
আন্তর্জাতিক ডেস্ক
০৬ এপ্রিল, ২০২৫, 11:12 AM

ত্রাণ দিতে গিয়ে চাকরি হারালেন মার্কিন কর্মীরা
মিয়ানমারে ভূমিকম্প পরবর্তী উদ্ধার ও ত্রাণ সহায়তায় কাজ করতে গিয়ে তিন মার্কিন সহায়তা কর্মী চাকরি হারিয়েছেন। ইউএস এজেন্সি ফর ইন্টারন্যাশনাল ডেভেলপমেন্ট (ইউএসএইড) এর সাবেক জ্যেষ্ঠ কর্মী মার্শা ওয়াং ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে এ তথ্য জানিয়েছেন। তিনি জানান, মিয়ানমারে যাওয়ার পর শুক্রবার ওই তিন কর্মকর্তাকে জানিয়ে দেওয়া হয়, তাদের চাকরি আর থাকছে না।
বিদেশে ওয়াশিংটনের রোগ প্রতিরোধ প্রচেষ্টা দেখভালকারী ইউএসএআইডির ব্যুরো ফর হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাসিসটেন্সের সাবেক উপপ্রশাসক ওয়াং বলেন, “এই দলটি অক্লান্ত পরিশ্রম করছে, ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে জরুরি সহায়তা পৌঁছে দিতে কাজ করছে। এমন মুহূর্তে যদি ছাঁটাইয়ের খবর পাওয়া যায়, তাহলে তা যে কতটা মানসিকভাবে ভেঙে দেয়— সেটি সহজেই বোঝা যায়।”
৭.৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্পে ইতোমধ্যে ৩,৩০০-রও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র সরকার মিয়ানমারের জন্য কমপক্ষে ৯ মিলিয়ন ডলার সহায়তা প্রতিশ্রুতি দিলেও, ইউএসএইড-এ ব্যাপক বাজেট ছাঁটাইয়ের কারণে কার্যকর সাড়া দেওয়া সম্ভব হচ্ছে না। এরই মধ্যে চীন, রাশিয়া, ভারতসহ অন্যান্য দেশ দ্রুত সহায়তা পাঠিয়েছে।
সম্প্রতি বিলিয়নিয়ার এলন মাস্কের নেতৃত্বাধীন "ডিপার্টমেন্ট অফ গভর্নমেন্ট এফিসিয়েন্সি" অধিকাংশ ইউএসএইড কর্মীকে ছাঁটাই করেছে এবং সরকারি খরচ কমানোর নামে একাধিক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে বরখাস্ত করেছে।
ওয়াং জানান, ওই তিনজন সহায়তা কর্মী এখন ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় রাস্তায় ঘুমাতে বাধ্য হচ্ছেন। বাকি কর্মীদের সঙ্গেও তার যোগাযোগ রয়েছে এবং শুক্রবারের একটি সর্বজনীন বৈঠকের পর এই ছাঁটাইয়ের খবর ছড়িয়ে পড়ে।
ইউএসএইড-এর সাবেক কর্মীদের ভাষ্য অনুযায়ী, বিপর্যয় মোকাবেলায় দায়িত্বপ্রাপ্ত বেশিরভাগ ব্যক্তি চাকরি হারিয়েছেন এবং তৃতীয় পক্ষের যেসব সংস্থা কাজ করত, তাদের সঙ্গে চুক্তিও বাতিল হয়েছে।
মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর এই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করেনি। তবে পররাষ্ট্রমন্ত্রী মার্কো রুবিও বলেছেন, ইউএসএইড ভেঙে দেওয়া হয়েছে বলে যুক্তরাষ্ট্রের সাড়া ধীর হয়েছে— এই অভিযোগ ঠিক নয়। তিনি বলেন, “মিয়ানমারে কাজ করাটা সহজ নয়। দেশটির সামরিক সরকার যুক্তরাষ্ট্রকে অপছন্দ করে এবং আমাদের যথাযথভাবে কাজ করতে দেয় না।”
জাতিসংঘও জানিয়েছে, মিয়ানমারের সামরিক জান্তা ত্রাণ সহায়তা সীমিত করছে। রুবিও আরও জানান, যুক্তরাষ্ট্র আর বিশ্বে সর্বোচ্চ মানবিক সহায়তা প্রদানকারী দেশ থাকবে না, এবং তিনি বিশ্বের অন্যান্য ধনী দেশগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। সূত্র: রয়টার্স