
NL24 News
২১ মে, ২০২৪, 10:21 PM

চান্দিনায় শিশু হত্যা মামলায় যুবকের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
সোহেল রানা, চান্দিনা (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: কুমিল্লার চান্দিনায় ৬ বছরের শিশু সুবর্ণা আক্তার মীম নামের এক শিশুকে ধর্ষণের চেষ্টার পর শ্বাসরোধ করে হত্যা মামলায় সাড়ে ৬ বছর পর রায় দিয়েছে কুমিল্লার একটি আদালত। এতে মামলার একমাত্র আসামী ওমর ফারুক (২৫) নামের এক যুবককে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত। মঙ্গলবার (২১ মে) কুমিল্লার বিজ্ঞ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইবুনাল—২ এর বিচারক (জেলা জজ) মোঃ জাহিদুল কবির এ রায় দেন। হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদন্ডের পাশাপাশি আরও ২টি ধারায় ১৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ৩৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড দেন আদালত। রায় ঘোষণাকালে আদালতের কাঠগড়ায় উপস্থিত ছিলেন আসামী ওমর ফারুক। দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মোঃ ওমর ফারুক (২৫) হলেন কুমিল্লা চান্দিনা উপজেলার বেলাশ্বর গ্রামের মোস্তফা কামাল এর ছেলে। পেশায় একজন গাড়ি চালক। ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর ভিকটিম চান্দিনা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ড বেলাশহর গ্রামের কোরবান আলীর শিশু কন্যা সুবর্ণা আক্তার মীমকে ধর্ষণের পর হত্যাকালে গাড়ি চালক আসামী ওমর ফারুক এর বয়স ছিল ১৯ বছর। মামলার বিবরণে, আইনজীবী ও স্থানীয় সূত্রে জানা যায়— চান্দিনা পৌরসভার ৪নং ওয়ার্ডের সাদত আলী মেম্বার এর ছেলে মো. কোরবান আলী ও খাদিজা আক্তার শিমু দম্পতির কন্যা সুবর্ণা মীম। মা—বাবার দাম্পত্য কলহে তাদের মধ্যে বিবাহ বিচ্ছেদ হলে শিশুটি তার বাবার সাথেই থেকে যায়। ২০১৭ সালের ৬ ডিসেম্বর কোরবান আলী মোবাইল করে শিশুর মাকে জানায় তার মেয়ে সুবর্ণা মীম কে খেঁাজে পাওয়া যাচ্ছেনা। এরপর সন্ধ্যায় কোরবান আলী জানান কে বা কাহারা সুবর্ণা মীম এর মুক্তিপণ হিসেবে দশ লক্ষ টাকা দাবি করে। পরদিন সকালে চান্দিনা আর এন আর সিরামিক ফ্যাক্টরির সংলগ্ন থানগাঁও খালের পশ্চিম পাশে^র্ সুবর্ণা মীম এর লাশ গলায় ওড়না পেচানো অবস্থায় পাওয়া যায়। ওই ঘটনায় ৭ ডিসেম্বর শিশুর মা খাদিজা আক্তার শিমু বাদী হয়ে চান্দিনা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব—ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) ডালিম কুমার মজুমদার তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে ৮ ডিসেম্বর কুমিল্লার চান্দিনা উপজেলার বেলাশ্বর গ্রামের মোস্তফা কামাল এর ছেলে মো. ওমর ফারুক কে গ্রেফতার করে। আসামীকে আদালতে সোপর্দ করলে সে স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি প্রদান করে। জবানবন্দি পর্যালোচনাক্রমে আসামি মো. ওমর ফারুক এর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাঁকে দন্ডবিধির ৩০২ ধারায় যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ৫০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড এবং ২০১ ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড ও ১০ হাজার টাকা অর্থদণ্ড প্রদান করে আদালত। এছাড়াও নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন—২০০০ (সং/০৩) এর ৯(৪)(খ) ধারায় ১০ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ২৫ হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করে আদালত। রায়ের আরও উল্লেখ করা হয়, বর্ণিত সাজা একসাথে চলবে। একমাত্র শিশু মেয়েকে এভাবে নির্মম ভাবে হত্যা মামলায় যাবজ্জীবন সাজাকে মেনে নিতে পারছেন না নিহত শিশু সুবর্ণা আক্তার মীম এর পিতা কোরবান আলী। তিনি জানান, এমন নির্মম হত্যা মামলায় আমরা তার ফাঁসির রায় প্রত্যাশা করেছিলাম। রাষ্ট্রপক্ষে কুশলী স্পেশাল পিপি এডভোকেট মো. মিজানুর রহমান মজুমদার বলেন, আশা করছি উচ্চ আদালত এ রায় বহাল রাখবেন। এদিকে, আসামি পক্ষের এডভোকেট মো. হাছান বলেন— রায়ের কপি হাতে পেলে শীঘ্রই উচ্চ আদালতে আপিল করবো।