
NL24 News
২৭ এপ্রিল, ২০২৪, 4:26 PM

রাতে নদীর মাটি কাঁটায় রাতেই হলো ভ্রাম্যমাণ আদালত
ফয়জুল ইসলামঃ নদীর জমিকে নিজের দাবি করে সাভারের বংশী নদীর মাটি কেটে নিজের হাউজিংয়ের জমি ভরাটসহ বিক্রির অভিযোগ উঠেছে নয়ারহাট বাস-ট্রাক মালিক সমিতির সভাপতি সাহাজ উদ্দিন মহাজন নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। বিষয়টি প্রশাসনকে অবহিত করা হলে ভূমি অফিসের দুইজন কর্মচারী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তবে ঘটনাস্থলে কেবল মাটি কাটার ভেকু ছাড়া কাউকে পাওয়া যায়নি।
সরেজমিনে সাভারে বংশী নদীর চাকগাঁও এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, রাতের আঁধারে বংশী নদী থেকে মাটি কেটে নিয়ে গেছে সাহাজ উদ্দিন মহাজনের লোকজন। ঘটনাস্থলে একটি ভেকু রয়েছে যেটি দিয়ে রাতে আবারও মাটি কাটা হবে। আর ভেকুর পাশেই পড়ে আছে বিরানির প্যাকেট, পলিথিনসহ খাবারের বিভিন্ন আলামত। রাতে মাটি কাটার সঙ্গে জড়িতরা খাবার খেয়ে এসব প্যাকেট ফেলে রেখেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক ব্যক্তি জানান, দুই রাত ধরে গাড়ির মহাজন সাহাজ উদ্দিন লোকজন নিয়ে রাতের আঁধারে ভেকু দিয়ে নদীর মাটি কেটে নিয়ে যাচ্ছে। এর আগেও তার মতো প্রভাবশালী অনেকেই তাদের সুবিধা মতো জায়গা থেকে মাটি কেটে নিয়েছে। কিন্তু প্রশাসনকে জানানো হলে কোনো ব্যবস্থা তো নেয়নি, উল্টো তাদের ওপর নির্যাতন চালিয়েছে মাটিখেকোরা। তাই ভয়ে এখন আর তারা মুখ খুলতে চান না।
মাটি কাটার বিষয়ে মুঠোফোনে সাহাজ উদ্দিন মহাজনের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নদীর পাশেই আমার নিজের যায়গা। এ ছাড়া ইউপি চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ানকে জানিয়েই নদীর মাটি কাটা হচ্ছে বলে দাবি করেন তিনি। কিন্তু প্রশাসনের কাছ থেকে অনুমতি নিয়েছেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, ব্যবসা করতে হলে সবাইকে ম্যানেজ করেই আমাদের চলতে হয়।
নদীর মাটি কাটার অনুমতির বিষয়ে জানতে চাইলে পাথালিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান পারভেজ দেওয়ান বলেন, নদীর পাশেই তার নিজের জমি। আমাকে বলেছে সে নিজের জমি থেকে মাটি কাটছে। নদীর মাটি কাটার অনুমতি তো আমি দিতে পারি না। এরকম যদি হয় আমি তার সঙ্গে কথা বলব।
সাভার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) এম রাসেল নূর বলেন, বিষয়টি আমলে নিয়ে ঘটনাস্থলে লোক পাঠানো হয়েছে। আবার যদি তারা মাটি কাটে তাদের বিরুদ্ধে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হবে।
এরি ধারাবাহিকতায় ঐ দিনই তারা আবার রাতের আঁধারে মাটি কাটে। খবর পেয়ে-রাত ১১.৩০ টায় সাভারের বংশী নদীর চাকলগাঁও এলাকায় অভিযান চালিয়ে মাটি কাটারত অবস্থায় তিনটি ট্রাক ও একটি ভেকু জব্দ করা হয়েছে। এসময় অবৈধভাবে নদীর মাটি কাটার অপরাধে তোফায়েল নামের এক ব্যক্তিকে বালুমহাল ও মাটি ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ মোতাবেক ১ লক্ষ টাকা অর্থদণ্ড আরোপ করেছেন সাভার সদর সার্কেলের সহকারী কমিশনার (ভূমি) এস.এম রাসেল ইসলাম নূর। পরে জব্দকৃত মালামাল স্থানীয় ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমানের জিম্মায় দেওয়া হয়।