
নিজস্ব প্রতিবেদক
০৩ আগস্ট, ২০২২, 9:32 PM

ব্যাটারি কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য ও ধোঁয়ায় গবাদিপশু পাখি সবুজ বনায়নসহ মানুষের জীবন দূর্বিষহ
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের কাশিমপুর মেট্রোপলিটন থানার হাতিমারা ও গোবিন্দবাড়ী এলাকায় চংরুইডা নামে একটি ব্যাটারি কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য ও ধোঁয়া আবাসিক বসতবাড়ি, শিল্পকারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের, বায়ুদূষণ ও পরিবেশে ভয়াবহ দূষণ ছড়াচ্ছে। কারখানা থেকে নির্গত এসিড মিশ্রিত তরল বর্জ্য, সীসাযুক্ত ছাই ও ধোঁয়া দুর্বিষহ করে তুলেছে ওই এলাকার হাজার হাজার মানুষ, গবাদিপশু পাখী, গাছপালা, সবুজ বনায়ন, ও পাশে থাকা শিল্পকারখানায় কর্মরত শ্রমিকদের জীবন। জীববৈচিত্র্যের ওপরও পড়ছে ক্ষতিকর ও বিরূপ প্রভাব। এলাকাবাসী দৈনিক মুক্তখবরকে বলেন, বিষাক্ত বর্জ্যের কারণে কারখানার আশপাশের জমিতে ফসল হয় না। গাছে ফল ধরেনা। পুকুরে মাছও বাঁচতে পারে না। উড়ন্ত ছাই ও ধোঁয়ার কারণে ওই এলাকার প্রায় বাড়িতে চোখের অসুখ, হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টসহ নানান ধরনের রোগ বালাই আশে পাশের মানুষ এমনকি গবাদিপশু পশুপাখির প্রতিদিনের সঙ্গী । পাশে থাকা গার্মেন্টস ফ্যাক্টরি শ্রমিকরা বলেন, তারা ঠিকমতো শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে পারেন না, যখন ব্যাটারি ফ্যাক্টরির কালো ধোঁয়া বের হয়। নারী, শিশু ও গার্মেন্টস শিল্প কারখানা শ্রমিকরা এ সব রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন প্রতিনিয়ত । দূষণের কবল থেকে রেহাই পেতে এলাকাবাসী সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে এলাকাবাসীর কথায় কর্ণপাত করেনি। এদিকে, কারখানা কর্তৃপক্ষ বলছেন, সামান্য পরিবেশ দূষণ হলেও হতে পারে। বর্জ্য পরিশোধনে ফ্যাক্টরিতে নেই কোনো ইটিপি প্ল্যান্ট। এ ছাড়া পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্রসহ সব ধরনের কাগজপত্র দেখাতে না পারলেও তাদের এসব কাগজপত্র রয়েছে বলে দাবি করেন কারখানা কর্তৃপক্ষ । এ বিষয়ে জমির মালিক দুলালের কাছে জানতে চাইলে তিনি দৈনিক মুক্তখবরকে বলেন, ব্যাটারি ফ্যাক্টরির কাছে জমি ভাড়া দিয়েছি। এখানে শুধু সীসা গলিয়ে ব্যাটারি তৈরি করা হয় এবং কালো ধোঁয়া বের হয় বলে সত্যতা স্বীকারও করেন তিনি। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকাবাসীর অনেকেই জানান, কারখানাটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশার জন্য ব্যাটারি তৈরি করে। শুরুতেই কারখানার তরল ও উড়ন্ত বর্জ্যে দূষিত হতে থাকে পরিবেশ। ব্যাটারি ফ্যাক্টরির বায়েজিদ নামের এক কর্মকর্তা জানান, আমরা সীসা গলিয়ে ব্যাটারি তৈরি করি এর চেয়ে আমি আর বেশি কিছু আপনাকে বলতে পারবো না। এ বিষয়ে জানতে, গাজীপুর পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক নয়ন ভূঁইয়া মুক্তখবরকে বলেন, আমরা তিনমাস আগে ওই ফ্যাক্টরিকে ৬ লাখ টাকা জরিমানা করেছি তারপরও তারা অবৈধভাবে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। আমি পরবর্তীতে এর ব্যবস্থা নেবো। এলাকাবাসীর দাবি অবৈধভাবে গড়ে তোলা ব্যাটারী কারখানাটি সরকারি লোকজন এসে জরিমানা না করে গুরিয়ে বিশেষ মেশিন দিয়ে দুমরেমুচড়ে দিলে কারখানাটি আর চালাতে পারতোনা তারা।