১নং করে রহাট ইউনিয়নের ছত্তরুয়া গ্রামের মৃৎশিল্পীদের ঐতিহ্য আঁকড়ে থাকা পালবংশের লোকেরা ।এখানে বসবাসকারী ৪০-৫০ পরিবারের প্রায় দুই শতাধিক মানুষ এই পেশার সাথে জড়িত। শিক্ষিত মানুষের সংখ্যা কম হলেও কর্মঠ মানুষের সংখ্যাই বেশি। ঐ পাড়ার সবাই হিন্দু ধর্মাবলম্বী। বাড়ির ভেতরঢুকে দেখা গেলপ্রায় ঘরগুলোমাটি, ছন ও টিনশেডদিয়ে তৈরি। বাড়িরসামনে ছোট্টউঠান। উঠানজুড়েছড়িয়ে-ছিটিয়েআছেকাদামাটির তৈরিহাঁড়ি, পাতিল, কড়াই, কলস, হাতি, ঘোড়া, মাছপুতুলসহ ছোট-বড়নানারকমেরপাত্র।

তাদেরশিক্ষা ও জীবনযাত্রারমানঅনুন্নত। আধুনিকতারপ্রবল স্রোতেবাংলারপ্রাচীন এই শিল্পের সাথে সাথে হারিয়ে যেতেবসেছে এই শিল্পের সাথে বহুবছরধরেজড়িতমানুষগুলোও। বর্তমানসভ্যতার সাথে পেরে উঠছে না এই মাটিরকারিগররা। আগেইবিভিন্নমাটির তৈরি দ্রব্যাদি ব্যবহারহলেও মেলামাইন, অ্যালুমিনিয়াম ও প্লাস্টিকের ব্যাপকব্যবহারেরফলেএসবসময়েরগর্ভে বিলীনহয়েযাচ্ছে।

উপজেলারকরেরহাটইউনিয়নেরনিপেন্দ্র চন্দ্র মাস্টারবাড়িররাখাল চন্দ্র পালজানান, ব্যবসামন্দারকারণেআমাদেরএখাকারমৃৎশিল্পপ্রস্তুতকারীবাপ-দাদার এই পেশাধরে রেখেছেহাতে গোনাকয়েকটিপরিবার। এই সামান্য আয়েসংসারেঅভাবঅনটন লেগেই থাকেবলেঅভিযোগকরেন এই কুমার। তিনিবলেন, ব্যবসানা থাকায়অনেকেএখনঅন্য কাজকরেসংসারচালাচ্ছে। কাজেই এ মৃৎশিল্পধরেরাখতেহলেসরকারকেএগিয়েআসতেহবে।

তাদের এই বাড়িতেঢুকলে চোখেপড়বেমাটির তৈরিবিভিন্নরকমেরজিনিস। কোনোগুলোকাঁচা, অর্থাৎ পোড়ানোহয়নিআবারকিছুশুকিয়েরাখাহয়েছে, কিছুপুড়িয়ে রং করেওবিক্রিরজন্য তৈরিকরাহচ্ছে।

গৃহবধূ শেফালীরানীপালবলেন, ‘মাটিরএসবকাজআমাদেরবংশেরঐতিহ্য। আমাদেরকয়েকপুরুষধরে এ কাজকরেআসছে। আমরাওকরছি। মাঠ থেকে মাটিএনেপণ্য তৈরিকরেবিক্রি করেআমাদেরজীবিকাচালাই।’

কয়েকজনমৃৎশিল্পী আক্ষেপ করেবলেন, ‘আমরাআর এই সব কাজকরতেপারছিনা। মেলামাইন, সিরামিক ও প্লাস্টিকের কারণেআমরাতাদের সাথে খরচআরতালমিলিয়েচলতেপারছিনা। যদি আমাদেরআধুনিকপ্রশিক্ষণআরসহজঋণেরব্যবস্থা করে দেয়, তাহলেআমরামনেহয়কিছুটাহলেও এই ঐতিহ্যকে ধরেরাখতেপারব। মৃৎশিল্পটিকিয়েরাখতেহলেআধুনিকায়ন, প্রশিক্ষণ ও সহজঋণেরব্যবস্থা থাকতেহবেবলে দাবিজানিয়েছেনউপজেলারকুমারপাড়ারকুমাররা।

ঐতিহ্যবাহীমৃৎশিল্পেরবিষয়েজানতেচাইলেউপজেলানির্বাহীকর্মকর্তামিনহাজুররহমানবলেন, ঐতিহ্যবাহীমৃৎশিল্পআমাদেরআদি সংস্কৃতির সাথে ওতপ্রোতভাবেজড়িত। এই শিল্পকেবাঁচিয়েরাখতেহলেসবারএগিয়েআসাউচিৎ।‘মৃৎশিল্পআধুনিকায়নকরতেপ্রশিক্ষণের ব্যবস্থার জন্য আবেদনের প্রেক্ষিতে আমরাসরেজমিনে তথ্য নিয়েঊর্ধ্বতনকর্তৃপক্ষের সঙ্গে কথাবলেশীঘ্রইব্যবস্থা গ্রহণকরব।


logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম