ঢাকা ১৮ জুন, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
জাতীয় ট্যালেন্ট হান্ট ক্রিকেটে সাপাহারের ২ শিক্ষার্থী স্বর্ণের দামে বড় পতনের পূর্বাভাস আগামীকাল সচিবালয়ে বিক্ষোভের ঘোষণা ১১ মাসে রাজস্ব আদায় ৩ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা: এনবিআর দেশে ফিরেছেন ২৯ হাজার ৭৩ হাজি ঈদযাত্রার ১২ দিনে সড়কে ঝরল ৩১২ প্রাণ নির্বাচন নিয়ে সরকারের প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়ন চান রিজভী জনসংযোগ-নিরাপত্তার মিশ্রণে দায়িত্ব পালনে এসএসএফের সদস্যদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান সন্ধ্যায় হাসপাতালে যাবেন খালেদা জিয়া বন্দর নবীগঞ্জে পাষণ্ড স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন

তাকওয়া কী ও তাকওয়া অর্জন...

#

২৭ মে, ২০২৩,  10:18 AM

news image

‘তাকওয়া’ শব্দের অর্থ বিরত থাকা, বেঁচে থাকা, ভয় করা, নিজেকে রক্ষা করা। ইসলামের পরিভাষায় তাকওয়া বলা হয় ওই ব্যক্তিকে যিনি এমন সব কাজ থেকে নিজেকে বিরত রাখেন, যা তার জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। অন্যভাবে বলা যায়, যিনি সব ধরনের পাপাচার থেকে নিজেকে রক্ষা করে কোরআন ও সুন্নাহ মোতাবেক জীবন পরিচালনা করেন। যিনি তাকওয়া অবলম্বন করেন তাকে বলা হয় মুত্তাকি। তাকওয়া হলো পরহেজগারি বা আল্লাহভীতি। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘আবার যে ব্যক্তি তার মালিকের সামনে দাঁড়ানোর দিনটিকে ভয় করেছে এবং এই ভয়ে নিজের নফসকে কামনা-বাসনা থেকে বিরত রেখেছে অবশ্যই জান্নাত হবে তার ঠিকানা’ (সুরা আন নাজিয়াত ৪০-৪১)। মুমিনের মনে যখন আল্লাহভীতি কাজ করে তখন সে বলে, ‘হে আমাদের রব, তুমি এ দুনিয়াতে আমাদের কল্যাণ দাও, পরকালেও সে দিনের বড় কল্যাণ হিসেবে তুমি আমাদের আগুনের আজাব থেকে বাঁচাও’ (সুরা বাকারা-২০১)। একজন মুমিনের ভিতর কী পরিমাণ আল্লাহভীতি থাকলে তিনি আল্লাহর দরবারে এভাবে আকুতি জানাতে পারেন। আল্লাহ তাকওয়া অর্জনের জন্য তাঁর বান্দাদের কোরআনে আহ্বান জানিয়ে বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, তোমরা যথাযথভাবে আল্লাহকে ভয় কর এবং তোমরা মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ কর না’ (সুরা আলে ইমরান-১০২)।

আল্লাহ রব্বুল আলামিন কোরআনে চমৎকারভাবে তাও বলে দিয়েছেন, ‘যারা আল্লাহর দরবারে তওবা করে, নিষ্ঠার সঙ্গে তাঁর ইবাদত করে, তাঁর প্রশংসা করে, তাঁর জন্য রোজা রাখে, রুকু-সেজদা করে, যারা অন্যদের ভালো কাজের আদেশ দেন এবং মন্দ কাজ থেকে বিরত থাকেন, সর্বোপরি যারা আল্লাহতায়ালার নির্ধারিত হালাল, হারামের সীমা রক্ষা করেন, তুমি এ ধরনের সব মুমিনকে জান্নাতের সুসংবাদ দাও’ (সুরা তাওবা-১১২) সুবহানাল্লাহ। আমাদের জীবনটাকে আল্লাহ ও তাঁর রসুলের আনুগত্য ও দাসত্বের অধীনে পরিচালিত করে জীবনধারণ ও মৃত্যুবরণ করতে হবে এবং মুসলিম বা আত্মসমর্পণকারী হিসেবে দুনিয়ার জীবনে সৎ কাজ করে বিদায় নিতে হবে। দুনিয়ার সব মানবীয় ও আইনি বন্ধনমুক্ত জীবনযাপন করাটাই হলো একজন মুমিন বান্দার জন্য ইবাদতের মূল চালিকাশক্তি। আল্লাহ বলেন, ‘হে ইমানদারগণ, তোমরা আল্লাহকে যথাযথভাবে ভয় কর (হক আদায় করে) এবং মুসলিম না হয়ে মৃত্যুবরণ কর না’ (সুরা আলে ইমরান-২০)। অর্থাৎ গড্ডলিকা প্রবাহে গা না ভাসিয়ে কোরআন ও সুন্নাহ মোতাবেক জীবন গড়ো, আল্লাহর বিধান মেনে চলো। তাকওয়া মানে হলো অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে জীবনযাপন করা, যাতে গুনাহগার হতে না হয়। পাপী হতে না হয়। পবিত্রতার সঙ্গে জীবনযাপন করে আল্লাহর সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য নিবেদিতপ্রাণ হয়ে দুনিয়ার জীবন পরিচালিত করতে হবে। ইমাম গাজ্জালি (রহ.) বলেন, ‘আল্লাহকে ভয় করে যাবতীয় মন্দ ও খারাপ কাজ বর্জন করে যাবতীয় ভালো ও উত্তম কাজকে নিজের জীবনে গ্রহণ করার নামই তাকওয়া।’ আল্লাহ বলেন, ‘যারা আল্লাহকে ভয় করে এবং তাকওয়ার জীবন অবলম্বন করে, আল্লাহ তাদের সব জটিলতা থেকে মুক্তি লাভের উপায় বের করে দেন এবং তাদের জন্য এমন পদ্ধতিতে জীবনোপকরণের ব্যবস্থা করে দেন, তারা যা কল্পনাও করেনি’ (সুরা তালাক ২-৩)। রসুল (সা.) তাকওয়া অধিকারী মুমিন বান্দাদের সম্পর্কে অনেক সুসংবাদ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘আমার সবচেয়ে বেশি নিকটতম এবং সবচেয়ে বেশি প্রিয় ব্যক্তি হলো সে, যার মধ্যে তাকওয়ার পরিমাণ বেশি।’ আল্লাহতায়ালার প্রিয় বান্দা হতে এবং আখিরাতে তাঁর সান্নিধ্য পেতে হলে আমাদের তাকওয়ার গুণ অর্জন করতে হবে। তাহলেই আমরা হব সফলকাম। আল্লাহ আমাদের সবাইকে সেই তৌফিক দান করুন। লেখক : অবসরপ্রাপ্ত ব্যাংকার

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম