
NL24 News
২০ মে, ২০২৩, 11:43 AM

আশুলিয়ায় চাঞ্চল্যকর হৃদয় হত্যা, আরও ২ আসামি গ্রেপ্তার
ওবায়দুর রহমান লিটনঃ রাজধানীর পল্লবী ও নওগাঁ জেলায় পৃথক অভিযান পরিচালনা করে আশুলিয়ার চাঞ্চল্যকর হৃদয়কে অপহরণের পর হত্যা ও লাশ গুমের ঘটনার অন্যতম আসামী আকাশ এবং শাহীন বাবুকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব-৪। এনিয়ে এ ঘটনায় জড়িত চার জনকে গ্রেপ্তার করা হলো। গতকাল শুক্রবার (১৯ মে) বিকেল সাড়ে ৬টার দিকে এক প্রেস বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে এ তথ্য নিশ্চিত করেন র্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান। গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন- মাগুরা জেলার মো. হৃদয় খান আকাশ (২২) ও নওগাঁ জেলার শাহীন বাবু (২৬)। এর আগে গ্রেপ্তার দুই আসামি হলেন- মানিকগঞ্জ সদর থানার পশ্চিম দাসপাড়া গ্রামের বাবুল হোসেনের ছেলে ময়েজ হোসেন পরান (২২) ও বগুড়ার সোনাতলা থানার মহেশপাড়া গ্রামের মো. তাহেলুল ইসলামের ছেলে সুমন মিয়া বাপ্পী (২৫)। নিহত ফারাবি আহমেদ হৃদয় আশুলিয়ার জামগড়া এলাকার ফজলুল হক মিয়ার ছেলে। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। গত ৮ মে জামগড়ার বাসা থেকে বের হওয়ার পর থেকে নিখোঁজ ছিলেন তিনি। পরে গত ১১ মে আশুলিয়া থানায় একটি নিখোঁজের ডায়েরি করেন নিহতের পরিবার।র্যাব-৪ জানায়, গত ৮ মে সকাল ১০টার দিকে আসামি পরান বন্ধু ফারাবী আহমেদ হৃদয়কে তার ভাড়া বাসায় ডেকে নিয়ে যায়। পরে জিম্মি করে পরিবারের কাছে ৫০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করে। সেদিন দুপুরে তাকে হত্যা করে মরদেহ প্লাস্টিকের বস্তায় ভরে রাখে আসামিরা। বিকেলে বস্তাবন্দী মরদেহ শ্রীপুরের একটি পুকুরে ফেলে দেয় তারা। দুইদিন পর আসামিরা আবার ওই পুকুরে মরদেহ ভেসে উঠেছে কিনা দেখতে যায়। তারা মরদেহ ভেসে উঠা দেখতে পেয়ে আবার ওপরে তুলে ৮/১০টি ইট বস্তার ভেতরে ভরে পুকুরে ডুবিয়ে দেয়। এ ঘটনার মূলহোতা পরান ও বাপ্পিকে গ্রেপ্তার করা হলে তাদের জিজ্ঞাসাবাদের মাধ্যমে রাজধানীর পল্লবী এবং নওগাঁ জেলায় র্যাব-৪ ও র্যাব-৫ এর পৃথক আভিযানিক দল আসামি আকাশ ও শাহীনকে গ্রেপ্তার করে। র্যাব-৪, সিপিসি-২ এর কোম্পানি কমান্ডার লেফটেন্যান্ট কমান্ডার রাকিব মাহমুদ খান বলেন, আসামিরা অর্থনৈতিকভাবে দুর্বল ছিল। পক্ষান্তরে ভিকটিমের পরিবার সম্পদশালী ছিল। উক্ত হত্যাকাণ্ড ও লাশ বস্তাবন্দী করে গুমের মূলহোতা পরান ও বাপ্পিসহ গ্রেপ্তার আসামি আকাশ ও শাহীন আর্থিক সংকটের কারণে দীর্ঘদিন ধরে ভিকটিম হৃদয়কে অপহরণ করে তার পরিবারের নিকট হতে মোটা অংকের টাকা আদায়ের পরিকল্পনা করে আসছিলো। পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৮ মে বিকেলে আসামিরা হৃদয়কে আড্ডা দেওয়ার কথা বলে সুকৌশলে আকাশের বাসায় নিয়ে যায়। পরবর্তীতে তারা হৃদয়কে রশি দিয়ে বেঁধে ব্যবহৃত মোবাইল ফোন থেকে তার বাবার মোবাইলে ফোন করে মুক্তিপণ বাবদ ৫০ লাখ টাকা দাবি করে। দীর্ঘ সময় অতিবাহিত হওয়ার পরও মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে আসামিরা হৃদয়কে গলায় রশি পেঁচিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে এবং পরবর্তীতে তার মুখে বালিশচাপা দিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে। তারপর বিকেল ৪টার দিকে হৃদয়ের মরদেহ বস্তাবন্দি করে সুকৌশলে ঘটনাস্থল থেকে রিকশাযোগে মোজারমিল এলাকায় একটি পরিত্যক্ত ডোবায় ফেলে দেয়। পরে আসামিরা আত্মগোপনের উদ্দেশ্যে এলাকা ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যায়। উক্ত আসামীদ্বয়ের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।