
NL24 News
০১ এপ্রিল, ২০২৪, 11:29 AM
গাজীপুরে সিজারে প্রসূতির মৃত্যু, হাসপাতাল ভাঙচুর
গাজীপুরের শ্রীপুরে নার্স দিয়ে সিজারিয়ান অপারেশনে প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ঘটনার পর স্বজনেরা এসে হাসপাতালে ব্যাপক ভাঙচুর চালান। প্রসূতির মৃত্যুর পরপরই হাসপাতালের মালিকপক্ষ, চিকিৎসক ও নার্স পালিয়ে গেছেন। রোববার (৩১ মার্চ) রাত সাড়ে ৯টায় দিকে উপজেলার মাওনা চৌরাস্তা এলাকার লাইফ কেয়ার হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী নারী ইয়াসমিন আক্তার (৩০) উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের ইন্দ্রপুর গ্রামের আসাদুল্লাহর স্ত্রী। প্রসূতির মা রাজিয়া আক্তার অভিযোগ করে বলেন, দুপুর ১২টার দিকে মেয়েকে নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি করেন। তখন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাদের জানায়, মাগরিবের নামাজের পরপরই সিজার করা হবে। এই বলে হাসপাতাল থেকে স্বজনদের বিদায় দেয়। শুধু তিনি হাসপাতালের বাইরে অপেক্ষায় ছিলেন। বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে তাকে জানানো হয়, মেয়ের ছেলে সন্তান হয়েছে। দৌঁড়ে মেয়ের কাছে গিয়ে দেখেন প্রচুর রক্তক্ষরণ হচ্ছে। তখন স্বজনদের খবর দিয়ে তারা হাসপাতালে ছুটে আসেন। তারা চিকিৎসককে অনুরোধ করলেও কোনো গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। রাত সাড়ে ৯টার দিকে মেয়ের অবস্থার অবনতি হলে তারা রেফার্ডের নাম করে অ্যাম্বুলেন্সে মরদেহ তুলে দিয়ে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে যান। তার মেয়ের নবজাতক শিশুপুত্র ও ইকরা নামে ১০ বছর বয়সী একটি মেয়ে রয়েছে। প্রসূতির মামা জাহাঙ্গীর আলম বলেন, রাত সাড়ে ৯টায় দিকে হাসপাতালে গিয়ে দেখেন হাসপাতালের প্রধান ফটকের সামনে অ্যাম্বুলেন্সে মরদেহ রাখা। এরপর হাসপাতালে প্রবেশ করে দেখেন কর্তব্যরত চিকিৎসক, নার্স ও মালিকপক্ষ পালিয়ে গেছে। তিনি আরও বলেন, আমরা কয়েক শতাধিক মানুষ শান্তিপূর্ণভাবে হাসপাতালে এসে অবস্থান নিয়েছি। যতদূর জানতে পারছি, সিজারিয়ান অপারেশন হয়েছে সে সময় হাসপাতালে কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ছিলেন না। ডাক্তার ছাড়া নার্স দিয়ে সিজারিয়ান অপারেশন করার কারণে আমার ভাগনি মারা গেছে। অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। লাইফ কেয়ার হাসপাতালের ব্যবস্থাপক মো. পারভেজ হোসেনের ব্যক্তিগত ফোন নম্বরে কয়েকবার কল করা হলে নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। হাসপাতালে গিয়ে কাউকে পাওয়া যায়নি। শ্রীপুর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) এনায়েত কবির জানান, হাসপাতালে ভুল চিকিৎসায় রোগীর মৃত্যুর খবর পেয়ে পুলিশের বেশ কিছু সদস্য এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা চলছে। স্বজনদের মধ্যে ব্যাপক উত্তেজনা সৃষ্টি হয়েছে। হাসপাতালে এসে কর্তৃপক্ষের কাউকে পাওয়া যায়নি। সবাই পালিয়ে গেছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনি পদক্ষেপ প্রক্রিয়াধীন। রাত ১২টার পর শ্রীপুরের নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শোভন রাংসা হাসপাতালে উপস্থিত হন। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, হাসপাতালের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। সূত্র : দেশ টিভি