
নিজস্ব প্রতিবেদক
২৮ মে, ২০২৪, 2:24 PM
রাজধানীর ১৫ শতাংশ বাড়িতে এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে
রাজধানী ঢাকার প্রায় ১৫ শতাংশ বাসা-বাড়িতে ডেঙ্গুর বাহক এডিস মশার লার্ভা পাওয়া গেছে। যা অত্যন্ত উদ্বেগের বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তর। ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের করা জরিপে এমন চিত্র উঠে এসেছে। আজ মঙ্গলবার রাজধানীর মহাখালীতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কনফারেন্স রুমে মৌসুম পূর্ব এডিস সার্ভে ২০২৪ এবং মৌসুম পরবর্তী এডিস সার্ভে ২০২৩ এর ফলাফল প্রকাশ করা হয়। ফলাফল তুলে ধরেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সংক্রামক রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার পরিচালক অধ্যাপক ডা. শেখ দাউদ আদনান। গত ১৭ থেকে ২৬ এপ্রিল পর্যন্ত ১০ দিনব্যাপী ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশার ঘনত্ব ও প্রজনন স্থান নিরীক্ষার জন্য দুই সিটির ৩ হাজার ১৫২টি বাড়িতে জরিপ চালানে হয়। এর মধ্যে ৪৬৩টিতে এডিসের লার্ভা ও পিউপা পাওয়া গেছে। অর্থাৎ শতকরা প্রায় ১৫ শতাংশ। যা মশার ঘনত্ব পরিমাপক সূচক ব্রুটো ইনডেক্স আদর্শের জন্য অনেক বেশি এবং উদ্বেগের। এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপের সূচক ‘ব্রুটো ইনডেক্স’ নামে পরিচিত।
সাধারণত এডিস মশার লার্ভার ঘনত্ব পরিমাপের স্বীকৃত পদ্ধতি ‘ব্রুটো ইনডেক্স’র মানদণ্ডে লার্ভার ঘনত্ব ১০ শতাংশের বেশি হওয়া মানেই পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। জরিপে দেখা যায়, ৪২ শতাংশ বহুতল ভবনে এডিসের লার্ভা মিলেছে। এছাড়া স্বতন্ত্র বাড়িতে ২২ শতাংশ, নির্মাণাধীন ভবনে ২২ শতাংশ, সেমিপাকা বাড়িতে ১৩ শতাংশ ও খালি জায়গায় মিলেছে ১৪ শতাংশ। জরিপে ঢাকার দুই সিটির ১৮টি ওয়ার্ডকে ডেঙ্গুর উচ্চ ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে ঘোষণা করা হয়। এর মধ্যে দক্ষিণ সিটির ১০টি- ০৩, ০৪, ০৫, ১৩, ১৫, ১৭, ১৬, ২৩, ৫২ ও ৫৪ নম্বর ওয়ার্ড। অন্যদিকে উত্তর সিটির ৮টি ওয়ার্ডের মধ্যে রয়েছে- ১২, ১৩, ১৭, ২০, ৩১, ৩২, ৩৩ ও ৩৬।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার জাতীয় ম্যালেরিয়া নির্মূল ও এডিস বাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচী প্রতিবছর ঢাকা উত্তর ও দক্ষিন সিটি কর্পোরেশন এলাকায়-মৌসুম পূর্ব, মৌসুম, মৌসুম পরবর্তী তিনটি জরিপ কাজ পরিচালনা করে থাকে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তর জানিয়েছে, ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশনের মধ্যে সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে আছে ১২ নং ওয়ার্ড। এই ওয়ার্ডে এডিসের ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে ৪৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ। এরপরের অবস্থানে রয়েছে ১৩ এবং ২০ নং ওয়ার্ড, এগুলোতে ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে ৪০ শতাংশ। ৩৬ নং ওয়ার্ডে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ, ৩১ ও ৩২ নং ওয়ার্ডে ৩০ শতাংশ, ১৭ এবং ৩৩ নং ওয়ার্ডে ২৪ দশমিক ৪৪ শতাংশ ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে।
এছাড়াও ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের ১৩ নং ওয়ার্ডে ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে ঢাকার সবচেয়ে বেশি, ৭৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ, ৪ নং ওয়ার্ডে ৪৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ, ৫২ ও ৫৪ নং ওয়ার্ডে ৩৬ দশমিক ৬৭ শতাংশ, ১৬ নং ওয়ার্ডে ৩৩ দশমিক ৩৩ শতাংশ ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে। এছাড়াও ৩ নং, ৫ নং, ১৫ নং, ১৭ নং এবং ২৩ নং ওয়ার্ডে ৩০ শতাংশ ব্রুটো ইনডেক্স পাওয়া গেছে। প্রসঙ্গত, গত বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত ও মৃত্যু অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছিল। এবার আরও ভয়ংকর রূপ নিয়েছে এডিস মশাবাহিত ভাইরাসটি। চলতি বছরের প্রথম পাঁচ মাসে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ আক্রান্ত ও তিনগুণ মৃত্যু হয়েছে।