ঢাকা ২৬ জুন, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
১০ বছরের বেশি প্রধানমন্ত্রী নয়, সুপারিশ মেনে নিচ্ছে বিএনপি মব জাস্টিস' নামে এক হিংস্র উন্মাদনা মানবতার শত্রু হয়ে দাঁড়িয়েছে: তারেক রহমান বাংলাদেশে পাচারের জন্যই ফেনসিডিল তৈরি করে ভারত: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদকে কড়া হুঁশিয়ারি দিলেন ইশরাক সাবেক সিইসি হাবিবুল আউয়াল গ্রেপ্তার বিএনপি মব সংস্কৃতির বিপক্ষে: ফারুক চুল পড়া ও মানসিক উদ্বেগ কমায় কাঁঠালের বীজ তদন্ত কমিশনে ই-মেইল পাঠিয়ে সাক্ষ্য দিলেন নানক-আজম ২০২৬ সালের এইচএসসি পরীক্ষা হবে পূর্ণাঙ্গ পাঠ্যসূচিতে প্লাস্টিক ব্যবস্থাপনা ঠিক না থাকায় জীববৈচিত্র ধ্বংসের মুখে: ড. ইউনূস

দুর্দশা চরমে, পশুখাদ্য পিষে খাচ্ছে গাজাবাসী!

#

আন্তর্জাতিক ডেস্ক

১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪,  11:01 AM

news image

দীর্ঘ চার মাসেরও বেশি সময় ধরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় নির্বিচারে আগ্রাসন চালিয়ে যাচ্ছে ইহুদিবাদী ইসরায়েল। হামলার শুরুর দিন সেই ৭ অক্টোবর থেকেই এই ভূখণ্ডকে অবরুদ্ধ করে রেখেছে ইসরায়েল। সেখানে খাদ্য, পানীয়, ওষুধ, জ্বালানিসহ প্রয়োজনীয় মৌলিক চাহিদা সরবরাহে বাধা দিয়ে আসছে দখলদার বাহিনী। এতে গাজায় চরম মানবিক সংকটের সৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে গাজার বিচ্ছিন্ন উত্তরাঞ্চলে দেখা দিয়েছে ব্যাপক খাদ্য সংকট। সেখানকার শিশুরা কয়েকদিন ধরেই অনাহারে রয়েছে। এমন অবস্থায় অনেকেই পশুপাখির খাবার পিষে ময়দা বানিয়ে খাচ্ছে। তবে গাজায় এ ধরনের শস্যেরও মজুদ শেষ হয়ে যাচ্ছে। স্থানীয়দের বরাতে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ওই এলাকায় খাদ্য সংকটের পাশাপাশি রয়েছে সুপেয় পানির অভাব। অনেকেই একটু পানির জন্য মাটি খুঁড়ে পানি সরবরাহের লাইন খুঁজছে। বেশ কিছুদিন ধরে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ত্রাণবাহী গাড়িও ঢুকতে পারছে না। এ কারণেই এলাকাটিতে সৃষ্টি হয়েছে তীব্র খাদ্যসংকট।

গাজার বেইত লেহিয়ার স্বাস্থ্যকর্মী মাহমুদ শালাবি জানিয়েছেন, “এতদিন উত্তর গাজার বাসিন্দারা পশুখাদ্য পিষে ময়দা বানিয়ে খেয়েছে। কিন্তু এখন পশুখাদ্যও শেষের পথে। বাজারে এ ধরনের জিনিস পাওয়া যাচ্ছে না। এমনকি বাজারে ফুরিয়ে গেছে কৌটাজাত খাবারও।” জাতিসংঘের মানবিক ত্রাণসহায়তা সমন্বয়কারী সংস্থা ওসিএইচএ বলছে, যেসব সংস্থা ত্রাণ বিতরণ করতে চেয়েছে, তাদের বেশির ভাগকেই উত্তর গাজায় প্রবেশের অনুমতি দেয়নি ইসরায়েলি বাহিনী। তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনী গাজার খাদ্য সংকটের কথা অস্বীকার করেছে। ফিলিস্তিনজুড়ে চলমান মানবিক সংকটের মধ্যে বিভিন্ন এলাকার বাসিন্দারা গাজার দক্ষিণাঞ্চল রাফাহতে আশ্রয় নিয়েছে। আগে এই শহরকে নিরাপদ হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিল ইসরায়েলি বাহিনী। কিন্তু শরণার্থীতে ভরা এলাকাটিতেও হামলার পরিকল্পনা নিয়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনয়ামিন নেতানিয়াহু। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সতর্কতার মুখেও তিনি ওই শহরে আগ্রাসন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন। শনিবার ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর অফিস থেকে প্রকাশিত এক বার্তায় রাফাহ শহরে থাকা হামাসের ব্যাটালিয়নগুলো নির্মূল করার লক্ষ্যের কথা জানান নেতানিয়াহু।

এর আগে রাফা থেকে বেসামরিকদের সরিয়ে নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে নেতানিয়াহুর এক বার্তায়। তবে তার এ সিদ্ধান্তে অসন্তোষ জানাচ্ছে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়। যুক্তরাষ্ট্র এরই মধ্যে সতর্ক করেছে ইসরায়েলকে। তারা বলেছে, রাফাহতে ইসরায়েলি অভিযান বিপর্যয় ডেকে নিয়ে আসবে। এছাড়া নেতানিয়াহুর এমন সিদ্ধান্তে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে জাতিসংঘ ও ইউরোপীয় ইউনিয়নও (ইইউ)।  রাফাহ আক্রমণে ভয়াবহতার আশঙ্কার কথা জানিয়ে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন জানিয়েছেন, গাজার অর্ধেকেরও বেশি জনসংখ্যা এ এলাকায় আশ্রয় নিয়েছে। সংশ্লিষ্টদের বরাতে সংবাদমাধ্যম বিবিসি বলছে, মিশরের সীমান্তবর্তী শহরটি থেকে সব বাসিন্দাকে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়। জাতিসংঘের মানবিক সমন্বয়কারী জেমি ম্যাকগোলড্রিক সম্প্রতি গাজায় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে গিয়ে বলেছেন, “ফিলিস্তিনে যে কয়েকটি জায়গা নিরাপদ মনে করা হয়েছিল, ইসরায়েলি সৈন্যরা আক্রমণ শুরু করলে সেগুলোও আর নিরাপদ থাকবে না। রাফাহ আশ্রিতদের যাওয়ার কোনও জায়গা থাকবে না। তারা কোথায় যাবে? আমরা এ সম্ভাব্য ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির জন্য সত্যিই আতঙ্কিত।” সংবাদমাধ্যম জানাচ্ছে, রাফাহ এলাকায় এ মুহূর্তে অন্তত ১৫ লাখ মানুষ বাস করছে। এ সংখ্যার অধিকাংশই শরণার্থী। তারা ফিলিস্তিনের অন্যান্য এলাকায় যুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে বাঁচতেই এখানে আশ্রয় নিয়েছে। তবে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সতর্কতার মুখেও রাফায় আগ্রাসন চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে অটল ইসরায়েল। -সূত্র: বিবিসি

logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম