
নিজস্ব প্রতিবেদক
২০ ডিসেম্বর, ২০২১, 8:17 PM

তরুণদের নেওয়া উদ্যোগই বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশে পৌঁছে দেবে: প্রধানমন্ত্রী
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তরুণদের উদ্দেশে বলেছেন, প্রযুক্তির সঙ্গে নিজেদের তাল মিলিয়ে তারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, তরুণরা নিজেদের প্রস্তুত করবে আগামী দিনের জন্য, যেন তারা দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। আর প্রজন্মের পর প্রজন্ম যেন এ ধারা অব্যাহত থাকে। একটা কথা মনে রাখতে হবে আমাদের স্বাধীনতা অর্জনের পেছনে তরুণের শক্তি-উদ্যোগ উদ্যোম কাজ করেছে। সোমবার (২০ ডিসেম্বর) জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ডের পঞ্চম আসরের পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে দেওয়া ভিডিও বক্তৃতায় এসব কথা বলেন সরকারপ্রধান। আজকের তরুণদের নেওয়া উদ্যোগই বাংলাদেশকে উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশে পৌঁছে দেবে এ মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুব সমাজের মেধা ও জ্ঞান বিকাশের পাশাপাশি তাদের কাজের স্বীকৃতি দিতে সব সময় পাশে থাকা হবে। তিনি বলেন, বর্তমানকে সামনে নিয়ে ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে হবে। কাজেই আমরা আমাদের বর্তমান উৎসর্গ করেছি আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য যে, বাংলাদেশ উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে উঠে জাতির পিতার স্বপ্ন যেমন পূরণ করবে আর বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে সম্মানের সাথে বাঙালি জাতি এগিয়ে যাবে।
দেশ ও মানুষের কল্যাণে যেসব তরুণ উদ্যোক্তা ও সংগঠন কাজ করে যাচ্ছে, তাদের মধ্যে ৩১ ব্যক্তি ও সগঠনকে এ অনুষ্ঠানে পুরস্কৃত করা হয়। আওয়ামী লীগের গবেষণা উইং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন- সিআরআইয়ের অঙ্গ প্রতিষ্ঠান ইয়াং বাংলা ২০১৪ সাল থেকে এ পুরস্কার দিয়ে আসছে। সাভারের শেখ হাসিনা জাতীয় যুব উন্নয়ন ইনস্টিটিউটে আয়োজিত এ অনুষ্ঠানে দেওয়া ভিডিও বক্তৃতায় প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই সব উদ্যোগ বাংলাদেশে সমাজের ইতিবাচক পরিবর্তনে অবদান রাখবে বলে আমি বিশ্বাস করি। এই উদ্যোগই পারবে আমাদের যে লক্ষ্য, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ উন্নত, সমৃদ্ধ হবে- সেই উন্নত সমৃদ্ধ বাংলাদেশ আমরা গড়ে তুলতে পারব। শুধু এখানেই থেমে থাকলে চলবে না, ২০৭১ সালে আমরা স্বাধীনতার শতবর্ষ উদযাপন করব। শেখ হাসিনা বলেন, আমি বলতে চাই তরুণদের যে মেধা, যে জ্ঞান তা বিকশিত করার জন্য এবং নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে। সেইভাবেই তাদের কাজ করতে হবে। তরুণদের মেধা, জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে আমরা আগামী দিনের বাংলাদেশ গড়তে চাই। আমাদের বাংলাদেশের যতটুকু আজ অর্জন হয়েছে গত ১২ বছরে হঠাৎ করে হয়নি। আমাদের সরকারের নীতি এবং আমাদের কর্মসূচির দ্বারাই এটা সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেখানে আমরা সব সময় চেয়েছি আমাদের তরুণ সমাজ নিজের পায়ে দাঁড়াবে, নিজের কাজ নিজে করবে এবং আরও অনেক মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করবে এবং সেভাবেই আমরা বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছি। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগের গবেষণা উইং সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন- সিআরআই এর ‘অগ্রণী ভূমিকার’ প্রশংসা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, সিআরআই উদ্যোগ নিয়েছে দেশের প্রতিভাবান ও সফল তরুণ যুবকদের তারা পুরস্কৃত করবে। যাতে তাদের ভেতরে একটা সাহস জেগে উঠে এবং তাদের যে জ্ঞান এবং শক্তি, তা তার নিজের ও সমাজের কাজে লাগে। সেই অনুপ্রেরণা যেন তারা পায়। সেই লক্ষ্য নিয়েই এই পুরস্কার বিতরণের আয়োজন। বলেন, তরুণদের জীবন উন্নত করা গেলে, তাদের সুন্দরভাবে গড়ে তোলা গেলে তারাই পারে পরিবর্তন আনতে। একই ধারায় পৃথিবী সব সময় চলে না। এখন বিজ্ঞানের যুগ, প্রযুক্তির যুগ। প্রতিনিয়ত এক্ষেত্রে বিবর্তন হচ্ছে, প্রতিনিয়ত এক্ষেত্রে পরিবর্তন আসছে। উন্নত প্রযুক্তি আসছে। সেই প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। প্রযুক্তির সাথে পা ফেলেই এগিয়ে যেতে হবে। আর সেই পরিবর্তনটা সব সময় যুব সমাজই আনে এবং আনতে পারে। তাদের জ্ঞান, মেধা, সেটাই কিন্তু তাদের সেই সুযোগটা দেয়, যোগ করেন সরকার প্রধান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে দেশের তরুণ সমাজ যেভাবে মানুষের কল্যাণে ঝাঁপিয়ে পড়েছে এবং নির্ভয়ে মানবসেবায় নিয়োজিত হয়েছে সেজন্য তিনি ‘গর্বিত’। আমাদের দেশের তরুণ ও যুব সমাজের অবদানকে স্বীকৃতি দিতে সব সময় আমি এই তরুণ সমাজ, তোমাদের পাশে আছি। যুব সমাজকেই আওয়ামী লীগের ‘মূল শক্তি’ হিসেবে বর্ণনা করে দলের সভাপতি শেখ হাসিনা বলেন, গত নির্বাচনে তার দল যে ইশতেহার দিয়েছিল, সেটা যুব সমাজকেই উৎসর্গ করা হয়েছিল। আজকের তরুণরা নিজেদের প্রস্তুত করবে আগামী দিনের জন্য, যেন এই দেশকে তারা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। আর প্রজন্মের পর প্রজন্ম এই ধারা যেন অব্যাহত থাকে। বাংলাদেশের স্বাধীনতার পেছনে তারুণ্যের শক্তি, উদ্যোগ, উদ্যোম কতটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল, সে কথা তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান তরুণ বয়স থেকেই এদেশের নিপীড়িত, শোষিত মানুষের অধিকার আদায়ের জন্য সংগ্রাম করে গেছেন। যুদ্ধবিদ্ধস্ত দেশ গড়ে তুলতেও জাতির পিতা তরুণদের গুরুত্ব দিয়েছিলেন।’ জয় বাংলা ইয়ুথ অ্যাওয়ার্ড বিতরণী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর তথ্যপ্রযুক্তি বিষয়ক উপদেষ্টা সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশন (সিআরআই) এর চেয়ারম্যান সজীব ওয়াজেদ জয়ের ধারণ করা ভিডিও বক্তব্য দেখানো হয়। তরুণ উদ্যোক্তা ও সংগঠনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন বঙ্গবন্ধুর দৌহিত্র ও সিআরআইয়ের ট্রাস্টি রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক।