
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২০ এপ্রিল, ২০২২, 1:53 PM

সীমান্তে দ্রুতই চালু হবে ৫ সীমান্ত হাট!
প্রস্তাব ছিল দীর্ঘদিনের, অবশেষে বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সীমান্ত এলাকায় প্রথমবারের মতো চালু হতে চলেছে ইন্টারন্যাশনাল বর্ডার হাট বা সীমান্ত হাট। পশ্চিমবঙ্গের মালদা ও বাংলাদেশের রাজশাহী জেলার মধ্যে জিরো পয়েন্টে হতে চলছে প্রথম বর্ডার হাট। বর্তমানে ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে চারটি বর্ডার হাট রয়েছে। ভারতের মেঘালয় রাজ্যের কালীচরণ ও বালাটে দুটি হাট এবং ত্রিপুরা রাজ্যের শ্রীনগর ও কমলাসাগরে দুটি হাট বর্তমানে চলমান অবস্থায় রয়েছে। সীমান্তের এই হাটে মূলত পণ্যের সম্ভার নিয়ে বসতে পারবে ভারত-বাংলাদেশ দুই দেশের সীমান্ত লাগোয়া গ্রামের মানুষজন। সীমান্ত এলাকায় মানুষের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ঘটাতে বিকল্প অর্থনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে ২০১০ সালের ২২ অক্টোবর বাংলাদেশ এবং ভারত সরকার সীমান্তে বর্ডার হাট স্থাপন সংক্রান্ত সমঝোতা পত্র স্মারক স্বাক্ষর করে। এর প্রায় সাত বছর পর ৮ এপ্রিল ২০১৭ সালে সংশোধনীর মাধ্যমে পণ্যের তালিকা ও গ্রাহক পিছু খরচের মাত্রা বাড়ানো হয়। তবে শুধুমাত্র মালদা-রাজশাহীর মধ্যেই নয়। সূত্রের খবর নতুন বর্ডার হাট স্থাপনের লক্ষ্যে পশ্চিমবঙ্গের আরও পাঁচটি সীমান্ত এলাকার জিরো পয়েন্টে চিহ্নিত করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। উত্তর ২৪ পরগনা জেলার বসিরহাট এর সঙ্গে বাংলাদেশের সাতক্ষীরা, উত্তরবঙ্গের হিলি, বেনাপোল-পেট্রাপোল সীমান্তবর্তী এলাকা, নদীয়া জেলার গেদে-দর্শনা সীমান্তের কাছে আরও একটি জায়গা এখনো পর্যন্ত চিহ্নিত করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। এই ব্যাপারে বাংলাদেশ ও ভারত সরকারের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের আলোচনা চূড়ান্ত হয়ে গেছে। প্রাথমিকভাবে পাইলট প্রজেক্ট হিসাবে প্রথম হাট দ্রুত মালদা এবং রাজশাহীর মধ্যে চালুর পরিকল্পনা করা হয়েছে। অন্যদিকে ভারতের কেন্দ্রীয় সরকার এমন উদ্যোগ নিলেও সীমান্ত হাট তৈরির জন্য দরকার জমি। ভারতীয় ভূমি ও ভূমি রাজস্ব আইন অনুযায়ী জমি অধিগ্রহণের সম্পূর্ণ দায়িত্ব সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের। ফলে দুই দেশের কেন্দ্রীয় সরকার একমত হলেও ভারতের মোদি সরকারকে জমি অধিগ্রহণ সংক্রান্ত প্রাথমিক বিষয়ের ক্ষেত্রেও তাকিয়ে থাকতে হবে পশ্চিমবঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের দিকেই। সূত্রের খবর এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের তরফে মিলেছে সবুজ সংকেত। আপাতত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী বাজার তৈরির জন্য দুই দেশের জমিই অধিগ্রহণ করা হবে। জিরো পয়েন্ট লাগোয়া বাংলাদেশের ৭৫মিটার জমি ও পশ্চিমবঙ্গের ৭৫মিটার জমি অধিগ্রহণ করে যৌথভাবে তৈরি হবে এই হাটবাজার। দুই দেশের সীমান্ত এলাকার পাঁচ কিলোমিটারের মধ্যে বসবাসকারী বাসিন্দারা এই বাজারে তাদের পণ্য সামগ্রী বিক্রি করতে পারবে। দুই দেশের সীমান্তরক্ষী বাহিনী থাকবে এর নিরাপত্তার দায়িত্বে। বিজেপি সংসদ খগেন মূর্মু বলেন, আত্মনির্ভর ভারত গড়ার লক্ষ্যে মোদি সরকারের এমন উদ্যোগ। বাঙালিরা খুব সহজেই বাংলার ইলিশ পাবে। আর বাংলাদেশের বাসিন্দাও সহজে ভারতের সামগ্রী পাবে। তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা তথা সাবেক মন্ত্রী কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী বলেন, এমনটা হলে সীমান্ত অপরাধ অনেকটাই কমে যাবে। আর্থসামাজিক উন্নতি হবে। অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটবে এলাকার বাসিন্দাদের। এমন বাজারে খুশি সীমান্ত এলাকার বাসিন্দারা। তারা জানান, জমিতে উৎপাদিত ফসল আর দূরে কোথাও নিয়ে যেতে হবে না। বাংলাদেশের কাপড় তারা ক্রয় করতে পারবে। সীমান্ত এলাকার পরিবর্তন ঘটবে। উল্লেখ্য, এই হাট বাজারে সীমান্ত এলাকায় উৎপাদিত কৃষকের কাঁচা সবজি ছাড়াও খাদ্যশস্য,মিষ্ট,মাছ,মাংস,ডিম যেমন বিক্রি হবে তেমন প্লাস্টিকজাত সামগ্রী বিক্রি হবে। শুধ তাই নয় জামা, কাপড়, শাড়িসহ একাধিক সামগ্রী বিক্রির সুপারিশ রয়েছে সরকারি তালিকায়। সূত্র অনুযায়ী, আগামী ছয় মাসের মধ্যেই প্রথম হাট শুরুর পরিকল্পনা রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের।