ঢাকা ২১ জুন, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
এ পর্যন্ত দেশে ফিরেছেন ৩৬ হাজার ৬০১ হাজি জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ১৮ সুপারিশ দ্রুত বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত এশিয়া কাপ আর্চারিতে সোনা জিতলেন বাংলাদেশের আলিফ পরমাণু ইস্যুতে ‘রেড লাইন’ স্পষ্ট করল ইরান সাতক্ষীরা সীমান্ত দিয়ে ৬ জনকে পুশইন করেছে বিএসএফ ৫ আগস্ট সরকারি ছুটির ঘোষণা আসছে ২৫৩ জনের গুমের অভিযোগের প্রমাণ পেয়েছে কমিশন প্রবাসীরা ফেরার সময় শুল্ক ছাড়াই আনতে পারবেন যে ১৯ পণ্য বাংলাদেশকে দুই প্রকল্পে ৬৪০ মিলিয়ন ডলার দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক আসছে শক্তিশালী ঘূর্ণিঝড় ‘এরিক’

সন্ত্রাসবাদের অভিযোগ থেকে জামায়াতকে মুক্ত ঘোষণা কানাডার আদালতের

#

নিজস্ব প্রতিবেদক

২৭ মার্চ, ২০২৫,  11:30 AM

news image

এক ঐতিহাসিক রায়ে কানাডার ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি বোর্ড (আইআরবি) আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করেছে যে, জামায়াতে ইসলামী কোনো সন্ত্রাসী সংগঠন নয় এবং তারা কোনো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়। এ রায় ইমিগ্রেশন অ্যান্ড রিফিউজি প্রোটেকশন অ্যাক্ট (আইআরপিএ)-এর ধারা ৩৪(১)(এফ)-এর আওতায় কানাডার সরকারের করা অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছে।

২০২২ সালে কানাডার বর্ডার সার্ভিসেস এজেন্সি (সিবিএসএ) অভিযোগ করেছিল- রহমান নামে এক ব্যক্তি জামায়াতের সদস্য (রোকন) হওয়ার কারণে কানাডায় প্রবেশের অনুপযুক্ত। কারণ, সিবিএসএর মতে জামায়াত সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত। তবে, ট্রাইব্যুনাল আজকের রায়ে এ অভিযোগ সম্পূর্ণরূপে খারিজ করে দিয়েছেন।

দু’বছর ধরে চলা আইনি লড়াইয়ের পর সিদ্ধান্তটি আসে। এ রায়ের গুরুত্ব খুব বেশি। আইআরবির সিদ্ধান্তটি শুধু রহমানের জন্যই নয়, বরং জামায়াতে ইসলামীর সুনামের জন্যও এক গুরুত্বপূর্ণ ও নজিরবিহীন রায় বলে বিবেচিত হচ্ছে। ট্রাইব্যুনাল দুটি পূর্ণাঙ্গ দিবস এবং অতিরিক্ত আরও আড়াই দিন শুনানি পরিচালনা করে। কয়েক হাজার পৃষ্ঠার নথিও এ সময় পর্যালোচনা করা হয়। 

এ ছাড়া আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত সন্ত্রাসবাদ ও দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়, যাদের সবাই জামায়াতে ইসলামীর পক্ষে সাক্ষ্য দেন।

ট্রাইব্যুনালের রায়ে উল্লেখ করা হয়

সন্ত্রাসবাদের কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ নেই:  রায় স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে যে জামায়াতে ইসলামীর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ নেই।

বিশ্বখ্যাত বিশেষজ্ঞদের সাক্ষ্য গ্রহণ: তিনজন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত গবেষক এই মামলা চলাকালে সন্ত্রাসবাদ, দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক আন্দোলন, ও ইসলামী সংগঠনগুলোর বিষয়ে শপথ নিয়ে সাক্ষ্য দেন, যা বিশ্বাসযোগ্য, নিরপেক্ষ এবং ধারাবাহিক বলে প্রমাণিত হয়।

রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নেওয়া হয়েছে:  ট্রাইব্যুনাল তার পর্যবেক্ষনে জানিয়েছে যে, জামায়াতে ইসলামী দীর্ঘদিন ধরে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অভিযোগের শিকার হয়ে আসছে, বিশেষ করে রাজনৈতিকভাবে যারা ভিন্ন আদর্শ লালন করেন তারা জামায়াতের বিষয়ে বহু বছর ধরেই প্রোপাগান্ডা চালিয়ে আসছেন। 

২০২৪ সালের আগস্টের বাংলাদেশে অভ্যুত্থান পরবর্তী রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট বিবেচনায় নিয়ে জামায়াতে ইসলামীর ইতিবাচক ভূমিকার প্রশংসা করা হয়েছে।

আইনের শাসনের প্রতি প্রতিশ্রুতি: এ রায় কানাডার ন্যায়বিচার, সততা ও সুবিচারের প্রতি প্রতিশ্রুতি তুলে ধরেছে এবং উল্লেখ করেছে, কোনো সংগঠনকে শুধুমাত্র রাজনৈতিক চাপ বা বিদেশি সরকারের বক্তব্যের ওপর ভিত্তি করে সন্ত্রাসী ঘোষণা করা যায় না।

জামায়াতে ইসলামীর জন্য আইনি বিজয়

মামলায় জামায়াতে ইসলামীকে সফলভাবে প্রতিনিধিত্বকারী ওডব্লিউএস ল-এর ব্যারিস্টার ওয়াশিম আহমেদ রায়ের বিষয়ে বলেন, এ রায় জামায়াতে ইসলামী আইনি মর্যাদা পাওয়ার ক্ষেত্রে একটি বড় বিজয়। এটি স্পষ্ট বার্তা দেয়- অভিযোগগুলোর ভিত্তি হতে হবে বাস্তব প্রমাণ এবং নিরপেক্ষ মূল্যায়নের ওপর, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত দৃষ্টিভঙ্গির ওপর নয়।

গত ২৬ ফেব্রুয়ারি ট্রাইব্যুনালের দেওয়া লিখিত সিদ্ধান্তে রহমানকে সম্পূর্ণরূপে নির্দোষ ঘোষণা করা হয় এবং সিবিএসএর সমস্ত অভিযোগ খারিজ করা হয়। এ রায় ভবিষ্যতে অনুরূপ মামলাগুলোর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির স্থাপন করবে। কারণ অনেক সময়ই দেখা যায়, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে সন্ত্রাসবাদের মিথ্যা অভিযোগ এনে তাদের হেনস্তা করা হচ্ছে।

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম