গলাচিপায় নলুয়াবাগী খাল দখল, জলাবদ্ধতায় কৃষকের সর্বনাশ: সুইস গেটের আশ্বাস
১২ জুলাই, ২০২৫, 3:33 PM

NL24 News
১২ জুলাই, ২০২৫, 3:33 PM

গলাচিপায় নলুয়াবাগী খাল দখল, জলাবদ্ধতায় কৃষকের সর্বনাশ: সুইস গেটের আশ্বাস
গলাচিপা (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি : পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার গোলখালী ইউনিয়নের নলুয়াবাগী ৭-৮ও ৯ নং ওয়ার্ডে বর্ষা মৌসুম যেন কৃষকদের জন্য দুর্ভোগের আরেক নাম। পানি নিষ্কাশনের প্রধান তিনটি খাল প্রভাবশালীদের দখলে চলে যাওয়ায় প্রতি বছর শত শত একর ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে যাচ্ছে। বর্ষা এলেই নলুয়াবাগী গ্রামের বিস্তীর্ণ ফসলি মাঠ পানির নিচে চলে যায়। আমন ধানের বীজতলা থেকে শুরু করে রবিশস্য—সবই ক্ষতিগ্রস্ত হয় জলাবদ্ধতার কারণে। কৃষকদের অভিযোগ, পানি সরে যাওয়ার প্রাকৃতিক পথগুলো বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এলাকার পানি নিষ্কাশনের প্রধান তিনটি খাল—লাখিয়ার খাল, বিষ্ট রামের খাল এবং নিজার খাল—সম্পূর্ণরূপে দখলদারদের নিয়ন্ত্রণে। কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিগত স্বার্থে মাছ চাষের জন্য পুষ্কণী তৈরি করে এবং বাঁধ দিয়ে এসব খালের পানি প্রবাহ বন্ধ করে দিয়েছে। ফলে সামান্য বৃষ্টিতেই পুরো এলাকা প্লাবিত হয়।
ঘটনাস্থলে গেলে ভুক্তভোগী কৃষকরা তাদের দুর্দশার কথা তুলে ধরেন। "প্রতি বছর বর্ষায় আমাদের সব স্বপ্ন পানিতে ডুবে যায়। পানি সরার কোনো পথ নেই। খালের মুখে বাঁধ দিয়ে রাখায় সব শেষ। আমরা কার কাছে যাবো, কিছুই বুঝতে পারছি না।" জলাবদ্ধতার এই সমস্যা সমাধানের জন্য নলুয়াবাগী বাঁধ ঘাটে একটি সুইস গেট নির্মাণের দাবি দীর্ঘদিনের। কৃষকরা জানান, তারা বহুবার স্থানীয় প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কাছে আবেদন করেছেন। আবেদনের পর কর্মকর্তাদের পক্ষ থেকে আশ্বাসও দেওয়া হয়েছে। এমনকি, কয়েক দফা ঘটনাস্থলে এসে সুইস গেট নির্মাণের জন্য মাটি পরীক্ষাও করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। প্রতিবারই তাদের বলা হয়েছে, "খুব দ্রুত সুইস গেট নির্মাণ করা হবে।" কিন্তু বছরের পর বছর কেটে গেলেও সেই আশ্বাস আলোর মুখ দেখেনি। বিশেষ করে ৭, ৮ এবং ৯ নং ওয়ার্ডের কৃষকরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। তাদের দাবি,
অবিলম্বে দখলদারদের হাত থেকে খাল তিনটি মুক্ত করে পানি চলাচলের পথ সুগম করতে হবে। মাছ চাষের জন্য দেওয়া অবৈধ বাঁধগুলো কেটে দিয়ে খালের স্বাভাবিক গতি ফিরিয়ে আনা এখন সময়ের দাবি। ভুক্তভোগী কৃষকরা বলেন, "আমরা শুধু খালগুলো দখলমুক্ত দেখতে চাই এবং প্রতিশ্রুত সুইস গেটটি দ্রুত নির্মাণ চাই। এটা হলে আমরা অন্তত ফসল ফলিয়ে বাঁচতে পারবো।" এ বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নিতে এলাকার কৃষকরা উপজেলা প্রশাসন এবং পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। তাদের মতে, খালগুলো দখলমুক্ত করে সুইস গেট নির্মাণ করা না হলে এই অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতি পুরোপুরি ভেঙে পড়বে। মুখের কথা শুনে ও মাঠ প্রদর্শন করে পানিবন্দী খাল মুক্ত করে পানি নামা ওঠার মেইন জায়গা গুলোতে কালভার্টের ব্যবস্থা করে দিবেন বলে আশ্বাসিত করেন মো. মাসুদ উপজেলা পরিসংখ্যান অফিসার ও প্রশাসক গোলখালি ইউনিয়ন পরিষদ।