ঢাকা ১৮ জুন, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
সোনারগাঁয়ে বেরিবাঁধ থেকে যুবকের গলাকাটা মরদেহ উদ্ধার উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ শপথ ভেঙেছেন: ইশরাক সাভারে অসহায় বিধবা নারীকে আর্থিক সহায়তা দিলেন বিএনপি নেতা খোরশেদ আলম ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে তৃনমূল দ্বায়ীত্বশীলদের সাথে পরামর্শ সভা অনুষ্ঠিত জুলাইয়ের মধ্যেই 'জুলাই সনদ' তৈরি করতে পারবো: আলী রীয়াজ ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে যোগ দেয়নি জামায়াত সাগরে তৈরি হচ্ছে বজ্রমেঘ, সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্কসংকেত একাত্তরে ৫ রাজাকারকে কুপিয়ে হত্যা করা মুক্তিযোদ্ধা সখিনা বেগম আর নেই সচিবালয়ে বিক্ষোভ অব্যাহত ইরানের শীর্ষ কমান্ডারকে হত্যার দাবি ইসরায়েলের

আচরণে যিনি নবীজির সদৃশ ছিলেন

#

০৭ জানুয়ারি, ২০২৫,  11:00 AM

news image

ফাতিমা বিনতে মুহাম্মাদ (রা.)

কন্যাদের ভেতর নবীজি (সা.)-এর কাছে সবচেয়ে প্রিয় ছিলেন সাইয়েদা ফাতিমা (রা.)। নবীজি (সা.) তাঁকে অত্যধিক ভালোবাসতেন। তাঁকে সব সময় কাছে রাখতেন। মহানবী (সা.)-এর এই প্রিয় কন্যার মধ্যে আল্লাহ অনন্য কিছু বৈশিষ্ট্য দান করেছিলেন, যা অন্য কাউকে দেননি।

যেমন আচার-আচরণে তিনি ছিলেন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সদৃশ, তাঁর মাধ্যমেই নবীজি (সা.)-এর বংশের বিস্তার ঘটেছে ইত্যাদি। পরকালেও এই মহীয়সী নারী অনন্য মর্যাদার অধিকারী হবেন।

উম্মুল মুমিনিন আয়েশা (রা.) বলেন, নবী (সা.)-এর স্ত্রীরা সবাই তাঁর কাছে ছিল। এর মধ্যে ফাতিমা (রা.) হেঁটে (আমাদের কাছে) এলেন।

তাঁর চলন এবং আল্লাহর রাসুল (সা.)-এর চলনের মধ্যে কোনো পার্থক্য ছিল না। অতঃপর নবী (সা.) তাঁকে দেখে স্বাগত জানালেন এবং বললেন, ‘আমার কন্যার শুভাগমন হোক।’ অতঃপর তিনি তাঁকে নিজের ডান অথবা বাঁ পাশে বসালেন। তারপর তিনি তাঁকে কানে কানে গোপনে কিছু বললেন।

ফাতিমা (রা.) জোরেশোরে কাঁদতে আরম্ভ করলেন। সুতরাং তিনি তাঁর অস্থিরতা দেখে পুনর্বার তাঁকে কানে কানে কিছু বললেন। এবার তিনি হাসতে লাগলেন। আয়েশা (রা.) বলেন, ‘অতঃপর আমি ফাতিমাকে বললাম, রাসুলুল্লাহ (সা.) তাঁর স্ত্রীদের মধ্যে (তাঁদের বাদ দিয়ে) তোমাকে গোপনে কিছু বলার জন্য বেছে নিলেন, অথচ তুমি কাঁদছ? তারপর রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন উঠে গেলেন, তখন আমি তাকে বললাম, রাসুলুল্লাহ (সা.) তোমাকে কী বললেন? সে বলল, আমি রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর গোপন কথা প্রকাশ করব না। অতঃপর রাসুলুল্লাহ (সা.) মৃত্যুবরণ করলে আমি ফাতিমা (রা.)-কে বললাম, তোমার প্রতি আমার অধিকার রয়েছে।

তাই আমি তোমাকে কসম দিয়ে বলছি যে তুমি আমাকে বলো, রাসুলুল্লাহ (সা.) তোমাকে কী বলেছিলেন? সে বলল, এখন বলতে কোনো অসুবিধা নেই। আল্লাহর রাসল (সা.) প্রথমবারে কানাকানি করার সময় আমাকে সংবাদ দিয়েছিলেন যে জিবরাইল (আ.) প্রত্যেক বছর একবার করে কোরআন শোনান। কিন্তু এখন তিনি দুইবার শোনালেন। সুতরাং আমি বুঝতে পারছি যে আমার মৃত্যু সন্নিকটে। সুতরাং তুমি (হে ফাতিমা!) আল্লাহকে ভয় করো এবং ধৈর্য ধারণ করো। কেননা আমি তোমার জন্য উত্তম অগ্রগামী। সুতরাং আমি এ কথা শুনে কেঁদে ফেললাম, যা তুমি দেখলে। অতঃপর তিনি আমার অস্থিরতা দেখে দ্বিতীয়বার কানে কানে বললেন, হে ফাতিমা! তুমি কি এটা পছন্দ করো না যে মুমিন নারীদের তুমি সর্দার হবে অথবা এই উম্মতের নারীদের সর্দার হবে? সুতরাং এমন সুসংবাদ শুনে আমি হাসলাম, যা তুমি দেখলে।’

(রিয়াজুস সালিহিন, হাদিস : ৬৯২)

হাদিসের শিক্ষা

উল্লিখিত হাদিস থেকে কয়েকটি বিষয় শিক্ষণীয়—

১. মানুষকে ব্যথিত করে এমন কথা গোপন করা যায়।

২. সন্তানকে বিপদে-আপদে ধৈর্য ধারণের শিক্ষা দেওয়া জরুরি।

৩. মানুষের গোপন কথা গোপন রাখা জরুরি। কেননা এটা আমানতস্বরূপ।

৪. ব্যক্তির মৃত্যুর পর তাঁর গোপন কথা প্রকাশ করা যায়, যদি না তাতে মৃত ব্যক্তির সম্মানহানি হয় অথবা কোনো ফিতনার আশঙ্কা থাকে।

৫. দুঃসংবাদ শুনে ব্যথিত হওয়া এবং সুসংবাদ শুনে আনন্দিত হওয়া উত্তম।

আল্লাহ সবাইকে সুপথে পরিচালিত করুন। আমিন।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম