
নিজস্ব প্রতিনিধি
০৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, 10:49 AM

প্রাথমিক বিদ্যালয়: রাজবাড়ীতে চালুর আগেই নষ্ট হচ্ছে কোটি টাকার ডিজিটাল হাজিরা মেশিন
এই মেশিনের সাথে যুক্ত থাকবে উপজেলা ও জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস। কোন বিদ্যালয়ের শিক্ষক কখন বিদ্যালয়ে হাজির হলেন সেটি তারা অফিসে বসেই জানতে পারবে। জেলায় ৫ উপজেলায় বেশ কয়েক শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে বালিয়াকান্দি, রাজবাড়ী সদর, গোয়ালন্দ, পাংশা ও কালুখালী উপজেলার প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে এই মেশিন কেনা হয়েছে। তবে পাংশা উপজেলার শতভাগ বিদ্যালয়ে এখনো এই মেশিন কেনা হয় নি। কালুখালী উপজেলার ৭৬টি বিদ্যালয়ের কোনটিতেই তা কেনা হয় নি। জেলার ৪৮১টি বিদ্যালয়ের মধ্যে ৩৭৬টি বিদ্যালয়ে ডিজিটাল হাজিরা মেশিন কেনা সম্পন্ন হয় ২০১৯ সালের শেষের দিকে প্রতিটি মেশিন ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে কেনা হয়। সেই হিসাবে জেলায় প্রায় কোটি টাকা মেশিন কেনা হয়েছে। সে সময় বাজার দরের বেশি দামে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে এই সব মেশিন কেনা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এসব মেশিনের সার্ভিসিং এবং ওয়ারেন্টির মেয়াদ ছিল ১ বছর। তবে চালুর আগেই এরই মধ্যে দুই বছর পার হয়েছে। গত ২০১৯ সালের ২৩ ডিসেম্বও প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে এক চিঠিতে চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা কর্মসূচীর আওতায় স্লিপ (স্কুল লেভেল ইমপ্রুভমেন্ট প্লান) ফান্ডের অর্থ দিয়ে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত বিদ্যালয়ে বায়োমেট্রিক হাজিরা মেশিন না কেনার জন্য অনুরোধ করা হয়। পাংশা উপজেলার সরিষা প্রেমটিয়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শরিফুল হুদা সাগর বলেন, দুই বছর আগে শিক্ষা অফিস থেকে জানানো হলো দ্রুত সময়ের হাজিরা মেশিন কিনতে হবে। তখন আমরা কিনতে বাধ্য হলাম। আমার বিদ্যালয়ের মেশিনটি এরই মধ্যে নষ্ট হয়েগেছে। এখন উপর থেকে যে নির্দেশনা আসে আমরা সেগুলো পালন করতে বাধ্য হয়। আর কবে চালু হবে অথবা চালু হলে নতুন মেশিন কিনব কিভাবে এসব কিছুই জানি না। বালিয়াকান্দি উপজেলার স্বাবলম্বী ইসলামপুর সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শহিদুল ইসলাম জানান, দুই বছর আগে যে উদ্দেশ্যে নিয়ে এই ডিজিটাল হাজিরা মেশিন কেনা হয় সেটি শতভাগ ব্যার্থ। আমাদের মেশিনটি এখনো ভালো আছে। তবে সার্ভিসিং এবং ওয়ারেন্টির মেয়াদ শেষ। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হোসেন ইয়াসমিন করিমী বলেন, জেলার সব প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এই হাজিরা মেশিন কেনা সম্ভব হয় নি। এর কারণ হলো পরবর্তীকালে নির্দেশনা আসে স্লিপ ফান্ডের টাকা দিয়ে মেশিন কেনা যাবে না। কিন্তু কোন টাকা দিয়ে কেনা হবে সেটিও জানানো হয় নি। আবার এরই মধ্যে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের কারণে বিদ্যালয় দীর্ঘদিন বন্ধ ছিল। সরকার কিছুদিন বিদ্যালয় খোলার পরে আবার ১৪ দিন বদ্ধের ঘোষনা দিয়েছে। সব মিলিয়ে মেশিনগুলো এখন ওভাবেই পড়ে আছে।