
NL24 News
২০ জুন, ২০২২, 3:54 PM

ক্ষতিপূরণ না, মহারশীতে একটা স্থায়ী বেড়িবাঁধ চাই’
শেরপুর প্রতিনিধি: ‘এবারের পাহাড়ি ঢলে আমার ২৫ লাখ টাকার ক্ষতি হইছে। আমি এই ক্ষতিপূরণ চাই না, আমার জীবনের বিনিময়ে হলেও এই মহারশী নদীতে একটা স্থায়ী বেড়িবাঁধ চাই। এই বেড়িবাঁধ না হলে, আমাদের স্থায়ী সমস্যার সমাধান কোনোদিনও হবে না। সরকারের কাছে অনুরোধ করি, আমাদের এই নদীর দুই পাড়ে বেড়িবাঁধ করে দিন।’ আক্ষেপ নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন শেরপুরের ঝিনাইগাতী উপজেলার ব্রিজপাড় এলাকার বেনিয়ামিন। গত শুক্রবার উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢলে ও পানির প্রবল স্রোতে মহারশী নদীর রামেরকুড়া এলাকার তীর ভেঙে তার বসতভিটা ও চারটি মুরগির খামার ভাসিয়ে নিয়ে গেছে। মুরগির খামারে দুই হাজার লেয়ার জাতের মুরগি, ডিম ও আসবাবসহ তার মোট ক্ষতির পরিমাণ প্রায় ২৫ লাখ টাকা। ঠিক একইভাবে কান্নাজড়িত কণ্ঠে একই এলাকার আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘এই নদী প্রতি বছরই ভাঙে। কোনো টেকসই বাঁধ না থাকার কারণে দুই পাড় ভেঙে লাখ লাখ টাকার ক্ষতি হয়; ঘর বাড়ি ভাসিয়ে নিয়ে যায়। এই ক্ষতি থেকে বাঁচতে আমাদের এই নদীর তীরে স্থায়ী বাঁধের কোনো বিকল্প নেই।’ গেলো শুক্রবার পাহাড়ি ঢলে সবচেয়ে ভয়াবহ ভাঙনের কবলে পড়ে রামেরকুড়া। ব্রিজপাড় সংলগ্ন এই অংশে ভাঙনের ফলে ঝিনাইগাতী সদর বাজার রক্ষা পেলেও ধ্বংসযজ্ঞ চলে এই এলাকায়। শুক্রবার (১৭ জুন) দুপুরে রামেরকুড়া বাঁধের সঙ্গে চার বাড়ি ও দুটি মুরগির খামার ভেসে গেছে। সেইসঙ্গে ওই গ্রামের বেশ কয়েকটি বাড়ির মানুষ পানিবন্দি হয়ে আটকে পড়েন। স্থানীয়রা বলেন, প্রতি বছরই মহারশী নদীর পানির তোড়ে ভাঙনের সৃষ্টি হয়। এর স্থায়ী সমাধান না হলে জানমালের অনেক ক্ষতি হচ্ছে। দ্রুত একটি বেড়িবাঁধ দেওয়া না হলে ভবিষ্যতেও অনেক বড় ক্ষতি হবে ঝিনাইগাতীবাসীর। ঝিনাইগাতী ক্ষুদ্র বণিক সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক ফারুক আহমেদ বলেন, মহারশী নদীর ভাঙনের ফলে প্রতি বছর বর্ষার সময় ঝিনাইগাতী উপজেলা পরিষদ, সরকারি দপ্তর ও সদর বাজার হুমকির মুখে পড়ে। এই পাড় ভেঙেই পুরো ঝিনাইগাতী তলিয়ে যায়। বাজার ভেসে যায়, ব্যবসায়ীদের ভয়াবহ ক্ষতি হয়। তাই মহারশী নদীর তীরবর্তী বেড়িবাঁধ খুবই প্রয়োজন। ঝিনাইগাতী সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহাদাৎ হোসেন বলেন, এই বাঁধটি ঝিনাইগাতীবাসীর প্রাণের দাবি। এই নদীর তীরবর্তী এলাকাগুলো প্রতি বছর প্লাবিত হয়। এই তীর ভেঙেই পুরো ঝিনাইগাতীতে পানি প্রবেশ করে। এখানে একটি স্থায়ী বেড়িবাঁধ নির্মাণ জরুরি। স্থানীয়দের দাবি, মহারশী নদীর বুকে জমা পলি খনন করে নদী শাসনের ব্যবস্থা করে বেড়িবাঁধ নির্মাণ করলে এই সমস্যা থেকে উত্তরণ সম্ভব। প্রতি বছর এই ভাঙনের ফলে দুই তীরের আবাদী জমি, বসত ভিটাসহ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ক্ষতির সম্মুখীন হয়। এ ব্যাপারে শেরপুরের জেলা প্রশাসক সাহেলা আক্তার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করে দৈনিক মুক্তখবরকে বলেন, ইতোমধ্যে পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে কথা হয়েছে; আমি একটি চিঠিও পাঠিয়েছি। আশা করছি এ বছরই এর স্থায়ী সমাধান করা সম্ভব।