ঢাকা ২৫ জুন, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়, সুপারিশ মেনে নিচ্ছে বিএনপি মব জাস্টিস' নামে এক হিংস্র উন্মাদনা মানবতার শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে: তারেক রহমান বাংলাদেশে পাচারের জন্যই ফেনসিডিল তৈরি করে ভারত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন ইশরাক সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার বিএনপি মব সংস্কৃতির বিপক্ষে: ফারুক চুল পড়া ও মানসিক উদ্বেগ কমায় কাঁঠালের বীজ তদন্ত কমিশনে ই-মেইল পাঠিয়ে সাক্ষ্য দিলেন নানক-আজম ২০২৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষা হবে পূর্ণাঙ্গ পাঠ্যসূচিতে প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনা ঠিক না থাকায় জীববৈচিত্র ধ্বংসের মুখে: ড. ইউনূস

মানুষের কল্যাণে রিজার্ভের টাকা খরচ করা হচ্ছে, উধাও হয়ে যায়নি

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৭ অক্টোবর, ২০২২,  12:10 PM

news image

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, মানুষের কল্যাণে রিজার্ভের টাকা খরচ করা হচ্ছে, উধাও হয়ে যায়নি। বৃহস্পতিবার (২৭ অক্টোবর) সকালে পায়রা সমুদ্রবন্দরের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন শেষে তিনি এ কথা বলেন। সাড়ে ১০টার দিকে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধানমন্ত্রী এসব কাজের উদ্বোধন করেন।  প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, এই বন্দরটা তৈরি করার যখন চিন্তাভাবনা করি, সেসময়ে অনেকে বাধা দিয়েছেন। কারণ এখানে এত বেশি সিল্ট রয়েছে, নদীবন্দর করা অসম্ভব। তবে আমার দৃঢ় বিশ্বাস ছিলো, কারণ আমি নিজেই এসব অঞ্চল স্প্রিড ভোটে করে ঘুরেছি। আর জাতির পিতা (বাবার) কাছ থেকে এ অঞ্চলের কথা শুনেছি। সেসময় থেকে চিন্তা ছিলো এখানে একটা বন্দর করার। প্রথমে যখন শুরু করি, অনেক বাধা ছিলো। সেময়ে নৌ পরিবহন মন্ত্রী শাহজাহান খানকে ধন্যবাদ জানাই। আমি তাকে বলে এখানে একটা বন্দর করতে চাই, তিনি বলেন, আমরা করতে পারবো। নিজে গেলেন এবং দেখলেন।

এটা নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের নিজস্ব অর্থে কাজটি শুরু হয়। ১৩ আগস্ট ২০১৬ সালে এই বন্দরের কাজ শুরু হয়। পরে ১৯ সেপ্টেম্বর থেকে নিয়মিতভাবে কয়লাসহ অন্যান্য জাহাজসমূহ আসতে শুরু করে। তিনি আরও বলেন, বিদেশি অর্থায়নে অনেক ঝক্কি ঝামেলা পোহাতে হয়, সেজন্য আমাদের রিজার্ভের নিজের টাকা দিয়ে একটা ফান্ড তৈরি করেছি, যার নাম বাংলাদেশ ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফর ডেভেলপমেন্ট অর্থাৎ বাংলাদেশ অবকাঠামো উন্নয়ন তহবিল। আমরা এই ফান্ড থেকেই কাজ শুরু করেছি। আমরা নৌপরিবহন মন্ত্রণায়লকে ২ শতাংশ হারে ঋণ দিয়েছি। অনেকে প্রশ্ন করেন, রিভার্ভের টাকা গেলো কোথায়? তাদেরকে বলছি, বিজার্ভের টাকা গিয়েছে পায়রাবন্দরে। রিজার্ভের টাকা গিয়েছে খাদ্যকেনায়, সারে ও মানুষের দৈনিন্দিন চাহিদা মিটানোর জন্যে। এটা টাকা কেউ চিবিয়ে খায়নি, মানুষের কাজে লাগছে। এ ছাড়াও আমদানিতে কাজে লাগানো হচ্ছে। পায়রা সমুদ্রবন্দরে উন্নয়ন প্রকল্পগুলো হলো: বন্দরের ক্যাপিটাল ড্রেজিং, আটটি জাহাজের উদ্বোধন, প্রথম টার্মিনাল এবং ছয় লেনের সংযোগ সড়ক ও একটি সেতু নির্মাণ। সমুদ্রবন্দরের রাবনাবাদ চ্যানেলের ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ে একটি ৭৫ কিলোমিটার দীর্ঘ, ১০০-১২৫ মিটার চওড়া এবং ১০ দশমিক ৫ মিটার গভীর চ্যানেল তৈরি হবে, যা বন্দরে ৪০ হাজার টন কার্গো বা ৩ হাজারটি কনটেইনারবোঝাই জাহাজ ডক করার সক্ষমতা তৈরি করবে। ক্যাপিটাল ড্রেজিং চ্যানেলে আনুমানিক ৪ হাজার ৯৫০ কোটি টাকা খরচ হবে এবং বেলজিয়ামভিত্তিক ড্রেজিং কোম্পানি জান ডি নুল ড্রেজিংয়ের কাজ করবে। পায়রা সমুদ্রবন্দরের জন্য ২০৯ কোটি ৭৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত জাহাজ ও নৌযানগুলো বন্দর কর্তৃপক্ষকে বিদেশি জাহাজের আগমন ও প্রস্থান পর্যবেক্ষণ এবং চ্যানেল রক্ষণাবেক্ষণে সহায়তা করবে। পায়রা সমুদ্রবন্দরে দুটি পাইলট ভেসেল, দুটি হেভি ডিউটি স্পিডবোট, একটি বয় লেইং ভেসেল, একটি সার্ভে বোট এবং দুটি টাগবোটসহ আটটি জাহাজের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রথম টার্মিনাল, ছয় লেনের মহাসড়ক এবং সেতুর নির্মাণকাজ শেষ হলে পায়রা সমুদ্রবন্দরে তিনটি বিদেশি জাহাজ একযোগে কন্টেইনার বা বাল্ক কার্গো ডক করতে পারবে। ৪ হাজার ৫১৬ কোটি ৭৫ লাখ টাকা ব্যয়ে প্রথম টার্মিনালের নির্মাণকাজ শেষ করে ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে এটি চালু করা হবে। ৬ দশমিক ৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ছয় লেনের সংযোগ সড়কটি সড়ক ও জনপথ বিভাগ (সওজ) নির্মাণ করছে। ৬৫৫ কোটি ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ে সড়কটি নির্মাণে স্পেকট্রা ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেডকে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। ২০২৩ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে সড়কটির নির্মাণকাজ শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পায়রা সমুদ্রবন্দরের পণ্য পরিবহনের জন্য আন্ধারমানিক নদীর ওপর ৭৪০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে ১ হাজার ১৮০ মিটার দীর্ঘ সেতু। সেতুটি ৩০ মাসে (আড়াই বছর) নির্মিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এ উন্নয়ন প্রকল্পগুলো বন্দরটিকে তার পূর্ণ সক্ষমতায় কাজ করতে সক্ষম করবে এবং দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যে নতুন মাত্রা যোগ করবে, যার সুফল জাতি যুগ যুগ ধরে ভোগ করবে। এর আগে ২০১৩ সালের ১৯ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পায়রা সমুদ্রবন্দর উদ্বোধন করেন। এ পর্যন্ত ২৩৬টি সমুদ্রগামী জাহাজ বন্দরে এসেছে, যার মাধ্যমে প্রায় ৫৪৮ কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়েছে। 

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম