
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১৫ জানুয়ারি, ২০২৫, 3:57 PM

ভয়াবহ শঙ্কাকে বিবেচনায় রেখে আগামী হজের প্রস্তুতি নিচ্ছে সৌদি
গত বছর সৌদি আরবে হজের সময় এক হাজার ৩০০ মুসল্লির মৃত্যুর ঘটনা চরম তাপদাহের ঝুঁকি মোকাবিলার প্রয়োজনীয়তাকে ফের সামনে তুলে এনেছে। বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, এই সমস্যা সমাধানে প্রথম ধাপ হচ্ছে সুপরিকল্পিতভাবে ভিড় ব্যবস্থাপনা করা। গত জুনে পবিত্র মক্কা নগরীতে তাপমাত্রার পারদ ৫১ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসে (১২৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট) পৌঁছে যায়। সেই সময় ১৮ লাখ ধর্মপ্রাণ মুসলিম ইসলামের পাঁচটি স্তম্ভের একটি এই হজ পালনের জন্যে সৌদিতে অবস্থান করছিলেন। সৌদি কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রেকর্ড ১ হাজার ৩০১ জনের মৃত্যুর ঘটনায় দেখা গেছে এর ৮৩ শতাংশই হজের অনুমতি ছাড়াই অংশগ্রহণ করেছিলেন। তারা হজযাত্রীদের জন্য বরাদ্দকৃত সুযোগ-সুবিধা, যেমন শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত তাঁবু ব্যবহার করতে পারেননি। এটি ছিল ২০২৪ সালে তাপদাহের কারণে সৃষ্ট বড় ধরনের বিপর্যয়ের একটি বেদনাদায়ক উদাহরণ। কপারনিকাস ক্লাইমেট চেঞ্জ সার্ভিস গত শুক্রবার জানিয়েছে, গত বছর (২০২৪ সাল) ছিল ইতিহাসে রেকর্ডকৃত সবচেয়ে উষ্ণতম বছর। হজযাত্রীদের বেশিরভাগই বিদেশ থেকে আসেন। গত বছরের সংকটে অংশ নেয়া বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকরা সংবাদ সংস্থা এএফপিকে জানিয়েছেন, বেশিরভাগ মৃত্যুই তাপজনিত কারণে হয়েছিল। খবর জিও নিউজের। যদিও রিয়াদ এখনও এই বছরের হজের প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত কিছু প্রকাশ করেনি, যা এখনো পাঁচ মাস দূরে রয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষ সম্ভবত সেই হৃদয়বিদারক ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে চাইবে। দেশটির কিং আবদুল্লাহ ইন্টারন্যাশনাল মেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারের আবদেরেজাক বউচামা জানিয়েছেন, 'আমি মনে করি তারা অবৈধ হজযাত্রীদের ঝুঁকি কমানোর দিকে বিশেষ মনোযোগ দেবে।' বউচামা তিন দশকেরও বেশি সময় ধরে সৌদি সরকারের সঙ্গে তাপজনিত মৃত্যুর সংখ্যা কমানোর বিষয়ে কাজ করছেন। তিনি আরও বলেন, 'আমি মনে করি তারা অতীত থেকে শিক্ষা পেয়েছে, তাই আমাদের দেখতে হবে তারা কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে।' তাপদাহের ঝুঁকি কমানোর অন্যান্য পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে তাপজনিত চাপ দ্রুত শনাক্ত করতে পরিধানযোগ্য সেন্সর চালু করা। এছাড়া রয়েছে দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প, যা সম্ভবত জুনের মধ্যে কার্যকর হবে না। তবে সৌদি কর্মকর্তারা এএফপির অনুরোধের জবাব দেননি। প্রতিবছর হজ পাঁচ থেকে ছয় দিন ধরে চলে এবং বেশিরভাগই বাইরের উন্মুক্ত স্থানে অনুষ্ঠিত হয়। বিগত বছরগুলোতে হজে বিভিন্ন দুঃখজনক এবং হৃদয়বিদারক ঘটনা ঘটেছে, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ২০১৫ সালে মিনায় 'শয়তানকে পাথর নিক্ষেপের' সময় পদদলিত হয়ে দুই হাজার ৩০০ জনের প্রাণহানি।