
নিজস্ব প্রতিনিধি
২১ মে, ২০২৫, 12:13 PM

গাজীপুর গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে অপপ্রচার ও মিথ্যা রটানোর অভিযোগ
গাজিপুরের গণপূর্ত বিভাগের একাধিক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অপপ্রচার চালানো ও হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। অফিস সূত্রে জানাযায়, ঠিকাদারি কার্যক্রমে ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধি না হওয়ায় এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী স্বপন চাকমা। জানা গেছে, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের ভূমি উন্নয়ন কাজের জন্য ২০১৯ সালের ৮ এপ্রিল ‘এস এইচ জয়েন্ট ভেঞ্চার’ নামক ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানকে এন ও এ নোটিশ এওয়ার্ড প্রদান করা হয়। চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ২৫ এপ্রিল। চুক্তি অনুযায়ী, প্রতিষ্ঠানটিকে ১৮০ দিনের মধ্যে কাজ শেষ করতে বলা হয়। সময়মতো কাজ সম্পন্ন না হলে পরবর্তী প্রকল্পের কাজ বিলম্বিত হওয়ার আশঙ্কা ছিল, যা ঠিকাদারকে স্পষ্টভাবে জানানো হয়।
তবে কাজের শুরু থেকেই প্রতিষ্ঠানটির অগ্রগতি সন্তোষজনক ছিলোনা । বারবার তাগিদ এবং সরেজমিন পরিদর্শনের পরও কাঙ্ক্ষিত অগ্রগতি দেখা যায়নি। ফলে কাজ শেষ না হওয়ার কারণ চেয়ে চিঠি দিয়ে তিন কর্মদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা দিতে বলা হয়। সন্তোষজনক ব্যাখ্যা না পেলে চুক্তি বাতিলসহ দরপত্রের শর্তানুযায়ী লিকুইডেটেড ড্যামেজ আরোপের বিষয়ে জানানো হয়। পরবর্তীতে প্রতিষ্ঠানটি সময় বাড়ানোর আবেদন করে এবং মোট ৬১৯ দিন সময় বর্ধিত করা হয়। তবুও কাজ সম্পন্ন হয়নি। ২০২১ সালের ২২ এপ্রিল ‘গাজী-১৪০৫’ স্মারকে জানানো হয়, কেন পরপর ২৮ দিন কাজ বন্ধ ছিল। এ বিষয়ে ‘জেনারেল কন্ডিশন অব কন্ট্রাক্ট’-এর ৮৯ ধারা অনুযায়ী এটি মৌলিক চুক্তি লঙ্ঘনের (Fundamental Breach of Contract) আওতায় পড়ে। ফলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য প্রতিষ্ঠানটিকে নোটিশ দেওয়া হয়।
দীর্ঘ প্রায় আড়াই বছর সময় অতিক্রান্ত হওয়ার পর, সরকারি বিধি অনুযায়ী উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমোদন নিয়ে ২০২১ সালের ২৪ অক্টোবর (স্মারক: ২৫.৩৬.০০০০.৪১০.১৪.০০২.১৪৯৪২৮/উশা-২) ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটির সঙ্গে চুক্তি বাতিল করা হয়। চুক্তি বাতিলের পর ক্ষুব্ধ হয়ে প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী গণপূর্ত বিভাগের প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে মামলা করেন।
প্রকল্প সংক্রান্ত তথ্য বিশ্লেষণে দেখা গেছে, অনুমোদিত ডিপিপিতে প্রায় ২৪.৫ কোটি টাকার বরাদ্দ থাকলেও, প্রকৃতপক্ষে মাত্র ১২.৫ কোটি টাকায় কাজটি প্রায় সম্পন্ন করা হয়, যা প্রকৌশলীদের দক্ষতা ও সততার প্রমাণ বলে গণ্য করা হচ্ছে। অভিযোগ সম্পর্কে সাবেক নির্বাহী প্রকৌশলী স্বপন চাকমার সাথে ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বিস্তারিত মন্তব্য করতে রাজি হননি। তবে বর্তমান দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলার এবং রেকর্ডপত্র পর্যালোচনার পরামর্শ দেন।
গাজীপুর গণপূর্ত বিভাগের কয়েকজন কর্মকর্তা ও কর্মচারী নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের মালিক পূর্ববর্তী সরকার আমলে বিভাগে প্রভাব বিস্তার করতেন। তিনি সুবিধা আদায়ে কর্মকর্তাদের হুমকি দিতেন। বর্তমানে নিজের ইচ্ছামতো কাজ করতে না পারায় একদিকে হুমকি দিচ্ছেন, অন্যদিকে প্রকৌশলীদের বিরুদ্ধে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত অপপ্রচার চালাচ্ছেন। এস এইচ জয়েন্ট ভেঞ্চার’-এর মালিকের বক্তব্য জানতে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি। এছাড়া শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষের সাথেও মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।