ঢাকা ১৯ জুন, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
জাতীয় ট্যালেন্ট হান্ট ক্রিকেটে সাপাহারের ২ শিক্ষার্থী স্বর্ণের দামে বড় পতনের পূর্বাভাস আগামীকাল সচিবালয়ে বিক্ষোভের ঘোষণা ১১ মাসে রাজস্ব আদায় ৩ লাখ ২৭ হাজার কোটি টাকা: এনবিআর দেশে ফিরেছেন ২৯ হাজার ৭৩ হাজি ঈদযাত্রার ১২ দিনে সড়কে ঝরল ৩১২ প্রাণ নির্বাচন নিয়ে সরকারের প্রতিশ্রুতি দ্রুত বাস্তবায়ন চান রিজভী জনসংযোগ-নিরাপত্তার মিশ্রণে দায়িত্ব পালনে এসএসএফের সদস্যদের প্রতি প্রধান উপদেষ্টার আহ্বান সন্ধ্যায় হাসপাতালে যাবেন খালেদা জিয়া বন্দর নবীগঞ্জে পাষণ্ড স্বামীর হাতে স্ত্রী খুন

কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না সাধারন মানুষ

#

১৯ ডিসেম্বর, ২০২১,  8:22 PM

news image

গোফরান পলাশ: পটুয়াখালীর কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে দীর্ঘ দিন ধরে প্রয়োজনীয় ডাক্তার, নার্স, স্বাস্থ্য সহকারী ও ষ্টাফ না থাকায় যথাযথ চিকিৎসা সেবা পাচ্ছে না সাধারন মানুষ। এছাড়া মুষ্টিমেয় যারা আছেন তারা একই কর্মস্থলে যুগ যুগ ধরে  রহস্যজনক ভাবে কর্মরত আছেন। এসব চিকিৎসক, ষ্টাফ নার্স, ব্রাদার, টেকনোলজিষ্ট ও প্যাথলজিষ্টদের সাথে প্রাইভেট ক্লিনিক ও ডায়াগনষ্টিক সেন্টার মালিকের সাথে যৌথ ব্যবসা থাকায় হাসপাতালে চিকিৎসা সেবা না দিয়ে প্রাইভেট প্রাকটিসে আগ্রহ তাদের। এতে হাসপাতালের ভেতরে, বাহিরে, পথে পথে বেড়েছে দালালদের উপদ্রব। যারা প্রাইভেট ডাক্তার দেখাতে রোগী নিয়ে টানা হেঁচড়া পর্যন্ত করছেন। শহরে

বেড়েছে শব্দ দূষন করে চিকিৎসকদের মাইকিং। চিকিৎসকদের বড় বড় ফেষ্টুন ঝোলানে হয়েছে সড়কে সড়কে। চিকিৎসকদের হ্যান্ডবিল, লিফলেট নিয়ে রোগী বাগাতে ঘুরছে দালালরা। চিকিৎসকদেরও এতে পরোক্ষ সমর্থন থাকার অভিযোগ রয়েছে। জানা যায়, ২০১২ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি ৩১ শয্যার এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সকে ৫০ শয্যায় উন্নীত করা হয়। কিন্তু ৫০ শয্যার ক্যাটাগরি অনুযায়ী এখানে চিকিৎসকসহ অন্যান্য সুবিধা নেই। অথচ উপজেলার ১২টি ইউনিয়ন ও দু’পৌরসভার তিন লক্ষাধিক মানুষ চিকিৎসা সেবা নিতে কলাপাড়া ৫০ শয্যা হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু ডাক্তাররা তদবির করে তাদের সুবিধাজনক জায়গায় ডেপুটেশনে

