ঢাকা ২০ জুন, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
এ পর্যন্ত দেশে ফিরেছেন ৩৬ হাজার ৬০১ হাজি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৮ সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত এশিয়া কাপ আর্চারিতে সোনা জিতলেন বাংলাদেশের আলিফ পরমাণু ইস্যুতে ‘রেড লাইন’ স্পষ্ট করল ইরান সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ৬ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ ৫ আগস্ট সরকারি ছুটির ঘোষণা আসছে ২৫৩ জনের গুমের অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে কমিশন প্রবাসীরা ফেরার সময় শুল্ক ছাড়াই আনতে পারবেন যে ১৯ পণ্য বাংলাদেশকে দুই প্রকল্পে ৬৪০ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক আসছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘এরিক’

দুমাস ধরে মেয়ের অপেক্ষা করছি, শুধু মেয়েকে জীবিত ফেরত চাই

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

২০ আগস্ট, ২০২২,  3:10 PM

news image

গত ২৩ জুন কলেজছাত্রী ইয়াশা(১৮) মায়ের সাথে পরীক্ষার হলে ঢোকার পর আর ফিরে আসেনি মায়ের কাছে। ঘটনার একমাস ২৮ দিন পার হয়ে গেলেও এখনও খোজ মেলেনি তার। এ বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে তার মা নাজমা ইসলাম লাকী কান্নারত অবস্থায় বলেন, ‘আমার একটাই মাত্র মেয়ে, আমার বেঁচে থাকার একমাত্র অবলম্বন। ওকে ছাড়া আমি কি নিয়ে বাঁচবো। ১৬ বছর ধরে স্বামীর অপেক্ষায় আছি তিনি এখনও বিদেশ থেকে আসেনি, এখন দুমাস ধরে মেয়ের অপেক্ষা করছি। আমি কারও কোনও বিচার চাই না, শুধু মেয়েকে ফেরত চাই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাও একজন মা আমি তার কাছে আকুল আবেদন করছি আমার মেয়েকে ফেরানোর ব্যবস্থা করার জন্য। ইশতিয়াক নামে যে ছেলের সাথে আমার মেয়ে সারাদিন ছিল সে নাকি ওকে সন্ধ্যায় রিকশায় তুলে দিয়েছে। তাহলে আমার মেয়ে কোথায়? আমি এর সুষ্ঠু তদন্ত চাই।’

কলেজ ছাত্রীর পরিবার জানায়, ঘটনার দিন মায়ের সাথে সিদ্ধেশ্বরী কলেজে পরীক্ষা দিতে যান সুকন্যা। দুপুর ১২টায় তার মা তাকে পরীক্ষা কেন্দ্রে ঢুকিয়ে দিয়ে কলেজের অভিভাবকদের বসার রুমে অপেক্ষা করতে থাকেন। পরীক্ষা শেষ হয় ৩টায়। পরীক্ষার্থী বের হলেও সে বের না হওয়ায় বিষয়টি তার মা কলেজের শিক্ষকদের জানান। এরপর সেদিন বিভিন্ন জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে না পেয়ে পরে রমনা থানায় জিডি করেন। এরপর দিন সেটি মামলায় রূপান্তর হয়। সেই মামলায় ইশতিয়াককে একমাত্র আসামি করা হয়েছে। সেই সাথে আগের দিনের ঘটনা উল্লেখ করা হয়। মামলা হলে রমনা থানা পুলিশ প্রেমিক ইশতিয়াক আহমেদ চিশতী ও তার বন্ধুকে গ্রেপ্তার করে। কিন্তু তাদের জিজ্ঞাসাবাদে তেমন কোনও তথ্য মেলেনি। সেই প্রেমিক এখন কারাগারে। সুকন্যার মা নাজমা ইসলাম জানান, মেয়ের কোনও ফোন ছিল না কিন্তু গত মার্চ মাসে কলেজের ক্লাস নেটে করা লাগে বলে একটি ফোন কিনে দেই। এরপর সে তাতে ওয়াইফাই দিয়ে ফেসবুক চালাতো। কিন্তু ছেলেটি বলছে তার সাথে নাকি সুকন্যার ইন্সটাগ্রামে পরিচয়। আসলে আমি এসব জানিও না। যেদিন আমার মেয়ে নিখোঁজ হলো সেদিনই জানতে পারলাম তার সাথে ওই ছেলের সম্পর্ক। তাছাড়া সুকন্যা তার মোবাইলে কোনও সিম কার্ডও ব্যবহার করতেন না। ইশতিয়াকের সাথে তার হোয়াটসঅ্যাপে কথা হতো বলে পুলিশ সূত্রে জানতে পেরেছি। সেদিনের ঘটনা বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, সেদিন মেয়ের ইন্টার দ্বিতীয় বর্ষের শেষ পরীক্ষা ছিল। কিন্তু কেন্দ্রে গিয়ে এক বান্ধবীকে বলে র‍্যাগ ডে এর প্রোগ্রামের আমার টিকিটটা নিয়ে রাখিস। আমি চাচাতো ভাইকে একটা শার্ট কিনে দিয়ে আসতেছি। এরপর সে আর আসেনি। পরে আমি থানায় জিডি করার পরপরই পুলিশ সেই ছেলের হোয়াটসআপ নম্বর শনাক্ত করে তার ভাইকে ফোন করে। পুলিশ তাকে বলে আপনার ভাই একটি মেয়েকে নিয়ে গেছে সন্ধ্যার মধ্যে থানায় নিয়ে আসতে বলেন। এরপর রাত ১১টার দিকে ইশতিয়াক নিজে আমাকে ফোন করে ইয়াশা কি বাসায় ফিরেছে কিনা জানতে চায়। পরে তার নম্বরটি পুলিশকে দিলে এক কর্মকর্তা তাকে ফোন করেন। সে ফোনটি ধরে বলে ২০ মিনিট পর জানাচ্ছি। পরে ফোন বন্ধ করে দেয়। তিনি আরও বলেন, সুকন্যা এখনো বেঁচে আছে বলে আমাদের ধারণা। মামলাটির তদন্ত করছে ডিবি।  এদিকে থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সুকন্যা তার কলেজ থেকে বেরিয়ে প্রেমিক ইশতিয়াকের সাথে চলে যায়। এরপর তারা বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে একটি রেস্টুরেন্টে বসে খাবার খায় ও সময় কাটায়। পরে সেখান থেকে ফিরে আসে। কিন্তু গেণ্ডারিয়া সেই এলাকা থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় সুকন্যা।  এ ঘটনায় প্রেমিক ইশতিয়াকের এক বন্ধুকে আটকের পর পুলিশ তাকে জিজ্ঞাসাবাদে জানতে পারে, সেদিন বিকেলে ইশতিয়াক তার বাসায় বেড়াতে যায়। যদিও কখনো তার বাসায় থাকার জন্য যায়নি। এতে চিশতীর ওই বন্ধুর সন্দেহ হয় ও সেই সময় তাকে কেমন বিমর্ষ ও চিন্তিত লাগছিল। তার বন্ধু তাকে হঠাৎ তার বাসায় আসা ও বিমর্ষ লাগার কারণ জানতে চাইলে ইশতিয়াক জানিয়েছিল, তার ভালো লাগছে না বলে সে তার বাসায় বেড়াতে এসেছে। তবে পুলিশ মনে করছে, সেদিন সুকন্যার সাথে তার এমন কিছু হয়েছিল যে তাতে চিন্তায় পড়ে যান চিশতী। সেই অবস্থা কাটাতে ও নিজেকে আড়াল করতে বন্ধুর কাছে যায়। 

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম