ঢাকা ২৪ জুন, ২০২৫
সংবাদ শিরোনাম
ঝালকাঠি-২ আসনে ইসরাত সুলতানা ইলেন ভুট্টো জনপ্রিয়তার শীর্ষে ইসরায়েলি হামলায় আইআরজিসির ১০ সদস্য নিহত ভোক্তা অধিদপ্তরের অভিযানে কলারোয়ায় দুই প্রতিষ্ঠানকে জরিমানা যশোরে বাসচাপায় কলেজ শিক্ষার্থী নিহত নতুন বাংলাদেশ সৃষ্টিতে স্কাউটরা ইতিহাস সৃষ্টি করেছে: প্রধান উপদেষ্টা লাগাতার কর্মসূচি ঘোষণা এনবিআর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ইরানের ৬ বিমানবন্দরে হামলা, ১৫ উড়োজাহাজ–হেলিকপ্টার বিধ্বস্ত ইরানের দফায় দফায় হামলা, ইসরায়েলজুড়ে বিস্ফোরণ বরগুনায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদান রাষ্ট্রপতিকে স্পিকারের শপথ পড়ানোর বিধান নিয়ে রুলের শুনানি ৭ জুলাই

জিএস ল্যাবরেটারীজের চেয়ারম্যান, এমডি ও পরিচালকদের বিরুদ্ধে এলএমএল পদ্ধতিতে ওষুধ উৎপাদন ও বাজারজাত করার অভিযোগ

#

০৯ মে, ২০২৪,  4:38 PM

news image

নিজস্ব প্রতিবেদক : বরিশালের জি এস ল্যাবরেটরীজ (আয়ু) লিমিটেড এর কথিত চেয়ারম্যান, এমডি ও ডাইরেক্টরদের বিরুদ্ধে এলএমএল পদ্ধতিতে বিভিন্ন এলাকায় সভা সেমিনারের মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকার আকর্ষণী সব অফার দিয়ে দেশের জনসাধারণকে প্রলুব্ধ করে ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাত করছে বলে এক অভিযোগ উঠেছে। প্রশ্ন উঠেছে ওই কোম্পানিটি পরিচালনা করছে কারা? মালিক ই বা কে? ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের কাছে কোনো প্রকার সদুত্তর আছে কি? এমন সব প্রশ্ন উঠেছে ঔষধ শিল্প সংশ্লিষ্ট মহলের মাঝে। অভিযোগ উঠেছে কোম্পানির আগের মালিকের নামে সব কাগজপত্র কিন্তু কোম্পানির ঔষধ তৈরি ও বিপণন করছেন কথিত নতুন চেয়ারম্যান ও ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালকবৃন্দ।

জানা গেছে জি এস ল্যাবরেটরীজ (আয়ু) লিমিটেড এর ম্যানুফেক্সার লাইসেন্স নাম্বার-আয়ু-১৫৩, ঠিকানা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ওয়েব সাইট অনুযায়ী উত্তর আলেকান্দা সিকদার সড়ক, বরিশাল। কিন্তু কোম্পানির বর্তমান অবস্থান বিসিক শিল্প নগরী বরিশাল। অফিসের ঠিকানা : বাড়ি-০৩/এ (দ্বিতীয় তলা) রোড নাম্বার-০১, মিরপুর-১১ ঢাকা-১২১৬ (ইনভয়েস অনুযায়ী)। বরিশালের একটি সুত্রের দাবি জি এস ল্যাবরেটরীজ (আয়ু) লিমিটেড এর মালিক নুরুল ইসলাম প্রায় ২ বছর আগেই কোম্পানিটি সিলেটের আবেদুর রহমান ও মো. শাজাহান নামের দুজনসহ অন্য আরও ৮ জনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন ৪০ লাখ টাকায়।

তিনি বর্তমানে কোম্পানির বিষয়ে কিছুই জানেন না। কোম্পানির বর্তমান কথিত  চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. শাজাহান নামের দুজনের তত্ত্বাবধানেই কোম্পানিটি চলছে। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের ঔষধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ অনুযায়ী কোম্পানির মালিকানা পরিবর্তনের পূর্বানুমোদন নিয়ে আরও কিছু গাইড লাইন অনুসরণ করে তবেই নতুন মালিকের তত্ত্বাবধানে ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাত করার বৈধতা নিশ্চিত করা হয়। এটাই স্বাভাবিক নিয়ম। তবে এই স্বভাবিক নিয়মকে পাশকাটিয়ে কথিত নতুন মালিকেরা যাচ্ছে- তাই ভাবে বাংলাদেশ জাতীয় আয়ুর্বেদিক ফর্মুলারির বাইরে গিয়ে সম্পুর্ন কালার ফ্লেভার ও কেমিক্যাল ব্যাবহার করে ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাত করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

সাবেক মালিক নুরুল ইসলামের সাথে কথা বলে জানা গেছে তার মালিকানা থাকা অবস্থায় ৩৭টি ঔষধের অনুমোদন নিয়েছেন এবং আরও নতুন ১০টি ঔষধের অনুমোদনের জন্য আবেদন করা আছে এবং জি এস ল্যাবরেটরীজ (আয়ু) লিমিটেড এর উৎপাদন লাইসেন্স নবায়ন করা হয়েছে চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত। তার বক্তব্য অনুযায়ী এপ্রিল মাস থেকে ওই উৎপাদন লাইসেন্স নবায়ন নাই, মে ও জুন মাসে অবৈধভাবেই চলছে ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাত, তবে বর্তমানে কোম্পানিটি কিভাবে চলছে এসম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।