চাকরি করছেন। এছাড়া প্রশিক্ষণসহ বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে চিকিৎসকরা বদলি হয়ে যাওয়ায় লাগাতার চিকিৎসক সঙ্কট সৃষ্টি হয়েছে। সরকারী খাতার কাগজে কলমে তারা কেউ প্রশিক্ষনে, কেউ ডেপুটেশনে থেকেও সপ্তাহে তিন দিন বৃহস্পতি, শুক্র ও শনি বার নিজের অংশীদারী ক্লিনিক, ডায়াগনষ্টিক সেন্টারে বসে দেদারছে ৩০০-৫০০ টাকা ভিজিটে রোগী দেখছেন। এভাবে একাধিক চিকিৎসক সরকারী নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা না করে রাতা রাতি বিত্ত বৈভবে টৈ টম্বুর বনে গেছেন। এদের অধিকাংশের আয়কর, ভ্যাট ফাইলে সঠিক সম্পদের বিবরন উল্লেখ নেই। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স সূত্রে জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে জুনিয়র কনসালটেন্ট (সার্জারী), জুনিয়র কনসালটেন্ট (মেডিসিন), জুনিয়র কনসালটেন্ট (গাইন এন্ড অবস), জুনিয়র কনসালটেন্ট (চক্ষু),  জুনিয়র কনসালটেন্ট (কার্ডিওলজি), জুনিয়র কনসালটেন্ট (অর্থোঃ), জুনিয়র কনসালটেন্ট (শিশু), জুনিয়র কনসালটেন্ট (এ্যানেসথেসিয়া),  জুনিয়র কনসালটেন্ট (চর্ম ও যৌন) , মেডিকেল অফিসার (ইনডোর), মেডিকেল অফিসার (হোমিও) ডেন্টাল সার্জন, ৮টি ইউনিয়নে এমও/সহ:সার্জন ৩ জন, উপ সহাকারি কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ১জন, ৮টি ইউনিয়নে উপ-সহ: কমি: মেডি: অফিসার ১জন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ল্যাব:) ২ জন, মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (ফিজিওথেরাপি) ১জন, পরিসংখ্যানবিদ ১জন, স্টোরকিপার ১জন, অফিস সহকারি কাম-কম্পিউটার অপারেটর/ডাটা এন্ট্রি অপা: ২জন, যক্ষèা ও কুষ্ঠ নিয়ন্ত্রন সহকারি ১জন, জুনিয়র মেকানিক ১জন, টিকেট র্ক্লাক (আউট সোর্সিং) ১জন ওটি বয়/ ওটি এ্যাটেনডেন্ট ১জন, এমএলএসএস-২,আয়া-১, নিঃ প্রহরি-১, কুক-২, পরিচ্ছন্নতা কর্মী ৩, স্বাস্থ্য পরিদর্শক ২, স্বাস্থ্য সহকারী ১৫, সিএইচসিপি ৩ জনসহ দীর্ঘ দিন ধরে পদ গুলো  শুন্য রয়েছে। হাসপাতালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী, বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে প্রায় ২০০ জন এবং আন্তঃ বিভাগে প্রায় ৮০ জন নতুন রোগী ভর্তি হয়ে থাকেন। কিন্তু চিকিৎসক ও নার্সের বেশির ভাগ পদ শুন্য থাকায় বিপুল সংখ্যক রোগীকে চিকিৎসা দিতে হাসপাতালে উপস্থিত চিকিৎসক ও নার্সদের রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। মান সম্মত অপারেশন থিয়েটার (ওটি) থাকলেও লোক বলের অভাবে সেগুলো ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়ছে। ভবনটির দ্বিতীয় তলায় রয়েছে জরুরি প্রসূতিসেবার (ইওসি) আধুনিক অস্ত্রোপচার কক্ষ। সেখানে অটোক্লেভ মেশিন ও ওটি টেবিলসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসা সরঞ্জামও রয়েছে। এই সরঞ্জামগুলো কয়েক বছরের বেশি সময় ধরে অব্যবহৃত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। গাইনি বিশেষজ্ঞ না থাকায় জরুরি প্রসূতি সেবা চালু করা যাচ্ছে না। ফলে এখানে নানা স্বাস্থ্য জটিলতার কারণে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কোনো প্রসুতি মা সন্তান জন্ম দিতে পারছেন না। আলট্রাসনোগ্রাম মেশিনটি দীর্ঘ দিন ধরে নষ্ট হয়ে পড়ে রয়েছে। রোগীদের বাহিরের প্রাইভেট ক্লিনিক থেকে আলট্রাসনোগ্রামকরতে হয়। রাতে যখন বিদ্যুৎ থাকেনা তখন অন্ধকারে হাসপাতালের রোগীদের দুর্ভোগের যেন শেষ নেই। জেনারেটরের ব্যবস্থা থাকলে ও গরমের দিনে চালানো হয় না জেনারেটর। রোগীদের খাদ্য ও পয়:নিস্কাশন ব্যবস্থা নিয়েও রয়েছে নানা অভিযোগ হাসপাতালে ভর্তি হওয়া কয়েকজন রোগী জানান, বেড খালি না থাকায় মেঝেতে থেকে চিকিৎসা সেবা নিতে হয়। ঔষধ তেমন দেয়া হয় না। বাহির থেকে ঔষধ কিনতে হয়। আলট্রাসনোগ্রাম, এক্সরে, রক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা বাইরে থেকে করতে হয়। যা অনেক দরিদ্র রোগীর জন্য কষ্টকর। কলাপাড়া উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. চিন্ময় হাওলাদার বলেন, চিকিৎসক সঙ্কটের  কথা উধর্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার জানানো হয়েছে। কোনো ফল পাওয়া যাচ্ছে না।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম