
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
২১ মার্চ, ২০২২, 10:35 AM

রোহিঙ্গা নিধনকে আনুষ্ঠানিকভাবে গণহত্যার স্বীকৃতি দিল যুক্তরাষ্ট্র
মিয়ানমারে সামরিক বাহিনী কর্তৃক সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের নিধনকে অবশেষে আনুষ্ঠানিকভাবে গণহত্যা এবং মানবতাবিরোধী অপরাধ হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রের বরাত দিয়ে মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নিধনকে গণহত্যা হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের স্বীকৃতি দেওয়ার বিষয়টি জানিয়েছে বার্তা সংস্থা রয়টার্স এবং মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন। প্রতিবেদনে বলা হয়, মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন স্থানীয় সময় সোমবার (২১ মার্চ) ওয়াশিংটনের ইউএস হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে যুক্তরাষ্ট্রের এই স্বীকৃতির বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে ঘোষণা করবেন। এই হলোকাস্ট মেমোরিয়াল মিউজিয়ামেই রোহিঙ্গাদের দুর্দশা নিয়ে একটি প্রদর্শনী চলছে ২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইনে দেশটির সামরিক বাহিনীর সহিংসতার শিকার হন কয়েক লাখ রোহিঙ্গা। তাদের নিধনে চালানো হয় গণহত্যা। জীবন বাঁচাতে মিয়ানমার থেকে পালিয়ে ১০ লাখের বেশি মানুষ আশ্রয় নেয় বাংলাদেশে।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে ওআইসির সহযোগিতায় ২০১৯ সালে মিয়ানমারের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে গণহত্যার মামলা করে গাম্বিয়া। ওই বছর মামলার প্রথম দফার শুনানিও হয়। কিন্তু এসব ঘটনার পরও মিয়ানমারের রোহিঙ্গা সংখ্যালঘুদের বিরুদ্ধে সংঘটিত সহিংসতাকে গণহত্যার স্বীকৃতি দেওয়া থেকে বিরত ছিল যুক্তরাষ্ট্র। রয়টার্স বলছে, রোহিঙ্গা নির্যাতনকে দ্রুত গণহত্যা হিসেবে স্বীকার করার জন্য এ সংশ্লিষ্ট তথ্য প্রমাণ সংগ্রহ করেছেন মার্কিন কর্মকর্তারা। এতে সহায়তা করেছে অন্য একটি আইনি সংস্থা। পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার প্রায় ১৪ মাস পর রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সহিংসতাকে গণহত্যার স্বীকৃতি দিয়ে মিয়ানমারে সহিংসতার বিষয়টি নতুন করে পর্যালোচনা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অ্যান্টনি ব্লিংকেন। এর আগে, বিষয়টি স্বীকার করতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। নাম প্রকাশ না করার শর্তে মার্কিন কর্মকর্তারা রয়টার্সকে বলেছেন, মিয়ানমারে গণহত্যার বিষয়টি ‘আইনি এবং বাস্তব বিশ্লেষণের’ নিরিখে নিজেই খতিয়ে দেখেছেন ব্লিংকেন। মার্কিন কর্মকর্তারা বলছেন, মিয়ানমার সেনাবাহিনী গণহত্যা করছে এবং ওয়াশিংটন বিশ্বাস করে যে, আনুষ্ঠানিক এই স্বীকৃতি জান্তাকে জবাবদিহি করতে আন্তর্জাতিক চাপ বাড়াবে। এ বিষয়ে জানতে রয়টার্স ওয়াশিংটনে মিয়ানমার দূতাবাসের কর্মকর্তা এবং জান্তার একজন মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোনো মন্তব্য করেননি তারা। সিনেটের বৈদেশিক সম্পর্ক কমিটির সদস্য সেন জেফ মার্কলে রোববার এক বিবৃতিতে বলেছেন, ‘অবশেষে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে সংঘটিত নৃশংসতাকে গণহত্যা হিসেবে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য আমি বাইডেন প্রশাসনকে সাধুবাদ জানাই। যদিও অনেক দেরিতে এই স্বীকৃতি এসেছে। তবুও মিয়ানমার জান্তাকে জবাবদিহি করতে এই স্বীকৃতি একটি শক্তিশালী এবং সমালোচনামূলকভাবে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।’