ঔষধের পাইকারী ও খুচরা বাজারে খবর নিয়ে জানা গেছে ডায়াবেটিস, যৌন উত্তেজক ও ভিটামিন সিরাপ, ক্যাপসুল ও ট্যাবলেট উৎপাদন ও বাজারজাত করছে, যাচ্ছে তাই ভাবে আন্ডার রেটে মুড়িমুড়কি’র মতো বিক্রি ও হচ্ছে। অপর এক বিশেষ সুত্রে জানা গেছে কথিত বর্তমান চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিভিন্ন মহলের কাছে বলছেন তারা পূর্বের মালিকের কাছ থেকে সাড়ে ৩ শত টাকার ননজুডিশিয়াল স্ট্যাম্পে একটা লিখিত ডিট করেই চালিয়ে যাচ্ছেন জি এস ল্যাবরেটরীজ (আয়ু) লিমিটেড এর ব্যানারে ভেজাল ও নি¤œমানের ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাত। এছাড়াও বিভিন্ন লোকজনের কাছ থেকে কোম্পানির কথিত ব্যাবস্থাপনা পরিচালক মো. শাজাহান কোম্পানির পার্টনারশিপ দেবেন বলে বিপুল পরিমাণ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন। বরিশালের জিএস লিমিটেড এর মালিকপক্ষ অনেকটা এলএমএল কোম্পানির মত ঔষধ এর বিপনণ করছে এজন্য রাজধানীর ফার্মগেট থেকে শুরু করে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিভিন্ন সভা ও সেমিনারের বিভিন্ন প্রকার আকর্ষণীয় সব পুরস্কারে প্রলুব্ধ করে তাদের ঔষধ এর বিপনণ করছে। যদিও ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের, ঔষধ নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ অনুযায়ী এলএমএল পদ্ধতিতে ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাতের কোন প্রকার নিয়ম নেই। 

জি এস ল্যাবরেটরীজ (আয়ু) লিমিটেড এর তৈরি করা বেশিরভাগ ভেজাল ও নি¤œমানের ঔষধের মধ্যে, ডইবিকিউর (বহুমুত্রক রস) ডায়াবেটিস এর ক্যাপসুল, জি-আইভি (জিঙ্গো বিলোবা) ক্যাপসুল, জিউমা-ক্যাপ (নগেন্দ্র বটি) ক্যাপসুল, জি-টাইমেক্স (স্বপ্ন চন্দ্রদ্য মকর ধধজ) ক্যাপসুল, স্ট্যামিনেক্স (কামিনী বিদ্রাবণ রস) ক্যাপসুল, জি-র‌্যালেক্স (স্বরাস্বত চুর্ণ) ক্যাপসুল, জি-জল (বাবলা) ক্যাপসুল, জি-কফ (বাসকারিস্ট) ১০০মিলি সিরাপ, জি-কোভিট (বলারিস্ট) ১০০মিলি সিরাপ (বাচ্চাদের ছবি সংবলিত) জি-কোসিড (আমলকী রসায়ন) ৪৫০মিলি সিরাপ এবং জি-কোজিন (দশমুলারিস্ট) ৪৫০মিলি সিরাপ উল্লেখযোগ্য। এছাড়াও উক্ত  কোম্পানির বিরুদ্ধে একই ডাইবিকিউর  ডায়াবেটিস এর  ক্যাপসুল দুই প্রকার গেটাপে  উৎপাদন ও বাজারজাত করছে যা ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের নিয়ন্ত্রণ অধ্যাদেশ পরিপন্থী।

যেহেতু কোম্পানির মালিকানা পরিবর্তন নাম পরিবর্তন বা স্থান পরিবর্তনের পূর্ব অনুমোদন নেওয়া হয়নি তাহলে কথিত নতুন চেয়ারম্যান, ব্যাবস্থাপনা পরিচালক ও পরিচালকদের তত্ত্বাবধানে ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাত করা হচ্ছে  কিভাবে? দীর্ঘ ২ বছর ধরে অবৈধভাবে ঔষধের উৎপাদন ও বাজারজাত করছে অথচ ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের জি এস ল্যাবরেটরীক (আয়ু) লিমিটেড এর নথি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা এসব জানেন না? বা বরিশাল এর দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ও কি জানেন না? এ বিষয়ে কথিত বর্তমান চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক এর বক্তব্য জানতে চাইলে তারা উভয়েই বলেন ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এটিএম গোলাম কিবরিয়া স্যারকে সবকিছুই বলা আছে তিনি সবই জানেন। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক এটিএম গোলাম কিবরিয়ার বক্তব্য জানতে তার মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় তার কোন প্রকার বক্তব্য প্রকাশিত হলো না। ঔষধ প্রশাসন অধিদপ্তরের বরিশালের সহকারী পরিচালকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি মোবাইল রিসিভ না করায় তার কোন প্রকার বক্তব্য প্রকাশিত হলো না।


logo

সম্পাদক ও প্রকাশক : মো. নজরুল ইসলাম