
নিজস্ব প্রতিবেদক
১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, 2:30 PM

দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন ৫ অভিযোগে চাকরিচ্যুত
র্যাবের অভিযানে উদ্ধার হওয়া প্রায় ৯৪ লাখ টাকার চালান বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা না দিয়ে নিজের কাছে রেখে দেওয়ার পাশাপাশি আদালতের অনুমতি ছাড়াই ব্যাংক হিসাব বন্ধ রাখার মতো গুরুতর ৫টি অভিযোগ উঠেছে সদ্য চাকরিচ্যুত দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে। এ ছাড়া ঘুষ না পেয়ে শরীফ হয়রানি করেছেন এমন ছয়জন লিখিত অভিযোগও করেছেন দুদকের কাছে। এসব অভিযোগের সত্যতা মেলায় শরীফকে দুদক থেকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে বলে জানান শীর্ষ কর্মকর্তারা। ২০২০ সালের ১৯ ফেব্রুয়ারি র্যাবের অভিযানে কক্সবাজারের ভূমি অফিসের কর্মচারী সার্ভেয়ার ওয়াসিম খানকে আটকের পাশাপাশি তার বাড়ি থেকে জব্দ করা হয় ৯৩ লাখ ৬০ হাজার ১৫০ টাকা।
জব্দ টাকাগুলো তদন্তকারী কর্মকর্তা হিসেবে দুদকের উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিনের কাছে হস্তান্তর করা হলেও বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা রাষ্ট্রীয় কোষাগারে জমা হয়নি বলে অভিযোগ ওঠে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উচ্চ আদালত গত বছরের ১৩ ডিসেম্বর রুল জারি করে এক দিনের মধ্যে এ-সংক্রান্ত প্রতিবেদন দিতে বলেন। পরদিন দেওয়া দুদকের প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, টাকাগুলো তাদের ভল্টে রয়েছে। জব্দ টাকা বাংলাদেশ ব্যাংক কিংবা সরকারি কোষাগারে জমা না হওয়ায় দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিনের বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়। আদালতের অনুমতি ছাড়াই কক্সবাজারে একটি ব্যাংক হিসাব স্থগিত করেন দুদক কর্মকর্তা শরীফ উদ্দিন। বিষয়টি আদালতের নজরে এলে শরীফের বিরুদ্ধে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং অসদাচরণের অভিযোগ ওঠে। এটিও তদন্ত করেছেন দুদকের শীর্ষ কর্মকর্তারা। এ ছাড়া গত বছরের ১৬ জুন শরীফকে চট্টগ্রাম থেকে পটুয়াখালী বদলি করা হয়। কিন্তু শরীফ কর্মস্থলে যোগ না দিয়ে বদলি আদেশ চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন। সেই সঙ্গে চাকরিবিধি লঙ্ঘন করে নির্ধারিত সময়ের এক মাস পর ই-মেইলে যোগদানপত্র পাঠানো এবং আরও এক মাস পর সশরীরে যোগ দেওয়াকে শরীফের দোষ হিসেবেই দেখছে দুদক। দুদক কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারের অন্তত ছয়জন ভুক্তভোগী চাহিদা অনুযায়ী ঘুষ না পেয়ে শরীফ উদ্দিন তাদের ভয়ভীতি দেখানোর পাশাপাশি হয়রানি করেছেন বলে লিখিত অভিযোগ করেন। চাকরিবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে দুদক ১৬ ফেব্রুয়ারি এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে পটুয়াখালী জেলা সমন্বিত কার্যালয়ে কর্মরত উপসহকারী পরিচালক মোহাম্মদ শরীফ উদ্দিনকে চাকরি থেকে অপসারণ করে। তবে চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারে দায়িত্ব পালনের সময় শরীফের বেশ কিছু অনুসন্ধান এবং পদক্ষেপ প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে যায়। এ কারণেই তাকে চাকরি থেকে অপসারণ করা হয় বলেও অভিযোগ উঠেছে।